নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে বর্তমান জেলা প্রসাসক জনাব মোহাম্মদ মমিনুর রহমান কর্তৃৃক উদ্দেশ্যমুলক ভাবে সমিতির ভবন সংক্রান্তে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, ঐতিহ্যবাহী পুরাকীর্তি ধ্বংস করে আদালত ভবনের সম্মুখে পার্কিং, বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ ও অন্যান্য অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে গত ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
অতঃপর চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক চট্রগ্রাম আইনজীবী সমিতির ভবন সংক্রান্তে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, ঐতিহ্যবাহী পুরাকীর্তি ধ্বংস করে আদালত ভবনের সম্মুখে পার্কিং, বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ ও অন্যান্য কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য চট্রগ্রাম জেলা প্রসাসককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয় । এতেও কোন পদক্ষেপ না নিয়ে তার এহেনও অনিয়ম কার্যক্রম চালিয়ে যাওযায় আজ ৬ মার্চ ২০২২ ইং তারিখ রবিবার মাননীয় বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট দৈত বেঞ্চে চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি বাদী হয়ে একটি রিট পিটিশান দায়ের করেন।
রিট পিটিশানটি মাননীয় বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট দৈত বেঞ্চে শারীরিক উপস্থিতে শুনানী হয় ।
শুনানীতে বলা হয় চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সংস্কারকৃত ও সংরক্ষিত পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখে খালি জায়গায় বিগত আগষ্ট, ২০২১ সালে জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রশাসনের গাড়ী পাকিং করার জন্য গেইট নির্মাণপূর্বক ঘেরাও দিয়ে শেইড নির্মান করে নিজেদের গাড়ী রাখার জন্য সুরক্ষিত করার চেষ্টা করে। যা দীর্ঘদিন যাবত আইনজীবীসহ সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
উক্ত কাজের জন্য মাটি কেটে গর্ত করা, ইট, বালিসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী আনা হয়। রাস্তার মধ্যে বালি রেখে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। যা চট্রগ্রামের আইনজীবীসহ সর্বসাধারণের নজরে আসলে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে আপত্তি দেওয়া হয় এবং জেলা প্রসাসনের সংশ্লিষ্টদেরকে উক্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলা হয় । পরবর্তীতে বিভিন্ন মুখী চাপের মুখে পড়ে জেলা প্রসাসন উক্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বাদ্ধ হয় ।
এ বিষয়ে বিগত ০৩/০৮/২০২১ ইং তারিখ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয় । কিন্তু সম্প্রতি পুণরায় চট্রগ্রাম পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখভাগে সোন্দর্য্যবর্ধনের নামে চলাচলের একমুখী রাস্তার অংশে ভবনের পূর্বপাশের সামনের খোলা জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাতের অন্ধকারে বাগান নির্মাণ, ফুলের টব স্থাপনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজর বিচারপ্রার্থী জনগণ, বিজ্ঞ বিচারক, বিজ্ঞ আইনজীবীসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্তকর্তা- কর্মচারী আদালত অঙ্গনে আসা যাওয়া করেন। যার কারণে অসংখ্য মানুষের আনাগোনা হয় এবং অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করে।
জেলা প্রশাসন কর্তৃক সোন্দর্য্যবর্ধনের নামে রাস্তা সরু করে প্রতিবন্ধকতা তৈরীর কারণে আদালতে আগত সকল পেশা শ্রেণীর মানুষ হাটাচলা, গাড়ী চলাচলে বিঘ্নসৃষ্টি, যানজট তৈরীসহ নানামুখী হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন। উপরুন্ত ডিসি পুলের গাড়ীসমুহ ইচ্ছাকৃতভাবে পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখে রেখে যানজট তৈরী করা হচ্ছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকে ব্যবহার করে জেলা প্রশাসক পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখস্থ উম্মুক্ত চত্তরে রোড কেন ব্যবহার করে ব্যারিকেট দিয়ে যান ও জন চলাচলের পথ সংকুচিত করেছেন । যার ফলে প্রতিনিয়তই আদালতে প্রবেশ বাহির পথে যান জট লেগে থাকে।
কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় উক্ত বিষয় নিস্পত্তি হওয়ার পূর্বে জেলা প্রশাসক প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে, দপ্তরে চিঠি পত্র চালাচালি করে উচ্চ পর্যায়ের নির্দশানা অমান্য করে চলছেন।
উপরোক্ত পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবনের সামনের জায়গায় পিটিশানে বর্নিত কারণাদী পর্যালোচনা করে চট্রগ্রাম জেলা প্রশাসকের এহেত কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং পুরাতন আলালত প্রাঙ্গণে এহেনও কার্যক্রম কেন অবৈধ হবে না এই মর্মে জেলা প্রশাসককে জবাব দেওয়ার জন রুল জারী করা হয়েছে।
উক্ত রিট পিটিশানে চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে শুনানী করেন সাবেক এর্টনি জেনারেল এ. এফ. হাসান আরিফ, সাবেক অতিরিক্ত এর্টনি জেনারেল হাসান মুরাদ, এডভোকেট রতন কুমার রায়, এডভোকেট এ এস এম কামাল আমরোহী চৌধুরী, চট্রগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন সহ আরো অন্যান্য আইনজীবীবৃন্দ।
Discussion about this post