চতুর্থ শ্রেণীর পদমর্যাদা আর জাতীয় বেতন স্কেলের দাবিতে এবার ঢাকায় আসছে ৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশ।
দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শনিবার (০৯ এপ্রিল) মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা।
বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ আলীম বলেন, সরকার আমাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা মহাসমাবেশ কর্মসূচি আহ্বান করেছি।
তিনি বলেন, সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস না পেলে আগামী ১৭ থেকে ২৩ এপ্রিল সারাদেশের সব গ্রাম পুলিশদের কালোব্যাজ ধারণ, ১০ থেকে ১২ মে ইউনিয়ন পরিষদে হাজিরা বর্জন ও ২৯ মে থেকে ৫ জুন থানার হাজিরা ও সব কার্যক্রম বর্জন করবে গ্রাম পুলিশরা।
সারাদেশে ৫ হাজার ২৫১টি ইউনিয়নে একজন দফাদার ও ৯ জন মহল্লাদারসহ সারাদেশে মোট ৪৬ হাজার ৮৭০ জন গ্রাম পুলিশ কর্মরত রয়েছেন।
আলীম আরও জানান, গ্রাম পুলিশ প্রায় ৭০ ধরনের কাজ করেও মানবেতর জীবনযাপন করে। এর মধ্যে কর আদায়, জন্ম-মৃত্যু, বিধবা-বয়স্ক ভাতার তালিকা তৈরি, ভিজিডি-ভিজিএফ বণ্টন, ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ জারি, পুলিশের সাথে আসামি আটক, নির্বাচনী দায়িত্ব, সরকারি প্রতিষ্ঠানের চিঠি বিলি, মহল্লা-রেল লাইন পাহারা ও থানায় হাজিরা দেওয়া সবই করতে হয় তাদের।
সূত্র জানায়, দফাদার সরকার থেকে ১ হাজার ৩শ’ আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৮শ’, মোট ২ হাজার ১শ’ টাকা বেতন পান।
মহল্লাদার সরকার থেকে ১ হাজার ১শ’ আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৮শ’, মোট ১ হাজার ৯শ’ টাকা বেতন পান। সেই টাকাও দেওয়া হয় ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর অন্তর। কোথাও কোথাও ৭-৮ বছর ইউনিয়ন পরিষদের অংশ পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
চলতি বাজেটে গ্রাম পুলিশদের জন্য কোনো বরাদ্দ না রাখায় আবারও ঝুলে গেছে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে স্বীকৃতি ও বেতন স্কেল ঘোষণা।
২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সরকার ৪৬ হাজার ৮৭০ জন গ্রাম পুলিশকে চতুর্থ শ্রেণীর সমান স্কেল দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র জানায়, গ্রাম পুলিশদের প্রতিবছর সরকারি অংশ থেকে বেতন দেওয়া হয় ৬১ কোটি ৪২ লাখ ৮ হাজার টাকা।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রত্যেক দফাদার সরকারি অংশ ২ হাজার ৫শ’ ও ইউনিয়ন পরিষদ অংশ পাবে ১ হাজার ৫শ’ টাকা।
মহল্লাদার সরকারি অংশ থেকে ২ হাজার ১শ’ ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা পাবে। দফাদার ও মহল্লাদারকে বেতন দিতে বছরে ১৯৪ কোটি ৭২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা লাগবে।
এর মধ্যে সরকারি অংশ ১১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার ৮শ’ টাকা ও ইউনিয়ন পরিষদের অংশ হবে ৭৭ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ২শ’ টাকা।
এতে বছরে সরকারের অতিরিক্ত ৫৫ কোটি ৯৪ লাখ ৯০ হাজার ৪শ’ ও ইউনিয়নের প্রয়োজন হবে ৩৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার ২শ’ টাকা প্রয়োজন হবে।
Discussion about this post