নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরবানির পশুর হাটে জালনোট প্রচলন চক্রের অপতৎপরতা প্রতিরোধে জালনোট শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে রাজধানীর ১৮ পশুর হাটে ১৯ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নামের তালিকা আজ রবিবারের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতি বছরই অসাধু চক্র জালনোট প্রচলনের অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকে। এসব প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারান নিরীহ পশুব্যবসায়ী ও খামারিরা। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব অসাধু চক্রের সদস্যরা ধরাও পড়ছে। তারপরও থেমে নেই জালনোট প্রচলন।
রাজধানীসহ কোরবানির পশুর হাটে জালনোট জালিয়াতি চক্রের অপতৎপরতা বন্ধে তাই উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি বছরের মতো এবারো রাজধানীসহ সারা দেশের পশুর হাটগুলোতে জালনোট যাচাই-বাছাই করতে একাধিক জালনোট শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন মনোনীত ১৮ পশুর হাটে ১৯টি ব্যাংকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে সারা দেশে অন্য হাটগুলোতে জালনোট শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিসগুলোর আওতাধীন ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যেসব এলাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিসের বাইরে থাকবে ওই সব এলাকায় তদারকি করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সোনালী ব্যাংককে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অনুমোদিত এবার পশুর হাট রয়েছে ১৮টি। এসব হাটে জালনোট শনাক্তকরণ মেশিনের সহায়তায় অভিজ্ঞ ক্যাশ কর্মকর্তাদের দ্বারা হাট শুরুর দিন থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিরতিহীনভাবে পশুব্যবসায়ীদের বিনা খরচে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান করতে হবে। এ জন্য ১৯ ব্যাংককে মনোনীত করা হয়েছে। এসব হাটে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য তালিকাভুক্ত ১৯ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদবিসহ নামের তালিকা আজ রোববারের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপর দিকে ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিস রয়েছে ওইসব অফিসের নেতৃত্বে গৃহীত অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যেসব জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস নেই ওইসব জেলায় সোনালী ব্যাংকের নেতৃত্বে ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি পশুর হাটে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর ‘নোট শনাক্তকরণ করা হয়’ এমন ব্যানার টাঙাতে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পশুব্যবসায়ীদের জালনোট শনাক্তে রাজধানীর ১৮ পশুর হাটে দায়িত্বে থাকবেন ১৯ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ৬ পশুর হাটে থাকবেন ৭ ব্যাংক এবং ঢাকা দক্ষিণ ১২ পশুর হাটে থাকবেন ১২ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। উত্তরের ৬ পশুর হাটের মধ্যে গাবতলী পশুর হাটে জালনোট শনাক্তকরণের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংককে। উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন থেকে বিজিএমইএ ভবন ও মেট্রোরেলের খালি জায়গায় পশুর হাটে দায়িত্ব থাকবে সোনালী ব্যাংকের। কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটে ইসলামী ব্যাংক (আইবিবিএল), ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজসংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গায় পশুর হাটে থাকবে ডাচ বাংলা ব্যাংক, ভাটারা পশুর হাটে জনতা ব্যাংক ও উত্তর খান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গার পশুরহাটে থাকবে রূপালী ব্যাংক।
এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২টি পশুর হাটে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংককে।
Discussion about this post