ডেস্ক রিপোর্ট
রাজধানীতে বিকাশ পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার চালক মো. মাহবুবুর রহমানের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আছিবুজ্জামান আসিফ।
অন্যদিকে তার আইনজীবী নুরনবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার রাজধানীর তুরাগ থানার বালুর মাঠ থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ থানা পুলিশ। এ সময় ওই বাসটিও (ঢাকা-মেট্রো-ব-১২-০৬০৫) জব্দ করা হয়।
এ বিষয় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (চকবাজার জোন ও প্রশাসন লালবাগ বিভাগ) মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, গত ২৪ জুলাই ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে ধানমন্ডি থেকে আজিমপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিকাশ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে ওঠে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে একপর্যায়ে তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। পরে রাত আনুমানিক ৯টা ১০ মিনিটের দিকে ভুক্তভোগী অনুভব করেন, তার শরীরে কেউ যেন হাত দিয়েছে। তাৎক্ষণিক তিনি তাকিয়ে দেখেন বাসে কোনো যাত্রী নেই এবং তার পাশের সিটে বাসটির হেলপার বসা।’
‘তখন ওই ছাত্রী বিপদ আঁচ করতে পেরে বাসের হেলপারকে তার পাশ থেকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেন। তখন ভুক্তভোগী সিট থেকে দাঁড়িয়ে নামার চেষ্টা করলে হেলপার তাকে পেছন থেকে এক হাতে মুখ চেপে ধরেন। ওই ছাত্রী নিজেকে বাঁচানোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে হেলপারের কাছ থেকে ছুটে চালককে চিৎকার করে বাস থামাতে বলেন।’
‘কিন্তু চালক তখন বাস না থামিয়ে দ্রুতগতিতে ইডেন কলেজের সামনে দিয়ে আজিমপুরের দিকে যেতে থাকেন। একপর্যায়ে আজিমপুর গার্লস স্কুলের কাছে বাসটি কিছুটা গতি কমালে ওই ছাত্রী লাফ দিয়ে বাস থেকে নেমে আত্মরক্ষা করেন।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী ঘটনাটি ফেসবুকে শেয়ার করে একটি পোস্ট দেন। এরপর লালবাগ থানা পুলিশ প্রাথমিক অনুসন্ধান করে ভুক্তভোগীকে চিহ্নিত করে তথ্য সংগ্ৰহ করে। তাৎক্ষণিক সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বিকাশ পরিবহনের বাসটি শনাক্ত করা হয়।
‘এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিকাশ পরিবহনের বাসচালক মো. মাহবুবুর রহমানের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে বুধবার ঢাকার আশুলিয়া থানায় লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার কেএন রায় নিয়তীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাসের হেলপারকে গ্রেফতারেও অভিযান অব্যাহত আছে।’
এ ঘটনায় লালবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান কুদরত-ই-খুদা।
Discussion about this post