মোঃ আল-ইমরান খান:
পারিবারিক বিষয়, ব্যাবসা সম্পর্কিত বিষয় বা দ্বি- পাক্ষীয় চুক্তির বন্দোবস্ত ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রায়শঃ-ই একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী মামলার ‘Cause of action’ বা মামলা করার কারণ উত্থিত হতে পারে। হতে পারে, কোন ব্যক্তি একই সাথে দেওয়ানী আদালতে দলিল বাতিলের জন্য মামলা করেছেন সেই সাথে একই বিবাদীর বিরুদ্ধে প্রতারণা বা জালিয়াতির অভি্যোগে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে ইচ্ছা পোষণ করছেন; বা এরুপ হতে পারে যে, যেহেতু মামলার এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেছেন সুতরাং মামলা বিলম্বিত করার প্রয়াসে বা অপর পক্ষেকে শায়েস্তা করার মানসে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরে করেন বা করতে প্রলুব্ধ হন। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল-
• একই সঙ্গে, একই সময়ে, একই পক্ষবৃন্দের মধ্যে, একই বিষয়ে যুগপৎ ভাবে একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী মামলা চলতে পারে কিনা?
• যদি দুটি মামলা একই সাথে চলতে আইনি কোন বাঁধা না থাকে তাহলে প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের দিক থেকে কোন আদালতের কার্যক্রম ও ব্যাবহারিক প্রেক্ষাপটে ফলাফল অগ্রগামিতা পাবে?
একই সঙ্গে একই পক্ষবৃন্দের মধ্যে একই বিষয়ে যুগপৎ ভাবে একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী মামলা চলতে পারে কিনা?
এর উত্তরে প্রথমেই যেটা বলতে হবে সেটা হল, দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলার প্রকৃতি ও প্রতিকারের ধরণ ভিন্ন। দেওয়ানী মামলা সমূহ মূলতঃ অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ভর যেখানে আদালত মামলার কোন পক্ষকে অন্য পক্ষের প্রাপ্য অধিকার বাস্তবায়নের আদেশ দিবেন- সেটা হতে পারে ক্ষতি পূরণের মাধ্যমে বা মামলার মূল বিষয় ন্যায্য পাওনাদার বা অপর পক্ষকে অর্পনের মাধ্যমে।
অন্য দিকে ফৌজদারী মামলার প্রধান উদ্দেশ্য হল অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করনের মাধ্যমে সমাজের শৃংখলা বজায় রাখা বা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যে, অনযায় করলে সমাজের অন্য সদস্যের ও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। ফৌজদারী বিচার ব্যাবস্থার মূল কথা সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ ও শৃংখলা (Well-being and Order) আনয়ন।
সুতরাং, ঘটনা ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা পূর্বক যদি এটা মনে হয় যে, একই বিষয়ের উপর দেওয়ানী ও ফৌজদারী এই দুটি ভিন্ন মামলা করার কারণ বর্তমান তাহলে উক্ত মামলা দায়েরে আইনত কোন বাঁধা নেই। একই বিষয়ের উপর একই সাথে একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী মামলা চলতে পারে কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে Khandkar Mahatabuddhin Ahamed & Others Vs. State, 1 MLR (1996) (AD) 411-412 মামলায় আদালত হ্যাঁ সূচক উত্তর প্রদান করেন এবং বলেন, একটি বিষয়ের উপর দেওয়ানী এবং ফৌজদারী উভয় মামলা একই সঙ্গে চলতে পারে। যেমন- আত্নসাৎকৃত অর্থ উত্তোলনের জন্য পক্ষ- যেমন দেওয়ানী আদালতে মামলা চালাতে পারবে তেমনি Criminal breach of trust এর জন্য আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারী আদালতের আশ্রয় ও গ্রহণ করতে পারবে।
সুতরাং, একই বিষয়ের উপর একই সাথে একটি দেওয়ানি ও একটি ফৌফদারী মামলা চলতে কোন আইনি বাঁধা নেই তবে আদালত ঘটনা, পারিপার্শ্বিকতা বিশ্লেষণে কোথাও ফৌজদারী মামলাটি স্থগিতের আদেশ দেন বা কোথাও দুটি মামলা একই সাথে চলতে দেখা যায়। এবার হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগের কিছু রিপোর্টেড মামলা থেকে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব- —
Noor Alam Vs. The State, 7 BCR (HCD) P. 165 এই মামলায় ‘ক’, ‘খ’-এর নামে একটি চেক ইস্যু করে যা ডিজঅনার হয় ফলে ‘খ’- ‘ক’ এর বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইন্সস্ট্রুমেন্ট এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার অধীনে চেক ডিজঅনারের মামলা করেন। পরবর্তীতে এই ফৌজদারি মামলা দায়েরের পর ‘ক’ (যার ইস্যুকৃত চেক ডিজঅনার হয়েছিল), ‘খ’-এর বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে তাদের মধ্যাকার চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন। উল্লেখ্য, উক্ত চুক্তির ভিত্তিতে ‘ক’। ‘খ’-কে চেকের মাধ্যমে টাকা প্রদান করতে চেয়েছিলেন।
দেওয়ানী মামলা দায়েরের পর ‘ক’ ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪৪ ধারার অধীনে উক্ত চেক ডিজঅনারের মামলা স্থগিতের প্রার্থনা করেন এই যুক্তিতে যে, উক্ত টাইটেল স্যুট নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারী মামলাটি স্থগিত থাকা উচিৎ। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে আপীল বিভাগ(আপীল স্তরে গিয়ে) দুটি মামলা পৃথকভাবে কিন্তু একই সময়ে চলতে পারে বলে মত দেন। আদালত তার রায়ে বলেন,
“এখানে উক্ত ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলাদ্বয় দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে উদ্ভূত হয়েছে; একটি চুক্তির বৈধতা সম্পর্কিত এবং অন্যটি চেকের মাধ্যমে প্রদেয় টাকা না পাবার ফলে নালিশকারীর ক্ষতিগ্রস্থ হবার প্রেক্ষাপটে যা অপরাধ মূলক আইনের সু- নিদৃষ্ট ধারায় বিচারযোগ্য। দুটি মামলার প্রেক্ষাপট ভিন্ন বিধায় আলাদা আলাদা বিচার একই সময়ে চলতে আইন বাঁধা দিতে পারে না। ”
Siddiqur Rahman Vs. A M Harunur Rashid, 3 BLT (AD) 64 এই মামলায় ‘ক’, ‘খ’-এর বিরুদ্ধে একটি ঘোষনামূলক মামলা তৎসহ ১.২৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য দেওয়ানী মামলা করলেন। ‘খ’(আগের দেওয়ানী মামলার বিবাদী) পরবর্তিতে ‘ক’ এর বিরুদ্ধে ফৌজদারী আদালতে দন্ড বিধির ৪০৮/৪২০(Criminal breach of Trust by Servant/ Cheating) ধারার অধীনে মামলা করলেন। আসামী পক্ষ পরবর্তিতে ফৌজদারী আদালতে এই মর্মে প্রার্থনা করলেন যে, যেহেতু পক্ষ বৃন্দের মধ্যে একটি দেওয়ানী মামলা বিদ্যমান সুতরাং উক্ত দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারী মামলাটি স্থগিত রাখা হোক। হাইকোর্ট মামালাটি ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেন; কিন্তু আপীল বিভাগ বিদ্যামান ঘটনা, পরি স্থিতি ও উভয় মামলার প্রকৃতি বিশ্লেষন শেষে হাইকোর্টের উক্ত সিদ্ধান্তকে স্থগিত রেখে মামলাটি পুনরায় চালানোর জন্য নির্দেশ দিলেন।
কিন্তু কিছু মামলায় একই বিষয়ের উপর আদালত ভিন্ন ভিন্ন মামলা দায়েরে বাঁধা না দিলেও দেওয়ানী মামলা পেন্ডিং থাকা কালীন সময়ে ফৌজদারী মামালা কার্যবিধির ৩৪৪ ধারার অধীনে সাময়িক ভাবে স্থগিতের আদেশ দেন। এ সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য কিছু মামলা হল—
Zakir Hossain Vs. State 73 DLR (AD) 102 এই মামলায় ‘ক’, ‘খ’-এর বিরুদ্ধে কিছু দলিলের ভিত্তিতে জমির সস্ত্ব ফেরৎ পাবার জন্য টাইটেল স্যুট দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার বিবাদী ‘খ’ বাদী ‘ক’-এর বিরুদ্ধে উক্ত দলিল জাল ও পুরাতন তারিখ (Ante-dated) উল্লেখকৃত মর্মে ফৌজদারী আদালতে একটি সি আর মামলা দায়ের করেন। উক্ত ফৌজদারি মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তি,যিনি এ সম্পর্কিত দেওয়ানী মামলার বাদী ছিলেন, আদালতের কাছে এ মর্মে প্রার্থনা করেন যে, যেহেতু দেওয়ানী আদালতে এ সম্পর্কিত একটি টাইটেল স্যুট বিদ্যমান সুতরাং আদালত এই ফৌজদারী মামলাটি স্থগিতের আদেশ প্রাদান করেন। আদালত আসামির আদেশ মঞ্জুর করেন এবং ফৌজদারী মামলাটি নিদৃষ্ট সময়ের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন।
এবার প্রসঙ্গ ক্রমে কিছু বিষয়েরঅবতারণা করব—
একটি ফৌজদারী মামলা কখন স্থগিত করা যায়?
