ডেস্ক রিপোর্ট
পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে নাইজেরিয়ান নাগরিক আজাহ অ্যানাওচুকওয়া ওনিয়ানুসির জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।হাইকোর্টে পাওয়া তার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জামিনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার। তিনি জানান, মামলায় বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিদেশি নাগরিকের জামিনের মেয়াদ থাকবে। তার পাসপোর্ট বিচারিক (নিম্ন) আদালতে জমা থাকবে।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
ছাত্র ভিসায় দুই বছর আগে বাংলাদেশে আসেন নাইজেরিয়ান নাগরিক আজাহ অ্যানাওচুকওয়া ওনিয়ানুসি। তখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এক পর্যায়ে গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। এর আড়ালে নতুন মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মিথাইল এমফিটামিন) বাণিজ্য শুরু করেন তিনি।
২০১৯ সালের ২৮ জুন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা শাখা) মো. মোসাদ্দেক হোসেন রেজা।
ওই সময় তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নাইজেরিয়ান ড্রাগডিলার আজাহ অ্যানাওচুকওয়ার আইস ব্যবসার কথা জানা যায়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাদক কেনার ফাঁদ পেতে ২৭ জুন রাজধানীর খিলক্ষেতের হোটেল লা মেরিডিয়ানের পাশ থেকে ৫০ গ্রাম আইসসহ তাকে আটক করা হয়। পরে ভাটারা এলাকার বাসা থেকে আরও ৪৭২ গ্রাম আইস জব্দ করা হয়।
উগান্ডা থেকে আইসের চালানটি ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় আসে। নাইজেরিয়ায় অবস্থানকারী তার বাবা ও মা অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি তার মা মারা যাওয়ার পর তিনি দেশে ফেরার চেষ্টায় ছিলেন। সে জন্য তার কাছে থাকা আইস বিক্রির চেষ্টা করে আসছিলেন।
ওই সময় জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তিনি ছাত্র ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। দুই বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এক পর্যায়ে গার্মেন্ট ব্যবসার জন্য তিনি ব্যাংকক, মালয়েশিয়া, ভারত, উগান্ডা, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর যাতায়াত করেছেন। এ ব্যবসাকে সামনে দেখিয়ে আড়ালে তিনি আসলে আইসের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।
পরে তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় হাইকোর্ট ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে জামিন দেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সে আবেদন খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে জামিন দেয়া হয়েছে।
Discussion about this post