যৌন সম্পর্ক অথবা যৌন হয়রানির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একজন পর্নো তারকা, একজন প্লেবয় মডেল ও একজন সেলিব্রেটি তারকা মামলা করেছেন। কাহিনী আলাদা আলাদা হলেও তিনিট আলাদা মামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তোলপাড় চলছে। ট্রাম্পের সঙ্গে পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলসের যৌন সম্পর্কের কথা পুরনো। এ নিয়ে অনেক পানি ঘোলা হয়েছে। তিনি মামলাও করেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্লেবয় মডেল কারেন ম্যাকডোগাল।
তিনিও দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তারও যৌন সম্পর্ক ছিল। তারা মুখ বন্ধ রাখতে ৬ অংকের অর্থের চুক্তির বিষয়ে মুখ খুলেছেন। অন্যদিকে ‘অ্যাপ্রেন্টিস’ প্রতিযোগী সামার জারভোস দাবি করেছেন, ট্রাম্প তাকে যৌন হয়রান করেছেন। তিনি এখন মানহানি মামলা করেছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এসব নিয়ে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন আদালতে মামলা হয়েছে। আগে থেকেই অভিযোগ আছে, স্টর্মি ডানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের যৌন সম্পর্ক ছিল বেশ কয়েক মাস। তখন ঘরে তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। এ অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও স্টর্মি ডানিয়েলস প্রমাণ হিসেবে ট্রাম্পের সঙ্গে তার একটি ছবি প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্টর্মি ডানিয়েলসের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়। তাকে দেয়া হয় এক লাখ ৩০ হাজার ডলার। এই অর্থ তাকে পরিশোধ করেন ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন। এ বিষয় নিয়ে তিক্ত বিতর্ক যুক্তরাষ্ট্রে। তবে মাইকেল কোহেন বলেছেন, স্টর্মি ডানিয়েলসের সঙ্গে মুখ বন্ধ রাখার জন্য যে এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের চুক্তি হয়েছিল তিনি সেটা ভঙ্গ করার জন্য দুই কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। এখন কথা হলো, যদি ট্রাম্পের সঙ্গে ওই পর্নো তারকার যৌন সম্পর্ক না-ই হয়ে থাকে তাহলে কেন মুখ বন্ধ রাখার চুক্তি! এ নিয়েই প্রতিদিন সিএনএনে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ওই পর্নো তারকা ও প্রেসিডেন্টের মধ্যে কোনো সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন মাইকেল কোহেন। কিন্তু পর্নো তারকার আইনজীবী স্টর্মি ডানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে প্লেবয় মডেল ম্যাকডোগাল দাবি করেছেন, বেশ কয়েক মাস ধরে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তিনি এ কাহিনী বিক্রি করে দিয়েছেন ন্যাশনাল এনকুইরারের কাছে। সেটা নির্বাচনের আগে। কিন্তু ওই ম্যাগাজিনটি সেই কাহিনী প্রকাশ করে নি। এ জন্য ম্যাকডোগাল এক লাখ ৫০ হাজার ডলারের চুক্তি থেকে মুক্তি চান।
তিনি ওই ম্যাগাজিনকে যেসব তথ্য উপাত্ত দিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দ্য নিউ ইয়র্কার। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানী হামলা করেছেন সাবেক অ্যাপ্রেন্টিস প্রতিযোগী জারভোস। এ বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালতের একজন বিচারক মামলাটি কার্যকালিকায় নিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেনিফার শেকটার বলেছেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টে দায়মুক্তি নেই। তার ব্যক্তিগত কর্মকান্ড আইনের আওতাধীন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে জারভোস অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তাকে যৌন হয়রান করেন ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন, নিউ ইয়র্কে একটি মধ্যাহ্নভোজের সময় তার ঠোঁতে দু’বার চুমু খেয়েছেন ট্রাম্প। তাকে চুমু দিয়েছেন বেপরোয়াভাবে। বেভারলি হিলসে আলাদা এক অনুষ্ঠানে তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিয়েছেন।
Discussion about this post