মামলায় স্বাক্ষীর অনুপস্থিতি, বা একই বিষয়ের উপর দেওয়ানী এবং ফৌজদারী মামলা দায়ের সহ বিবিধ কারণে আদালত যদি উপযুক্ত মনে করেন তাহলে কার্যবিধির ৩৪৪ ধারার অধীনে মামলার কার্যক্রম সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখতে পারেন। অবশ্য কার্যবিধির ২৪৯ ধারার অধীনেও আদালতের এরুপ ক্ষমতা রয়েছে তবে এখনকার বিষয়ের সাথে অ-প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় তা এখানে আলোচনা করা হল না।
দেওয়ানী মামলা চলমান অবস্থায় ফৌজদারী মামলা স্থগিতের নিয়ম
বিচারপতি M.A. Wahab তাঁর The Code of Criminal Procedure গ্রন্থে বলেছেন, যখন একই বিষয়ের উপর দেওয়ানী মামলা চালু থাকে তখন ফৌজদারী মামলাটি স্থগিত রাখতেই হবে- এমন ধরা বাঁধা কোন নিয়ম নেই। Bashir Uddhin Vs. Osman Gani, 22 DLR (1970) 502 মামলায় বলা হয়েছে, দেওয়ানী মামলা চালু থাকা অবস্থায় ফৌজদারী মামলা স্থগিত রাখা উচিৎ হবে কিনা এটা প্রত্যেকটি ঘটনা, পরিস্থিতি ও মামলার প্রকৃতি অনুযায়ী (Facts, circumstances and Nature of the allegation) নির্ধারিত হবে। এই মামলায় আরো বলা হয়, স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট পক্ষদের শুধুমাত্র ইচ্ছার উপর (Fancy desire) ফৌজদারী মামলা অনিদৃষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা যায় না। অন্য এক মামলায় আরো স্থির হয় যে, দেওয়ানী মামলা চালু কালীন অবস্থায় ফৌজদারী আদালতে বিচারাধীন মামলা স্থগিতের ক্ষমতা আদালতের একান্ত সু-বিবেচনা মূলক ক্ষমতা; এটিকে কোন ব্যক্তি অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারেন না। আদালত তাঁর অর্ন্তনিহিত ক্ষমতা বলে এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে এরুপ মামলা নিদৃষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত করতে পারেন।
কখন দেওয়ানী মামলা পেন্ডিং থাকা অবস্থায় একটি ফৌজদারী মামলা স্থগিত রাখা যেতে পারে?
Dhirendra Chandra Chakrabarti Vs. Nani Gopal Chakrabarti, 13 DLR 215 মামলায় আদালত স্থির করেন যে, যদি কোথাও এমন দেখা যায় যে, দেওয়ানী মামলার সিদ্ধান্ত প্রত্যক্ষ ও কার্যকরীভাবে ফৌজদারী মামলায় বিবদমান আসামীর দোষ বা নির্দোষিতা প্রমাণে ভূমিকা রাখতে পারে সেক্ষেত্রে বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে ফৌজদারী মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। যেখানে আদালতের কাছে এটি প্রতীয়মান হয় যে, দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তির আগে ফৌজদারী মামলা চালু রাখলে আসামী তাঁর নিজের ডিফেন্সের ক্ষেত্রে ক্ষতির (prejudice) মুখোমুখি হতে পারে বা দুটি আদালতে বিপরীতমুখী দুটি ভিন্ন সিদ্ধান্ত হবার আশঙ্কা রয়েছে, সেক্ষেত্রে ফৌজদারী আদালত তার অধীনে মামলাটি স্থগিতের আদেশ দিবেন।
Zakir Hossain Vs. State, 43 DLR (AD) 102 মামলায় এজাহার দায়েরের পূর্বেই দেওয়ানী মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এবং দেওয়ানী মামলা এমন পর্যায়ে ছিল যে, তর্কিত দলিলাদি এখন ও দেওয়ানী আদালতের প্রদর্শণ বা নিরীক্ষার জন্য উপস্থাপন করা হয় নি। এমতবস্থায়,দেওয়ানি আদালতকে সাহায্য করার জন্য ও মামলার ঘটনা, পরিস্থিতি ও ফৌজদারী মামলার প্রকৃতি বিবেচনায় আদালত উক্ত ফৌজদারী মামলা স্থগিতের আদেশ দেন।
Md. Hanif Vs. The State and another (2012) Law guardian (First issue-2013)-p.119 এই মামলার ঘটনায় প্রকাশ এই যে, বায়না পত্রের ভিত্তিতে দুজন ব্যক্তির মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য দেওয়ানি আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়; পরবর্তীতে উক্ত বায়না পত্র জালিয়াতি করে সৃষ্ট মর্মে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির অধীনে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন। হাইকোর্ট বিভাগ এই মামলার সংক্ষুব্ধ পক্ষের আবেদনক্রমে ফৌজদারী মামলাটি এক বছরের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেন।
কখন সাধারণত ফৌজদারী মামলা স্থগিতের আদেশ দেওয়া হয় না?
