স্ত্রী ইসরাত জাহানের মামলায় ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেন আদালত বদলির আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত।
রোববার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে এ আবেদন করেন আল-আমিনের আইনজীবী আব্দুর রহমান। এ মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজল হোসেনের আদালতে বিচারাধীন।
আদালত বদলির আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় আদালত শুনানির জন্য ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করেন। তবে গত ১০ অক্টোবর জাতীয় ক্রিকেট লিগের খুলনা বিভাগ বনাম ঢাকা মেট্রো বিভাগের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় আল-আমিন খুলনা বিভাগের হয়ে ১১ সদস্যের দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ১২ অক্টোবর আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। এজন্য আসামি পক্ষের আইনজীবী সময়ের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন আদালত। বাদীপক্ষকে আপত্তি শুনানি করার জন্য আদেশ দেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, এতে বিচারিক আদালতে মামলাটির বিচার কার্য পরিচালনা করা একান্ত আবশ্যক। অন্যথায় মামলার আসামির অপূরণীয় ক্ষতি হবে। যে কারণে আসামির ধারণা, তিনি ওই আদালতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
এদিন একসঙ্গে বসবাসের অধিকার, মাসিক ভরণপোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবির মামলায় ক্রিকেটার আল-আমিনের দেওয়া লিখিত জবাবের ওপর শুনানির জন্য দিন ঠিক ছিল। এজন্য দুই সন্তান নিয়ে মামলার বাদী ইসরাত জাহান ও বিবাদী আদালতে উপস্থিত হন। তবে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত থেকে মামলাটি বদলির জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে আদালতকে জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী। এজন্য দুই পক্ষ উপস্থিত হলেও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে গ্রহণ করেন। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আসামি আল আমিন আদালতে উপস্থিত হন। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল আমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজি ভার্সনে কেজিতে পড়ালেখা করছে। বেশ কিছুদিন ধরে আল আমিন স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দেন না ও খোঁজও না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন। যোগাযোগও করেন না। গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আল আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন।
ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল আমিন তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়।
মামলায় আরও বলা হয়, আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর যাবত আসামি বাদীর খোঁজ-খবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণপোষণ দাবি করে মামলা করেন। জীবন ধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরণপোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়া বাবদ ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
Discussion about this post