নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনে বাধা ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। বুধবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেন তারা।
মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সাবেক সভাপতি এবং সম্পাদকসহ হাজারো আইনজীবী অংশ নেন।
মানববন্ধনে আইনজীবীরা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশরই জন্ম হতো না। আজ স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সেই জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে। এসব মৌলবাদী জঙ্গিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
তারা বলেন স্ট্যাচু অব বাংলাদেশ প্রায় দেড়শ বছর ধরে আমেরিকার সাম্য আর মুক্তির প্রতীকি হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি। আমেরিকার স্বাধীনতা উপলক্ষে ফ্রান্সের জনগণের পক্ষ থেকে ভাস্কর্যটি জনগণকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক , মুক্তির দিশারি। তিনিই ছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান কাণ্ডারি।। তাঁর ডাকেই আমরা যুদ্ধে গেছি। তাঁর নামেই আমরা যুদ্ধ করেছি। স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের এক মহান নায়ক তিনি।
বাঙালি জাতীয়তাবাদের শ্রেষ্ঠতম প্রবক্তা। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ও সংগ্রাম তিনি নিজের চেতনায় লালন করেছেন। তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরােধী জাতীয় আন্দোলনের মূর্ত প্রতীক। তিনিই আমাদের শিরা-উপশিরায় জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্রকে সঞ্চারিত করেছেন।
অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদের এক আপসহীন সংগ্রামী নেতা তিনি। আমাদের বিস্মৃত জাতিসত্তাকে তিনি জাগ্রত করেছেন। আমাদের উদদ্ধ করেছেন মহাশ স্বাধীনতার সংগ্রামে, মুক্তির সংগ্রামে। বঙ্গবন্ধুর জীবন তাই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থে অভিন্ন ও একাত্ম। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও আমাদের স্বাধীনতা একই সূত্রে গাঁথা। ৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এ দেশের আপামর জনসাধারণ শপথ নিরোইলএ দেশকে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোষর রাজাকার, আল বদর, আল শামসদের হাত থেকে মুক্ত করার। সুতরাং ৭১ এর শপথ ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নতুন একটি দেশের শপথ। অথচ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হমম ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে স্বপরিবারে নিহত হতে হয়। সেদিন তিনি ছাড়াও ঘাতকের বুলেটে নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা ।
এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনসহ নিহত হন আরাে ১৬ জন এমন একজন মানুষের ভাস্কর্য নির্মাণ সময়ের দাবী।।

বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া স্বাধীন দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে তাঁর ভাস্কর্য থাকবে না তা কিছুতেই হতে পারে না। সােহরাওয়ার্দি উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ২০০ ফিট উচ্চতার একটি কনক্রিটের ভাস্কর্য নির্মাণ ও ৬৪ টি জেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করতে হবে। প্রয়ােজন হলে বিদেশী কোন ভাষ্কর্য নিমণি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করতে হবে। ভাস্কর্যটির নাম হবে স্টাচু অব বাংলাদেশ।
আমাদের সাম্য ও মুক্তির প্রতীক হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। আমাদের মজিব প্রতীক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের প্রতি আঘাত মানে আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি আঘাত, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আঘাত। অনতিবিলম্বে মুজিব বর্ষে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০ তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর ভাকর্য নির্মাণ করতে হবে। যে ভাস্কর্য চাঁদে গিয়ে পৃথিবীর পানে উঁকি দিলে স্পষ্ট দেখা যাবে।
Discussion about this post