জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের

কোন দোষ না করেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ভুল আসামি হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করা পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ১ মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা ব্রাক ব্যাংককে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে জাহালমকে ১ মাম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এসময় আদালত বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তারা নিজেদের বাঁচাতে যেনো তেনো ভাবে নিরাপরাধ জাহালমকে আবু সালেক হিসেবে ফাঁসিয়ে দেয়। এবং দুদকের কর্মকর্তারা আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করেনি।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আনিসুল হাসন। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ জাকির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিতদাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেন আদালত।

একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চান। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট ও সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন।

গত ১৭ এপ্রিল এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

খবর নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খেটেছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম।