পুরুষ কেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ আনতে পারবে না!
সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’, কিন্তু এই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে পুরুষকে নির্যাতনের অপ্রমাণিত অভিযোগের বিপরীতে কোনও সুরক্ষা দেওয়া হয় না। ছেলে শিশুদের যৌন হয়রানির শাস্তি আইনে যুক্ত করা, মিথ্যা মামলার জন্য জরিমানার বিধান করা, শাস্তি প্রদানে সমতা আনতে বিধিমালা সুপারিশের গুঞ্জন অনেকদিন ধরে শোনা গেলেও সেটা কোন পর্যায়ে রয়েছে তাও জানা যাচ্ছে না।নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের সুরক্ষাও বিদ্যমান আইনে থাকা উচিত।
তবে তার আগে সিস্টেমে সমতা আনতে হবে, সিস্টেমকে সংশোধন করতে হবে। গোড়ায় গলদ রেখে অঙ্কের উত্তর মিলছে না বলে মাথা চাপড়ালে অন্তত আর যাই হোক অঙ্ক নির্ভুল হবে না।
পুরুষতন্ত্রের দুর্বলতা, বিদ্যমান আইনে নারী-পুরুষের সমতা বিধান করে পারিবারিক ধর্মীয় আইন বিলুপ্তির পর এক ও অভিন্ন আইন হলে কমবে নারী নির্যাতন, কমবে পুরুষের ওপর আনা মিথ্যা মামলা। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে শুধুমাত্র সচেতনতা, শুধুমাত্র এক পক্ষের সদিচ্ছায় কোনও নির্যাতন, কোনও হয়রানি, কোনও মামলা, কোনও অভিযোগ বন্ধ হবে না।
নারী কেবলই নির্যাতিত হয় আর পুরুষ কেবলই নির্যাতন করে এবং এটাই সত্য এবং এর অন্যথা হলে লজ্জায় ঘৃণায় মরে যেতে হবে এ জাতীয় স্টেরিওটাইপ চিন্তাভাবনা থেকে বেরোতে হবে আমাদের সকলের। মুখ খুলতে হবে যেকোনও ধরনের নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানির বিরুদ্ধে।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কিন্তু একই রকম অভিযোগ কোন পুরুষ আনতে পারবেন না, বাংলাদেশের আইনে সেই সুযোগ নেই।ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন সংশোধন হয়েছে।
বিবাহিত স্ত্রীর অনিচ্ছাসত্বেও তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করলেও কি সেটা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে? প্রেমিক-প্রেমিকা যদি বিয়ের আগেই পরস্পরের সম্মতিতে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে সেটা কী? সেই প্রেমিকা যদি হন অপ্রাপ্তবয়স্ক? বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ-ই বা কাকে বলা হচ্ছে?
যদি কোন পুরুষ ১৬ বছরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি নিয়েও শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করেন, সেটাও ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী। আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে দায়ী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
পুরুষদের ক্ষেত্রে আইন নিরুপায়:
পুরুষরা নির্যাতিত হলে লজ্জায় মুখ খোলেন না। পুরুষ ‘উঁচু জাত’, তার ওপর নির্যাতন অত্যন্ত লজ্জাজনক। জানাজানি হলে সম্মান নষ্ট হবে, পুরুষের দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। এটিই হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব। অত্যাচার যে কেউ করতে পারে এবং অত্যাচারী যে কেউ হতে পারে। এই সত্যকে মেনে নিলে অনর্থক দম্ভ, গৌরব আর লজ্জা নিয়ে কাউকেই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করতে হতো না।
নারীকে সুরক্ষা দিতে গিয়ে অনেকটাই কোণঠাসা করা হয় পুরুষকে। যেহেতু বাংলাদেশের আইনে ধর্মীয় আইনও আছে, উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনে নারীকে পুরুষের চেয়ে খাটো ও দুর্বল করে পুরুষের ওপর কয়েক টন ভারি বোঝা চাপানো হয়েছে এবং নিজের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে পুরুষও সেসব আইনকে মাথায় করে রাখতেই চান, বাধ্য হয়ে তারা এখন এসব আইনের বিরোধিতা করছেন।
প্রমাণিত যে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যেসব মামলা করা হয় তার ৮০ শতাংশ মামলাই মিথ্যা। যৌতুক, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও এর আড়ালে রয়েছে অন্য ধরনের বিরোধ। নারী ও শিশুদের নির্যাতন থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে এ আইন প্রণীত হলেও বর্তমানে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবেই এর বহুল ব্যবহার। খোদ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বিভিন্ন মামলায় আদালতের দেওয়া পর্যবেক্ষণ থেকে এমন তথ্য দেখা গেছে।
জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতা, পারিবারিক কলহ, দখলদারিত্বসহ নানারকম সামাজিক অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপর পক্ষকে হেনস্তার উদ্দেশ্যে নিজের পরিবারের বা বাইরের যে কোনও নারীকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয় বিরোধীপক্ষকে।
জাতীয় একটি দৈনিকের প্রকাশিত কয়েকটি লাইন:-
‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারক তাঁর নিবন্ধে বলেন, এই আইনে দায়ের করা মামলার ৮০ শতাংশই যৌতুক-সংক্রান্ত। এর মধ্যে কেবল যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে সাধারণ জখম করা কিংবা গুরুতর জখম করা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে যৌতুকের দাবিতে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটানো মামলার সংখ্যা ৫ শতাংশের কম।
তিনি বলেন, তাহলে প্রশ্ন আসে, বাকি মামলাগুলো কি মিথ্যা? এর জবাবে বলা যায়, শুধু যৌতুকের দাবিতে মারধর করে সাধারণ জখম হওয়ার মামলার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হলেও এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে যৌতুকের জন্য মারপিট করার উপাদান অনেক ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। তবে এই মামলাগুলো একেবারেই মিথ্যা নয়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কারণে মতের অমিল হলে কিংবা তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া না থাকার কারণে বনিবনা না হলে কিংবা স্বামীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে স্ত্রীর মতামতের পার্থক্যের কারণে পারিবারিক জীবন অশান্তিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্ত্রী কোনো উপায়ন্তর না দেখে এবং এ-সংক্রান্ত কোনো ফোরাম না পেয়ে বাধ্য হয়ে দ্রুত প্রতিকার লাভের আশায় স্বামীকে এবং তাঁর নিকটাত্মীয়দের আসামি করে এই আইনের ১১(গ) ধারার বিধান অনুযায়ী মামলা দায়ের করে থাকেন।এছাড়াও রয়েছে দেনমোহরের মামলা, খোরপোশের মামলা, হয়রানির মামলা ইত্যাদি।
তবে এসব মামলার লুপহোলগুলোও পুরুষতন্ত্রেরই প্রতিষ্ঠা করা।তালাক হয়ে যাওয়ার পর নাবালক অবস্থায় সন্তান মায়ের কাছে থেকে, বড় হওয়ামাত্রই অভিভাবকত্বের দড়ি বাবার হাতে চলে যাওয়ায় অনেক মা জিদ থেকে খোরপোশের মামলা করেন। মামলা তো করেনই, সন্তানের সঙ্গে বাবার দেখা করাকেও নিষিদ্ধ করে দেন। এখন অভিভাবকত্ব আইন বা খোরপোশ নিয়ে সমতা নিশ্চিত হয় এমন আইন না থাকলে শুধুমাত্র নারীদের দোষারোপ করেও কোনও ভালো ফল আসবে বলে মনে হয় না।
কিন্তু যেসব নারী স্বাবলম্বী, নিজের প্রয়োজনীয় উপার্জন নিজেই করেন, কিন্তু পুরুষ সঙ্গীকে হেনস্তার জন্যই শুধুমাত্র ‘নারী নির্যাতন দমন আইন-২০০০’-এর আশ্রয় নেন, তাদের জন্য বাংলাদেশে বিদ্যমান কোনও আইন নেই। তাহলে আইনের যাঁতাকলে পিষ্ট পুরুষ শুধুমাত্র পুরুষ হওয়ার অপরাধে অপ্রমাণিত মামলার ঘানি কেন টানবেন?
আইনি ব্যাখ্যা:
১৬ বছরের কম বয়েসীর সম্মতি গ্রহণযোগ্য নয় ।বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ১৬ বা তার কম বছর বয়সী ছেলে ও মেয়ে উভয়কে।
মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্টের গবেষণা বিশেষজ্ঞ তাকবির হুদার মতে, এই সংজ্ঞায় শিশুকে ভুক্তভোগী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই বয়সে মৌখিক বা লিখিত কোন সম্মতি দেয়ার মতো ক্ষমতা শিশুর গড়ে ওঠে না।তাই এই বয়সী কেউ যদি যৌন সম্পর্কে সম্মতি দিয়েও থাকে সেটা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে না।
ফলে যদি কোন পুরুষ ১৬ বছরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি নিয়েও শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করেন, সেটাও ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী। আর সম্মতি ছাড়া হলে তো কথাই নেই। সেটা বয়স নির্বিশেষে ধর্ষণ।
আবার আইন অনুযায়ী কোন অবিবাহিত নারী আদালতে এমন অভিযোগও আনতে পারেন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছে, যেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করবে বাংলাদেশের আদালত।
এমনকি সেখানে অভিযোগকারীর বয়স ষোলর বেশি হলেও আইনের দৃষ্টিতে ছাড় নেই।একই আইনে ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে কিংবা প্রতারণার মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাও ধর্ষণ।
আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে দায়ী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
কিন্তু শিশু আইনে শিশুর সংজ্ঞায় বয়সের সীমা রাখা হয়েছে ১৮ বছর বা তার কম।সেক্ষেত্রে অপরাধীর ক্ষেত্রে এই বয়স প্রাধান্য পাচ্ছে। ভুক্তভোগীর বয়স এখানে মুখ্য নয় বলে জানিয়েছেন মি. হুদা।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির বয়স যদি ১৮ বা তার কম থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হলেও সেটার বিচার হবে শিশু আইনে।
অন্যদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা সত্ত্বেও ভুক্তভোগী যদি বেঁচে থাকেন এবং তার বয়স যদি ১৮ বছরের নীচে থাকে তাহলে তার শিশু আইনের আওতায় শিশু আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার সুযোগ আছে।তবে বিচার হবে নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইন অনুসারেই।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ:
