নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৭ ও ২০২০ সালের এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সনদের দাবিতেগত ৩৪ দিন ধরে প্রেস ক্লাবের সামনে তারা প্রতীকী অনশন পালন করে আসছিলেন। আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একই দাবিতে তারা মহাসমাবেশ করেছেন। সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা বাংলামটরে অবস্থিত বার কাউন্সিলের অস্থায়ী কার্যালয় ঘেরাও করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এসময় তারা স্লোগান তোলেন ‘আমরা চাকরি চাই না, বেতন চাই না, বোনাস চাই না। আইন পেশায় থাকার একটি সনদ চাই।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা মনে করেছিলাম বার কাউন্সিল ও এনরোলমেন্ট কমিটি আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে ঈদ করার জন্য আমাদেরকে মা-বাবার কাছে পাঠানোর ব্যবস্তা করবেন। কিন্তু তারা তা করেননি। ঈদের দিনেও আমাদের রাস্তায় কাটাতে হয়েছে। যে স্মৃতি কোনোদিন ভুলবার নয়। আমরা আমাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কখনো এমনটা কামনা করিনি। আমরা আর পারছি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সন্তানরা রাস্তায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কেননা আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।
এ সময় শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী স্মরণ তার বক্তৃতায় বলেন, গত ৭ জুলাই থেকে আমরা শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সনদের দাবিতে অনশন করেছি। আজ মহাসমাবেশ শেষে বার কাউন্সিল ঘেরাও করে ভবনে তালা মেরেছি। কারণ, বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী প্রতি ৬ মাস পরপর বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্তির পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও ২০১৭ সালের পর আর কোনো পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারেনি বার কাউন্সিল। অথচ এই সময়ে আইন অনুযায়ী কমপক্ষে ৬টি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার কথা। প্রতি পরীক্ষায় ৫ হাজার আইনজীবী তালিকাভুক্ত হলেও গত ৩ বছরে ৬টি পরীক্ষায় কমপক্ষে ৩০ হাজার আইনজীবী তালিকাভুক্ত হতেন। সে তুলনায় বতর্মান ১২ হাজার ৮৭৮ জন খুবই সামান্য।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আইন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করে কি আমরা অপরাধ করেছি? তাহলে আমাদেরকে কেন হতাশায় রাখা হচ্ছে। বিষয়টি দেখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি এবং হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমরা চাকরি চাই না, বেতন চাই না, বোনাস চাই না। আইন পেশায় থাকার একটি সনদ চাই।
শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদের সমন্বয়ক এ কে মাহমুদ বলেন, আমাদের অভিভাবকগণ আমাদের প্রতি সদয় হয়ে আমাদের সনদের ব্যবস্থা করবেন সেই প্রত্যাশায় টানা ২৮তম দিন রাস্তায় অবস্থান করছি। এর মধ্যে আমাদের বরিশাল বারের ইলোরা ইয়াসমিন, বগুড়া বারের জাহাঙ্গীর ও এরশাদ আমাদের কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। অনেকে ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা আর কাউকে হারাতে চাই না। আমাদের দাবি, সনদের ব্যবস্থা করে দিন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যাই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- শিক্ষানবিশ আইনজীবী নুপুর আক্তার, আবুল আসাদ বুলবুল, সুমনা আক্তার লিলি, কিতেশ রঞ্জন দাশ প্রমুখ।
Discussion about this post