ডেস্ক রিপোর্ট
আসন্ন ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২০২৪ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবুর মনোনয়নের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে মাজারগেট হয়ে শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান হয়ে বার কাউন্সিল গেটে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবর প্রায় এক হাজার পাঁচশ আইনজীবীর সই সংবলিত স্মারকলিপি দেন আইনজীবীরা।
এদিকে ঢাকা বারে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা বারে কয়েকশ বিএনপি সমর্থক আইনজীবী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বার ইউনিটের নেতৃত্বে বিক্ষোভ করে বার কাউন্সিলে যান আইনজীবীরা। বার কাউন্সিলের সচিব ড. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার আইনজীবীদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, ইকবাল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ মিয়া আলম, হযরত আলী, আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী মোহাম্মদ আলী, মনির হোসেন, মো. আক্তারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বারের ট্রেজারার মো. কামাল হোসেন, সাবেক ট্রেজারার রাগীব রউফ চৌধুরী, সাবেক সহ-সম্পাদক মোরশেদ আল মামুন লিটন, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান সহ-সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান খান, সগীর হোসেন লিয়ন, জহিরুল ইসলাম সুমন, সৈয়দ মো. তাজরুল হোসেন, মাহফুজুর রহমান মিলন, শহিদুল ইসলাম সপু, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, কে আর খান পাঠান, সালমা সুলতানা, মাসুদ রানা, মো: মাকসুদ উল্লাহ, এ কে এম খলিলুল্লাহ কাসেম মু. কাইয়ুম প্রমুখ।
প্রায় এক হাজার পাঁচশ আইনজীবীর স্মারকলিপিতে বলা হয়, নিম্ন সই কারীরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির নিয়মিত সদস্য। ঢাকা আইনজীবী সমিতি বিশ্বের সর্ববৃহৎ আইনজীবী সমিতি। এ সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। সমিতির গঠনতন্ত্র মতে সমিতি পরিচালিত হয়। গঠনতন্ত্র মোতাবেক সমিতির নির্বাচনকালে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করে কমিশন গঠন করা হয়। সমিতির সদস্যদের সরাসরি ভোটে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে সমিতির নির্বাহী কমিটি নির্বাচিত করা হয়।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, পরিতাপের বিষয় হলো বিগত ৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনে নানারূপ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের বির্তকিত ভূমিকা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির ১৩৪ বছরের অর্জিত গৌরব কোনো মহল বিশেষের কারণে হারিয়ে যাবে তা হতে পারে না। বিশেষ করে ২০২১-২০২২ এবং ২০২২-২৩ সালে সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন ঢাকা মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আব্দুল্লাহ আবু সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও বিতর্কিত হিসেবে প্রমাণ করেছে নিজেকে। নির্বাচনে জালভোট, ব্যালট পেপার ছিনতাই, ব্যালট পেপার বাহির থেকে সিল মেরে আনা ভোট গণনায় কারচুপি ও পরাজিত প্রার্থীদের নির্বাচিত ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মারধর, সিনিয়র আইনজীবীদের শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত, আংশিক ভোট গণনা করে প্রার্থী নির্বাচিত ঘোষণাসহ সব অপকর্মের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল্লাহ আবুসহ তার আস্থাভাজন কমিশনাররা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সভায় অধিকাংশ সভাপতি ও সাধারাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আবুকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ না করার অনুরোধ করেন। তারপরও তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আব্দুল্লাহ আবুর নিয়োগের পর নিয়োগ বাতিলের দাবিতে সচেতন আইনজীবীরা ঢাকা বারে প্রতিদিন প্রতিবাদ মিটিং, মিছিল, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে এবং সচেতন আনইজীবীরা আব্দুল্লাহ আবুর মনোনয়ন বাতিলের দাবিদে আইনজীবীদের গণস্বাক্ষর সংবলিত এক আবেদন গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির কাছে দেন।
Discussion about this post