নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় ঝড়ু ও মকিম নামের দুই আসামির করা নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণা করে খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থেকে তাঁদের করা জেল আপিল ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুরের পর ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর দুজনের ফাঁসি কার্যকর হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ বুধবার ঝড়ু ও মকিমের নিয়মিত আপিল খারিজ করে দেন। আদালত বলেছেন, নিয়মিত আপিল অকার্যকর বলে খারিজ করা হলো। কিছু গাইডলাইন থাকবে। তবে গাইডলাইন সম্পর্কে প্রকাশ্য আদালতে ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
১৯৯৪ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা এলাকার সাবেক স্থানীয় মেম্বার মনোয়ার হোসেন খুন হন। এই হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ঝড়ু ও মকিমের মৃত্যুদণ্ড হয়। এই রায় হাইকোর্টে বহাল থাকে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে দুই আসামি পৃথক আপিল করেন। এর পাশাপাশি কারাগারে থেকে পৃথক জেল আপিল করেন তাঁরা। জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগ তা খারিজ করে রায় দেন। পরে তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন, যা ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর নামঞ্জুর হয়। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর তাঁদের ফাসি কার্যকর হয়। এর আগে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দেখা করেন।
তবে ঝড়ু ও মকিমের করা নিয়মিত আপিল ৩ নভেম্বর আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে, যার নম্বর হচ্ছে ১০৭/২০১৩ এবং ১১১/২০১৩। সেদিন নিয়মিত আপিল দুটি ১১ নম্বর ক্রমিকে ছিল। এর আগের দিন ছিল ৩০ নম্বর ক্রমিকে। ৩ নভেম্বর ঝড়ু ও মকিমের আইনজীবী আসিফ হাসান ও হুমায়ুন কবির দাবি করেন, নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগেই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
এরপর ৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে শুনানি হয়। দুই আসামির জেল আপিল ও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুরের পর সব প্রক্রিয়া মেনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ওই দিন শুনানিতে বলে রাষ্ট্রপক্ষ। জেল আপিলের রায়সহ ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া অনুসরণের তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরে তারা। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, তাঁদের কিছু অবহেলা বা ভুল হয়ে থাকতে পারে। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দেন।
আদালতে ঝড়ু ও মকিমের নিয়মিত আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
Discussion about this post