ডেস্ক রিপোর্ট
আইনজীবী তালিকাভক্তি পরীক্ষায় বিশৃঙ্খলা,কাউন্সিলর কারাগারে: অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজকে ঢাকায় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। বার কাউন্সিলরের পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় তাকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়। রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারকৃত তারেক উদ্দিন তাজকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত শনিবার সকালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে এসে গোলযোগ করায় এলিফ্যান্ট রোডের বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে কাউন্সিলর তারেকসহ ৩৭জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি।
রবিবার (২০ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিউ মার্কেট থানার ওসি এসএম কাইয়ুম। তিনি বলেন, পরীক্ষা হলে বিশৃঙ্খলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় তারেক উদ্দিন তাজ নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তারেক এ মামলার প্রধান আসামি। সে কাউন্সিলর কিনা আমাদের জানা নেই। এই মামলায় পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারাও সংযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পূর্ব ধানমন্ডির পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাহেব আলী জানান, তারেক উদ্দিন তাজকে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যতটুকু জেনেছি তিনি সিসিকের কাউন্সিলর। পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে সকাল ১১টার দিকে হইচই শুরু হয়। এ সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থী গেটের বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। এসময় হামলাকারীরা পরীক্ষার খাতা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষে হামলা চালিয়ে জানালা ও দরজা ভাঙচুর করে।
প্রসঙ্গত: এর আগে সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে অতিথি পাখি ধরে এনে খাওয়ার ঘটনায় আলোচিত ছিলেন এই কাউন্সিলর।
বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা কেন্দ্র করে ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ২৪ জনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
একই অভিযোগে ২৫ জনকে রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নিউমার্কেট থানার রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, এস এম মনিরুজ্জামান, সৈয়দ জিগর সাদ আলম, মো. সোহাগ তালুকদার, সৈয়দ আনিসুর রহমান, মোহাম্মদ আউয়াল হাওলাদার, দেলোয়ার খাঁ, শাহিন মিয়া, হাবিবুর রহমান ওরফে সানি হোসেন, জাকারিয়া রায়হান, মো. খালেদ হাসান তুহিন ও তোফাজ্জল হোসাইন।
মোহাম্মদপুর থানার রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মমতাজুর রহমান, মো. আরমান উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম, জোবায়ের, সৈকত মালাকার, আশিস কুমার দাস, মিলন শামিম আহমেদ, তরিকুল ইসলাম, নজিবুর রহমান, শহীদুল ও মো. আবুল কাশেম মাহমুদ ভূঁইয়া।
সূত্রাপুর থানার রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন শাহরিয়ার।
নিউমার্কেট থানার মামলায় কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন, আতাউর রহমান ওরফে তাজ, শুভ ধর, মফিজুর রহমান ,আবদুল হক চৌধুরী, আহসান হাবীব ওরফে হাবিবুর রহমান, হানিফ খান, আমিনুল ইসলাম, কামাল হোসেন, আব্দুল মমিন মিয়া, মাহমুদুর রহমান ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন, আব্দুল জলিল, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল জলিল, মোশারফ হোসেন, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন, মোহাম্মদ নাসির সিকদার, মনিরুজ্জামান, সুজানা ইসলাম সিন্ডা, শিরিন আক্তার, আতাউর রহমান, আব্দুর রহিম, রেজাউল করিম, ইমরান, ফিরোজ আলম ও মুরসালিন তালুকদার।
সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর থানার এক মামলায় ১১ জনের তিনদিন করে রিমান্ডের আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক দুলাল হোসেন আসামিদের আদালতে হাজির করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অপরদিকে নিউমার্কেট থানার এক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাহেব আলী ৩৭ জনকে ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক ১২ জনকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি ২৫ জনকে রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়াও সূত্রাপুর থানার এক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা একজনকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। বিচারক তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়াও নিউমার্কেট থানার আরও দুটি মামলা রয়েছে। প্রতিটি মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্ত লিখিত পরীক্ষায় রাজধানীর ৯টি কেন্দ্রে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাঁচটি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার কিছু সময় পরেই ‘প্রশ্ন কঠিন’ হয়েছে উল্লেখ করে পরীক্ষা বর্জন করেছেন।
Discussion about this post