ডেস্ক রিপোর্ট
সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও ধর্ষণ মামলায় এক আসামিকে জামিন দেওয়ার ঘটনায় আপিল বিভাগে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার। এই বিচারক সম্প্রতি রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের মামলায় রায়ের পর বিচারিক ক্ষমতা হারিয়েছেন।
সোমবার সকালে আপিল বিভাগে উপস্থিত হন তিনি। উপস্থিত হয়ে তিনি আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
২০২০ সালের ১২ মার্চ একটি মামলার ব্যাখ্যা দিতে কামরুন্নাহারকে আদালতে তলব করা হয়। সেসময় তাকে ২ এপ্রিল আপিল বিভাগে হাজির হয়ে আসামিকে জামিন দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
যে মামলায় জামিন নিয়ে কামরুন্নাহারকে তলব করা হয়েছিল, সেই ফৌজদারি আবেদনটি হচ্ছে ‘রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার’। আবেদনটি আজ সোমবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ১ নম্বরে ছিল।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলার সাবেক প্রোগ্রাম প্রডিউসার আসলাম শিকদারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা করা হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আসলামের জামিন স্থগিত করেন। চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিত থাকার পরও গত বছরের ২ মার্চ আসামি আসলামকে জামিন দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক কামরুন্নাহার। এরপর ১২ মার্চ কামরুন্নাহারকে তলব করেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে আসলাম শিকদার খালাস পান। তখন ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ২০ জানুয়ারি মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আসলাম শিকদারকে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
কামরুন্নাহার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক হিসেবে গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন। এ রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ের বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
পরদিন সংক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এ ঘটনায় গত ১৪ নভেম্বর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারকে বিচারিক দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
Discussion about this post