পাত্রী এলেন মেয়ের হাত ধরে

16
VIEWS

বিডি ল নিউজঃ ক্রিকেটার থাকাকালীন সময়ে অধিনায়কের পাশাপাশি ছিলেন প্লেবয়ও। ভারতীয়, অস্ট্রেলিয়ান মেয়েদের প্রথম পছন্দই ছিলেন এই পাকিস্থানি অধিনায়ক। তবে, খেলা ছেড়ে গেলেও আলোচনায় সবসময় উনি থাকবেনই। হয় রাজনীতি নয় নারী সংক্রান্ত কিছু। হুম, এইবার বিয়েই করলেন।

2-1

নিকাহ হয়ে গেল ইমরান-রেহামের।

একটা সময়ের একমাথা ঝাঁকড়া কালো চুলের কয়েক গাছি সাদা হতে শুরু করেছে। লেডি কিলার চেহারাটাতেও সামান্য থাবা বসিয়েছে বয়স। তবু মাখন রঙের শেরওয়ানি আর সাদা পায়জামায় একই রকম অপ্রতিরোধ্য তাঁর আবেদন। জীবনের নতুন শুরুর আবেগে উদ্ভাসিত মুখ দেখে কে বলবে বয়স বাষট্টির কোঠায়! পাশে নববধূও কম যান না। অফ হোয়াইট লেহেঙ্গা আর লাল পাড় ওড়নায় বেগম সৌন্দর্য্যে, গ্ল্যামারে সমানতালে পাল্লা দিলেন ক্রিকেট কিংবদন্তির সঙ্গে।

বৃহস্পতিবার ইসলামাদের বান্নি গালায় নিজের বাড়িতে এ ভাবেই ব্যক্তিগত জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন ইমরান খান। ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক রেহাম খানের সঙ্গে নিকাহটা সেরে ফেলে।

বহু ওঠাপড়ার পর ইদানীং ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ জাঁকিয়ে বসেছে পাক রাজনীতিতে। সবাই যখন ধরেই নিয়েছে, রাজনীতিই ইমরানের সর্বস্ব, তাঁর জীবনে এল নতুন প্রেম। রেহাম খান। একচল্লিশ বছরের রেহাম ব্রিটেনেই বড় হয়েছেন। বিবিসি-র আবহাওয়া অনুষ্ঠানের অ্যাঙ্কর ছিলেন। ইদানীং সে সব ছেড়ে পাকাপাকি পাকিস্তানে। বেশ কিছু চ্যানেলে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের অ্যাঙ্কর এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। খুব দ্রুত তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সমর্থক হয়ে পড়েন। সেই সূত্রেই গত বছরের মে মাসে প্রথম আলাপ ইমরানের সঙ্গে। রেহামের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ক্ষমতায় ইমরান প্রথমে মুগ্ধ হলেন। তার পর প্রেম। দু’জনে বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য নেন ডিসেম্বরে।

ইসলামাবাদে ইমরানের বাড়ির সামনে নবদম্পতি। বৃহস্পতিবার।

মাঝে মাত্র সাত-আট মাস হলেও প্রণয় থেকে পরিণয়ের রাস্তাটা মোটেই মসৃণ হয়নি। গত বছরের অগস্টে ইমরান ঘোষণা করেন, দুর্নীতি ও অপশাসন মুক্ত নতুন পাকিস্তান গড়ার রাজনৈতিক স্বপ্ন পূর্ণ হলেই ব্যক্তিগত জীবনে আবার থিতু হতে চান। ঘোষণায় হইচই পড়ে যায়। উৎসব শুরু করে দেন তাঁর দলীয় কর্মী-সদস্যরা। ফেসবুক আর টুইটারে তরুণীদের প্রেম নিবেদনের হিড়িক পড়ে। আসতে থাকে ঝাঁকে ঝাঁকে বিয়ের প্রস্তাব! তখনও কেউ জানতেন না, বউ ইমরানের ঠিক করাই আছে। রেহামের সঙ্গে সম্পর্কটা নিয়ে প্রথম যখন লেখালেখি শুরু হল, ঘোরতর অস্বীকার করেছিলেন ইমরান। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ইমরানের খুব কাছের একজন খবরটা ফাঁস করে দেওয়ায় আর লুকোননি। উড়ে যান লন্ডন, জীবনের নতুন শুরুর আগে প্রাক্তন স্ত্রী জেমিমা এবং নিজের দুই ছেলেকে সব জানাতে। জেমিমার সবুজ সঙ্কেত পেয়ে তবেই দ্বিতীয় বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করেন।

রমনী-মহলে ইমরানের জনপ্রিয়তা বরাবরই অন্য মাত্রার। একটা সময় ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে এলিজিবল ব্যাচেলর। সেই ইমরান বহু মেয়ের হৃদয় চুরমার করে জেমিমা রহমান খানকে বিয়ে করেন ১৯৯৫ সালে। কিন্তু ব্রিটিশ সুন্দরীর সঙ্গে বিয়েটা ভেঙে যায় ন’বছরের মধ্যে। কিন্তু তখনও দ্বিতীয় ইনিংস বাকি ছিল।

রেহামেরও এটা দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম পক্ষের তিন সন্তান আছে তাঁর। এ দিন মেজ মেয়ের হাত ধরেই বিবাহ-মঞ্চে এলেন। গিয়ে বসলেন আসনে। ইমরান বসলেন অন্য দিকে। মুফতি সঈদ প্রথমে কোরান পাঠ করে ও পরে নিকাহ পড়ে বিয়ে দিলেন। আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন শুধু খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আর বন্ধুরা। নিকাহ পর্ব শেষ হতেই নতুন দম্পতিকে অভিনন্দন জানান তাঁরা। বিয়ের সাক্ষী হয়ে সই করলেন প্রাক্তন পাকিস্তান ক্রিকেটার জাকির খান।

প্রাথমিক ভাবে বিয়েটা ডিসেম্বরেই সারতে চেয়েছিলেন দু’জনে। প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু মাঝে আসে ১৬ ডিসেম্বর। খাইবার পাখতুনখা প্রদেশ যেখানে ক্ষমতায় ইমরানের দল পিটিআই, তারই রাজধানী পেশোয়ারের সেনা-স্কুলে নারকীয় জঙ্গী সন্ত্রাসের বলি হয় দেড়শোর বেশি শিশু। মর্মাহত ইমরান শোকের সেই পরিবেশে বিয়ের কথা ভাবতে পারেননি। পিছিয়ে গিয়েছিল বিয়ে।

এ দিনও নিহত স্কুলপড়ুয়াদের স্মরণে নিকাহ অনুষ্ঠান ছিল অনাড়ম্বর।

 

সূত্রঃ আনন্দবাজার

Next Post

Discussion about this post

নিউজ আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.