নীলস বাংলাদেশ’র ‘আইনি সহায়তা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম’ এর অংশ হিসেবে নীলস বাংলাদেশের অন্যতম চ্যাপ্টার ‘নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টার’ এর উদ্যোগে শনিবার (১২ মে ‘১৮) অপর্নাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ’ এর ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীর ৪০০ জনের অধিক ছাত্রীর অংশগ্রহণে “লিগ্যাল এওয়ারন্যাস প্রোগ্রাম” সম্পন্ন হয়েছে।
সাধারণ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইন ও অধিকার বিষয়ক সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে আইনের প্রতি আস্থাশীল এবং সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মানের লক্ষ্যে নীলস বাংলাদেশ ‘লিগ্যাল এওয়ারনেস প্রোগ্রাম’ এর কার্যক্রম চালু করে এবং নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপটার এবং ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম চ্যাপটার ‘ এর প্রত্যক্ষ আয়োজনে এ পর্যন্ত চতুর্থ প্রোগ্রাম সফলভাবে আয়োজনে সমর্থ হয়।
‘অপর্ণাচরণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ’র প্রধান শিক্ষিকা মিসেস জারিকা বেগমের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে প্রোগ্রাম উদ্ভোধন ঘোষণা করেন। নীলস বাংলাদেশ’কে আইনি সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম আয়োজন করার উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার সচেতন হবার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সকলকে আইনের প্রতি আস্থাশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার উদাত্ত আহ্বান জানান।
উদ্ভোধনী পর্ব শেষে প্রোগ্রামের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। চারজন বক্তা বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রথা, ইভটিজিং, দেনমোহর এবং সাইবার অপরাধ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন।
প্রথমেই যৌতুক প্রথা, এই প্রথার সামাজিক কুফল, আইনি প্রতিকার এবং সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন নীলস বাংলাদেশের রেজিস্ট্রেড মেম্বার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এইচ. এম. মাহবুব আল মাহাদি।
দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে দেনমোহর সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন নীলস বাংলাদেশের ট্রেজারার জনাব মোহাম্মদ সাজ্জাদ। তিনি মুসলিম বিবাহের অন্যতম শর্ত এবং নারীদের অধিকার হিসেবে দেনমোহর এর গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন এবং এই অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
তৃতীয় বক্তা হিসেবে ‘ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহ’ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন নীলস বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভেন্টস্) জনাব মোহাম্মদ মামুন। তিনি নারী জীবনের সবচেয়ে বাজে এবং ভয়ানক অভিজ্ঞতা হিসেবে ‘ইভটিজিং’কে চিহ্নিত করে এর সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলেন এবং একজন মেয়ে বা নারীর জীবনে ইভটিজিংয়ের কারণে যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তা আলোকপাত করার পাশাপাশি সকলকে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং আইনের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার পাশাপাশি বাল্যবিবাহের কুফল, প্রতিকার, শাস্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন এবং এটি বন্ধে সামাজিক ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা তৈরির লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
সর্বশেষ বক্তা হিসেবে ‘সাইবার ক্রাইম’ বিষয়ে ছাত্রীদের সচেতনতামূলক ধারণা দেন নীলস বাংলাদেশের কোর-অরগানাইজার আতিকুল ইসলাম শাকিল।
প্রোগ্রাম পরিচালনায় সঞ্চালনা করেন আনিকা রিয়া এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নীলস সিইউ চ্যাপটার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এই প্রোগ্রাম সফলতার মূলে সুচারুরূপে পরিচালনা ও সফলতায় আরোও যারা ছিলেন নীলস বাংলাদেশের ফাহমিদা বাশার প্রেমা, নিলুফার ইয়াসমীন, তানভীর কায়সার অনিন্দ্য, মোহসিনুল ইসলাম সাব্বির, সিনান খান, সাবিত কায়েস রাহাত, মহিমা শাওন , ফাহিমা মজুমদার হিমা ও ফাতিমা জাহরা আহসান রাইসা।
উল্লেখ্য যে, ছাত্রীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়ে অপর্নাচরণ স্কুলের কর্তৃপক্ষ নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপটার টিমকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের আরো একটি আইনগত সচেতনতা বিষয়ক প্রোগ্রাম আয়োজন করার আহবান করেন এবং এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানান।
এছাড়াও অপর্নাচরণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে প্রোগ্রাম সুন্দরভাবে আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় নীলস বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
উল্লেখ্য যে, দ্যা নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস (নীলস)একটি আন্তর্জাতিক, স্বাধীন, অরাজনৈতিক, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা আইন ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত হয়। নীলস ৬টি মহাদেশের ২৬টি দেশে আন্তর্জাতিকভাবে আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, প্রতিযোগিতা, ডেলিগেশান প্রোগ্রাম, রেসিডেন্সিয়াল স্কুল প্রোগ্রাম, আইনি সহায়তামূলক কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করার মাধ্যমে আইন শিক্ষায় অবদান রেখে থাকে। বর্তমানে ‘দ্যা নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস’ বাংলাদেশের ২৫টি পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা রয়েছে
Discussion about this post