নিজস্ব প্রতিবেদক: অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার কু-কীর্তির প্রতিবাদ ও শাহাদাতের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি (১৮) পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনোজ কুমার মজুমদার।
তিনি জানান, নুসরাত জাহান রাফিকে পরিকল্পনা করে আগুন দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে আসামি নূর উদ্দিন। জবানবন্দিতে তিনি জানায়, অপারেশনে বোরখা পরিহিতের মধ্যে ওই মাদরাসার দুই জন ছেলে আর বাকি দুইজন মেয়ে ছিল।
চারজনের মধ্যে শাহদাত হোসেন শামীম ও শম্পা বা চম্পা নামে যে ছিল তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
নুসরাতের ভাই নোমানের দায়ের করা মামলার তালিকাভুক্ত আসামিরা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মকসুদুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নূর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।
এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সাত দিনের রিমান্ডে আছেন। এছাড়া ওই মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবছার উদ্দিন এবং নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, নুসরাতের সহপাঠী ও অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি ও আরেক মাদরাসা শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদের পাঁচদিন করে রিমান্ড চলছে।
নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার চারদিন পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
Discussion about this post