বাংলাদেশে অনেক মামলাই হয়, যেখানে অভিযোগ করা হয়, ভুক্তভোগীকে ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ ধর্ষণ করা হয়েছে।নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে যেহেতু বলা আছে, যদি প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক করা হয়, তাহলে সেটা ধর্ষণ হিসেবে দেখা হবে।
এখন বিয়ের প্রলোভন দেখানোর বিষয়টি আইনানুযায়ী প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায়ের মধ্যে পড়লেও আদালতে অনেক সময় সেটা নাও টিকতে পারে।এটা নির্ভর করে কতদিন ধরে বিয়ের আশ্বাস দেয়া হয়েছে, সম্পর্কের গভীরতা কেমন ছিল, লিখিতভাবে বিবাহিত না থাকলেও ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে করেছিলেন কিনা, কোন সাক্ষী আছেন কিনা সেগুলোর ওপরেও নির্ভর করে বলে জানান তাকবির হুদা।
কিন্তু একই রকম অভিযোগ কোন পুরুষ আনতে পারবেন না, বাংলাদেশের আইনে সেই সুযোগ নেই।ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন সংশোধন হয়েছে।
বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বা ম্যারিটাল রেপ । বিয়ে করা স্ত্রীর সাথে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করাকেও পৃথিবীর কোন কোন দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এটা শাস্তিযোগ্য। এই ধরণের যৌন সহিংসতাকে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ বা ম্যারিটাল রেপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
স্বামীর হাতে ধর্ষণ: বাংলাদেশে এক নারীর অভিজ্ঞতা:
বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণ: সামাজিক মাধ্যমের মন্তব্য।অর্থাৎ বিবাহিত স্ত্রীর সাথে তার অনিচ্ছায় বা জোরপূর্ব শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করলেও সেটা যৌন সহিংসতা বা যৌন অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
তবে বিবাহিত স্ত্রীর বয়স যদি ১৩ বছরের কম হয়, এবং তার স্বামী যদি জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করেন তাহলে ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারেন।
সেক্ষেত্রে শাস্তি শুধুমাত্র অর্থদণ্ড বা সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লাস্টের গবেষণা বিশেষজ্ঞ তাকবীর হুদা।
স্ত্রীর বয়স যদি ১৩ বছর বা তার বেশি হয় তাহলে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের ফৌজদারি মামলা দায়েরের কোন সুযোগ নেই।সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পারিবারিক সহিংসতা আইনের অধীনে যৌন সহিংসতার মামলা করলে কিছু প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে।
শুধু দেওয়ানি আদালতে প্রতিকার পাওয়া যাবে অর্থাৎ আদালত স্বামীর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ, ভরণপোষণের আদেশ দিতে পারে।তবে অভিযুক্ত স্বামী এসব আদেশ লঙ্ঘন করলে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে।
বাংলাদেশ ছাড়া আরও ৬টি দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যোগ করা হয়।
এর ফলে বাংলাদেশে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণ, ধর্ষণ জনিত কারণে মৃত্যুর শাস্তি প্রসঙ্গে ৯(১) ধারায় এতদিন ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
তবে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর যদি মৃত্যু হয় বা গণধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হয় বা আহত হন, তাহলেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল।
সেই সঙ্গে উভয় ক্ষেত্রেই ন্যূনতম এক লক্ষ টাকা করে অর্থ দণ্ডের বিধান ছিল।সেই আইনে পরিবর্তন এনে ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
এর ফলে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেয়া সপ্তম দেশ হল বাংলাদেশ।নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণ বা ধর্ষণ-পরবর্তী অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলেও একই শাস্তি হবে।
যদি কোন ব্যক্তি তার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শ্লীলতাহানি করেন তাহলে এটি যৌন নিপীড়ন বলে বিবেচিত হবে।এজন্য ওই ব্যক্তির অনধিক ১০ বছর এবং ন্যূনতম তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা হবে।
এছাড়া পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে যদি কোন নারী ধর্ষণের শিকার হন, তাহলে যাদের হেফাজতে থাকাকালীন ওই ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, তিনি বা তারা প্রত্যেকে হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, সর্বোচ্চ ১০ বছর কিন্তু ন্যূনতম পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং ন্যূনতম ১০,০০০ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
তবে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কার্যকর করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।তাদের অভিমত: “চরম শাস্তি সহিংসতাকে অব্যাহত রাখে, তা প্রতিরোধ করে না।”
Discussion about this post