বাংলাদেশের আইনের ছাত্র, শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের জীবনের কর্ম ও জীবনের গতিপথ এক বিশাল হুমকির মুখোমুখি।
১৩০০০ MCQ উত্তীর্ণ শিক্ষানবীশ আইনজীবী আছেন, পিছনে আরো কম বেশি ৬০০০০ শিক্ষানবিশ আইনজীবী এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য অপেক্ষমান এবং বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনা করছে তাদেরও একটা অংশ এরইমধ্যে ৬০০০০ শিক্ষানবিশদের সহিত যোগ হতে যাচ্ছে, এরকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে যেখান থেকে বের হওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার বলে মনে করছি।
অবস্থার জটিল থেকে জটিলতর পরিস্থিতি তৈরি হবে, আইনজীবীদের কর্মে ঢুকার পথ রুদ্ধ করে দেওয়ায় একদিকে আইন পাশ করা ছেলে মেয়েরা অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে, অপরদিকে প্রতিটি পরিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে, যা পরবর্তী উক্ত লেখাপড়া শিখে আইনের ছাত্ররা বোঝায় পরিণত হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
কেউ বিয়ে করতে পারছে না, কেউ বিয়ে করলেও অর্থাভাবে অনটনে পারিবারিকভাবে ব্যাপক অশান্তিতে দিন পার করছে।
বিশেষ ব্যাপার হলো কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এক সেমিস্টারে ৫০ জনের এর অধিক আইনের ছাত্র ভর্তি করার কারণে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পাশকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টিমেশন জমা নিচ্ছে না, এখানে ছাত্রছাত্রীদের ব্যর্থতা কোথায়?
তা অত্যন্ত মানবিকতার প্রশ্ন
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একজন আইন পাশ করা ছাত্র কেন ভুক্তভোগী হবে? তা বোধগম্য নয়। একজনের জন্য কিভাবে অন্যজন শাস্তি পায়?
ইংরেজিতে একটি শব্দ রয়েছে
“Scapegoat ” That means a person who is blamed for the wrongdoings, mistake, or fault of other, especially for reason of expediency.
Expediency মানে হলো যুক্তিযুক্ততা তারমানে Especially for the reason of expediency
যুক্তিযুক্ত কারণ থাকলেই কেবল একজনের জন্য অন্যজনকে দায়ী করা যাবে? যেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সকল নিয়ম ইউজিসি কর্তৃক পরিচালিত এবং বার কাউন্সিল সেখানে বিধি নিষেধ থাকলে ইউনিভার্সিটিকে আইন মানতে বাধ্য করবে, আইন প্রয়োগ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রয়োগ করবে তা বর্তমান অভিভাবকহীন আইন পাস করা ছাত্রদের উপর কেন??
আমার জানামতে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিল এক সেমিস্টারের ৫৩ জন উক্ত ৫৩ জনের মধে পাস করেছে ১৭ জন এখন ওই ৫৩ জন ভর্তি করার অপরাধে ১৭ জনের ইন্টিমেশন বাংলাদেশ বার কাউন্সিল জমা নিচ্ছে না,বর্তমানে এরকম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য আইনে স্নাতক সম্পন্ন শিক্ষার্থীর ইন্টিমেশন জমা নিচ্ছেনা বার কাউন্সিল!!
এই ১৭ জনের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় প্রত্যেকটা মানুষ অপরাধের শাস্তি পেতে হলে তার অবশ্যই Guilty mind থাকতে হবে। এখানে আইন পড়া শেষ করা শিক্ষার্থীদের Guilty mind কোথায় যে তারা শাস্তি পাচ্ছে?? এ কেমন বর্বরতা??
এবার আসি আইন পড়া শেষ করা একজন আইনের ছাত্র কোর্টে পদর্পণ করে তার শিক্ষানবীশ জীবনকাল শুরু করে একজন সিনিয়র এর কাছে, দুবেলা দুমুঠো খাবার খেয়ে না খেয়ে সিনিয়রের নিকট কাজ শিখে পাশাপাশি সিনিয়রের সর্বাঙ্গীণ সহযোগিতা করে থাকে কিন্তু এখন সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের টাউট নির্মূল নামে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের উপর যে নির্মম অত্যাচার চলমান তা অত্যন্ত নির্মম।
হাজার হাজার মেধাবী আজ আত্মসম্মানের ভয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণ ছেড়ে দূরে চলে যাচ্ছে, ৬ মাস শিক্ষানবীশকাল শেষ করে একজন শিক্ষানবীশ কিভাবে কৌশলী হতে পারে তা ব্যবস্থা বার কাউন্সিলের দায়িত্বের মধ্যে পড়লেও সেই ব্যবস্থা গ্রহণে অক্ষমতার কারণে দিন দিন শিক্ষানবিশ আইনজীবী জীবনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে এই দায়ভার কে নেবে?
আপনারা বার কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্যগণ এবং নিবন্ধন কমিটির সম্মানিত বিচারকগণ একদিন এই চেয়ারে হয়তো থাকবেন না চিরদিন কিন্তু হাজার হাজার আইনের মেধাবী ছাত্ররা যখন ছন্নছাড়া জীবন যাপন করবে তাদের এই কষ্টের জীবন যাপন আপনাদের হৃদয়ে মহাপ্লাবনের মতো কষ্টের জন্ম দিবে, তখন হয়তোবা আপনার কোন কিছু করার ক্ষমতা থাকবে না। তাই সম্মানিত বার কাউন্সিলের সদস্যগন এবং নিবন্ধন কমিটির সম্মানিত সদস্যগণ আপনাদের সম্মিলিত উদ্যোগ এবং পরিকল্পনায় পেতে পারে বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইনের ছাত্র দের আজকের এই মহাসঙ্কটের যথাযথ সমাধান।
Discussion about this post