কখন সাধারণত ফৌজদারী মামলা স্থগিতের আদেশ দেন না এমন প্রশ্নের জবাবে Khalilur Rahman Vs. Md. Idrish, 20 DLR (1968) 674 মামলায় আদালত ধার্য্য করেন যে, কার্যবিধির ৩৪৪ ধারার অধীনে শুধুমাত্র দেওয়ানী মামলা চালু আছে এই যুক্তিতে ফৌজদারী মামলা হঠাৎ এবং অনিদৃষ্ট কালের জন্য স্থগিত করা যাবে না (Sine die postponement not allowed). যেক্ষেত্রে দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তিতে যথেষ্ট সময় লাগবে বলে প্রতীয়মান হয় বা দেওয়ানী মামলার মাধ্যমে মামলার সকল প্রশ্ন নিস্পত্তি করা যাবে না অর্থাৎ দেওয়ানী মামলা থেকে ফৌজদারী মামলাটি প্রকৃতিগত দিক থেকে অনেক বিষয়ে ভিন্নতর এমন পরিস্থিতিতে ফৌজদারী আদালত তার অধীনে বিচারাধীন মামলা স্থগিত করতে পারেন। উল্লেখ্য, অনিদৃষ্টকালের জন্য ফৌজদারী মামলা স্থগিত রাখা হলে তা একদিকে যেমন নালিশকারীর স্বার্থ বিরোধী তেমনি তা আইনের নীতি বিরুদ্ধ (against the policy of law) বলে গণ্য হবে। (38 DLR 132)
একই বিষয়ে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা চালুর ক্ষেত্রে কোন মামলাটি অগ্রগামী বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ (Precedence over one another)?
প্রশ্ন উঠতে পারে একই বিষয়ের উপর একটি দেওয়ানী ও একটি ফৌজদারী মামলা চালু থাকা কালীন অবস্থায় মামলা স্থগিতের ক্ষেত্রে বা মামলার প্রসিডিংয়ের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি গুরুত্ব পাবে? এ ক্ষেত্রে A.B. Siddiqur Rahman Vs. A.M. Harunur Rashid & Others, 3 BLT (AD) 64 মামলায় আদালতের মত হচ্ছে, ফৌজদারী মামলাটি বেশি গুরুত্ব পাবে। আদালতের মতে,
“The principle governing the stay of proceeding of civil suit vis-à-vis criminal cases is that the criminal matters should be given precedence.”
কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা চলমান থাকা কালীন ফৌজদারী মামলা স্থগিত রাখা হয়; দেওয়ানী মামলা নয়। সুতরাং, গুরুত্ব উপলব্ধিতে এটা অনেকাংশে প্রতীয়মান হতে পারে যে, The Civil Courts get the upper hand than the criminal Courts. অন্যদিকে, PLD (1965) (Lah) 676 এই মামলায় স্থির হয় যে, কোন বিষয়ে যদি এরুপ প্রতীয়মান হয় যে, বিবদমান বিষয়টির প্রকৃতি এমন যে, বিবদমান ইস্যুটি ফৌজদারী আদালত থেকে দেওয়ানী আদালতে অধিক যথার্থতার সাথে নিষ্পত্তি করা যায়, সেক্ষেত্রে পক্ষদেরকে ফৌজদারী আদালতে যাবার বিষয়ে উৎসাহিত করা উচিৎ নয়। অর্থাৎ, এখানে দেওয়ানি আদালতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ।
Discussion about this post