চাঁদাবাজি এক ভয়ংকর আতঙ্কের নাম।আর এই চাঁদাবাজির আতঙ্ক যদি পুলিশ দ্বারা হয় তাহলে একটু বেশিই হয়।অনেকগুলো মামলায় পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এসেছে।শুধু পুলিশ না একটু ক্ষমতাবান হলেই দেখা যায় লোকজন চাঁদাবাজি করে।তাদের ক্ষমতার লড়াইয়ে হয়তো সাধারণ মানুষ টিকে থাকতে পারে না, চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। এই সাধারণ মানুষগুলোকে ন্যায় বিচার দিতে আইন সাহায্য করবে।
আইনে চাঁদাবাজির ধারাঃ-
১/ দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ৩৮৫ ধারা
২/আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রত বিচার) আইন ২০০২ এর ধারা ২(খ)(অ)(১)
দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ৩৮৫ ধারা
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৮৫ ধারায় বলা আছে কোন ব্যক্তি যদি বল প্রয়োগে সম্পত্তি আদায় করার উদ্দেশ্যে কাউকে জখম করার ভয়ে অভিভূত করে অথবা জখম করার ভয়ে অভিভূত করার চেষ্টা করে, তবে সে ব্যক্তি চৌদ্দ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে, তবে কারাদণ্ডে মেয়াদ পাঁচ বছরের কম হবে না অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।
অর্থাৎ এই ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি জখমের ভয় দেখিয়ে বা চেষ্টা করে কারো সম্পত্তি আদায় করে তাহলে সে সর্বোচ্চো চোদ্দ বৎসর থেকে সর্বোনিম্ন পাঁচ বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
কোথায় মামলা করবেনঃ-
ফৌজদারি কার্যবিধির দ্বিতীয় তফসিল অনুযায়ী এই ধারার অপরাধ আমলযোগ্য তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুযায়ী এই অপরাধের তথ্য আপনার নিকটতম পুলিশ স্টেশনে দিবেন এবং উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। এখন প্রশ্ন হতে পারে পুলিশ যদি মামলা না নেয় তাহলে কি করনীয়? কেননা অনেক সময় পুলিশ নিজেই চাঁদাবাজি করে।এমন পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে এখতিয়ারবান আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করবেন।
আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রত বিচার) আইন ২০০২ এর ধারা ২(খ)(অ)(১)
আইনে একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে চাঁদাবাজিকে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রত বিচার) আইন ২০০২ এর ২(খ)(অ)(১) ধারায়।এখানে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি, বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে চাঁদা, সাহায্য বা অন্য কোন নামে অর্থ বা মালামাল দাবী, আদায় বা অর্জন করা বা অন্য কোন প্রকার সুযোগ-সুবিধা আদায় করা বা আদায়ের চেষ্টা করলে তা হবে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ।এই আইনের ৪ ধারায় এই অপরাধের শাস্তির কথা বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি উক্ত অপরাধ করে তাহলে সে সর্বোনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বচ্চো সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
কোথায় মামলা করবেনঃ-
এই ধারার অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ স্টেশনে মামলা দায়ের করতে পারবেন।পুলিশ মামলা না নিলে এখতিয়ারবান আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করবেন।
এই আইনের অপরাধ দ্রত বিচার আদালতে বিচার হবে।যার ফলে অনেক দ্রত মামলার শেষ হবে।এই আইনের ১০(২) ধারায় বলা আছে অভিযোগ প্রাপ্তির ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে।তাই এই আইনে মামলা করলে অনেক দ্রত বিচার হয়।তাই এই আইনে মামলা করা ভালো।
লেখকঃ-
মোঃ মনিরুজ্জামান
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
Discussion about this post