ডেস্ক রিপোর্ট
বার কাউন্সিল পরীক্ষার হলে ভাঙচুর, পরিদর্শনে অ্যাটর্নি জেনারেল । আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির লিখিত পরীক্ষায় কয়েকটি কেন্দ্রে বিশৃংখলা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এএমআমিন উদ্দিন।রোববার (২০ ডিসেম্বর)তিনি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, বিসিএসআইআর হাই স্কুলসহ সংশ্লিষ্ট স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষা উপলক্ষে ঘটে যাওয়া ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করছি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবি ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি।’কোথায় গেলেন, কী পদক্ষেপ নিবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে বিস্তারিতভাবে আপনাদেরকে জানাবো।’
তবে, কবে জানানো হবে সেটি নির্দিষ্ট করে বলেননি অ্যাটর্নি জেনারেল। পদাধিকারবলে অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বার কাউন্সিলের নেতৃত্ব দেন ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি।
অভিযোগ রয়েছে, গতকালের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ‘কঠিন’ হয়েছে, এতে ১০ শতাংশ পরীক্ষার্থীও পাস করবে না-এমন অজুহাতে পরীক্ষা বর্জন করেছেন রাজধানীর কয়েকটি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। তারা প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেছেন। এরপর মহানগর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও বিসিএসআইআর হাই স্কুলে হামলাসহ নৈরাজ্যকর কিছু ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১২ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজধানীর ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহান উুদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মোহাম্মাপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মাদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, সেন্ট্রাল ইউমেন্স কলেজ, বিসিএসআইআর হাইস্কুল, গভর্নমেন্ট মোহাম্মাদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির জন্য প্রায় ১৩ হাজার প্রার্থী এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ২০১৭ সালের আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, করোনা মহামারির কারণে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির লিখিত এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর ১৯ ডিসেম্বর সে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত পরীক্ষায় ১২ হাজার ৮৭৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবীদের সনদ পেতে নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার ওই তিন ধাপের যেকোনো একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একবার উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তারা দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তবে, দ্বিতীয় বারেও উত্তীর্ণ না হলে তাদের পুনরায় শুরু থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
২০১৭ সালের ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে লিখিত পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো বাদ পড়া তিন হাজার ৫৯০ জন শিক্ষার্থী এবং ২০২০ সালে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মধ্যে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আট হাজার ৭৬৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ হাজার ৮৭৮ জন সনদ প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।যদিও লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছিলেন এমসিকিউ উত্তীর্ণরা। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা প্রত্যাহার করে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে আইনজীবী তালিকাভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন পরিক্ষার্থীরা।
Discussion about this post