ডেস্ক রিপোর্ট
এক যুগের বেশি সময় আগে নোয়াখালীতে ডাকাতির সময় ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীকে খুনের ঘটনায় করা মামলায় মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন হাইকোর্ট। অপর আটজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), জেল আপিল ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়। ডাকাতির সময় খুনের ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ নোয়াখালীর আদালত ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। এই রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্ট আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও আপিল করেন। এসবের ওপর শুনানি নিয়ে রায় দেন আদালত।
আইনজীবীরা জানান, মোফাজ্জেল হোসেন, জাফর হোসেন, আলী আকবর, সামছুদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, নাসির উদ্দিন, আবু ইউছুফ ও তোফাজ্জল হোসেন—এই আটজন খালাস পেয়েছেন। কামরুল হাসান, রাশেদ ড্রাইভার ও কামাল হোসেনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুস সবুরের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও মহাদ্দেস-উল-ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। পলাতক আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী সাধন কুমার বণিক।
রায়ের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, আইন ও সাক্ষ্য-প্রমাণ যথাযথভাবে বিবেচনায় না নিয়ে ঢালাওভাবে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া অপ্রত্যাশিত বলে রায় ঘোষণার সময় আদালত অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা তিন আসামি পলাতক। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
২০০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে নোয়াখালী শহরের জামে মসজিদ মোড় এলাকার মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ করে দুই ভাই ফিরোজ কবির, সামছুল কবির এবং দোকানের কর্মচারী সুমন বাসায় ফিরছিলেন। পথে তাঁরা ডাকাতের কবলে পড়েন। ডাকাতেরা তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সড়কের পাশে ফেলে দেয় এবং সঙ্গে থাকা আনুমানিক ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে। পরে সুমনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে আহত দুই ভাইকে ঢাকায় আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফিরোজ। ২০০৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ফিরোজের বাবা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ডাকাতি ও খুনের অভিযোগে সুধারাম থানায় মামলা করেন।
Discussion about this post