অ্যাটর্নি জেনারেল হল বাংলাদেশ সরকারের প্রধান ও মুখ্য আইন পরামর্শক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে সরকারের প্রাথমিক আইনজীবী। অ্যাটর্নি জেনারেল সাধারণত সম্মানিত জেষ্ঠ আইনানুজ্ঞদের মধ্য থেকে শাসিত সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হন। বাংলাদেশের বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল তার পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হন। অ্যাটর্নি জেনারেলকে কিছু সংখ্যক যুগ্ম অ্যাটর্নি জেনারেল, উপ অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সহায়তা করেন।
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলদের তালিকা ও মেয়াদকালঃ-
(১) এম. এইচ. খন্দকার
এম. এইচ. খন্দকার ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল। কর্মজীবনে তিনি প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান এম. এইচ. খন্দকার বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল থাকাকালীন তার শিক্ষানবিশ ছিলেন। এম. এইচ. খন্দকারের ছেলে এ, জে, মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশের দ্বাদশ অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ২১-০১-১৯৭২ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ১৭-১২-১৯৭২ ইং ।
(২) ফকির শাহাবুদ্দিন আহমেদ
ফকির শাহাবুদ্দীন (জন্ম: ১৯২৪ – মৃত্যু: ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৯) বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ছিলেন। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগুটিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ও ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৭২ সালে গঠিত খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন ও বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। সংবিধানের বিধি মোতাবেক ১৯৭৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম এটর্নি জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন।
প্রারম্ভিক জীবন
মূল নিবন্ধ: বাংলা ভাষা আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান ডিগ্রীর পাশাপাশি স্নাতকোত্তর ও এল.এল.বি ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহান ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় এক মাসের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। এর পূর্বদিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সলিমুল্লাহ হলে তার সভাপতিত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
১৯৫৫ সালে হাইকোর্টে ও ১৯৫৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে আইন ব্যবসায় যোগদান করেন। গণতন্ত্রের মানসপুত্র হিসেবে পরিচিত হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর জুনিয়র হিসেবে প্রায় ছয় বছর আইন ব্যবসা সম্পাদন করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান বার কাউন্সিলের সদস্যরূপে নির্বাচিত হন।
রাজনৈতিক জীবন
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০ তারিখে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে কাপাসিয়া এলাকা থেকে অংশগ্রহণ করেন ও সদস্যরূপে নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। মুজিবনগর সরকারের বিশেষ প্রতিনিধিরূপে শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, জাপান, হংকং, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফর করেন।
এ সফর ছিল মূলতঃ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জনমত গঠন করা। সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ সালে জাতিসংঘে প্রেরিত মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য সচিব ছিলেন তিনি।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১৮-১২-১৯৭২ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ২১-০৩-১৯৭৬ইং ।
(৩) ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ
ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ( জন্ম:- ১৮ জানুয়ারি ১৯৩২ – মৃত্যু:- ১২ জুলাই ২০০৩) তিনি হলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী আইনজ্ঞ এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
তিনি সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন যারা দুটি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন । তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় এটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ‘জাতির অভিভাবক’ নামে পরিচিত ছিলেন এবং সব সময় রাজনৈতিক পরিচিতি এবং সম্পৃক্ততা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি
সৈয়দ ইশতিয়াক ১৯৩২ সালের ১৮ জানুয়ারি অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ জাফর আহমেদ দিনাজপুরের (পশ্চিমবঙ্গ) হিলির জমিদার ও ব্যবসায়ী ছিলেন।
শিক্ষাজীবন
ইশতিয়াক হিলির রামনাথ ইংরেজি হাইস্কুলে ও পরে কলকাতা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর পরিবারের সাথে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন ও ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৪ সালে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন।
পরবর্তীতে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে বৃটেন যান এবং ১৯৫৮ সালে সেখানকার লিংকনস ইন থেকে বার-এট-ল এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস্ থেকে অর্থনীতিতে এম.এসসি. ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবন
১৯৬০ সাল থেকে আমৃত্যু আইন পেশায় নিয়োজিত থাকা ব্যারিস্টার ইশতিয়াক ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রের খন্ডকালীন অধ্যাপক, ১৯৭২ সালে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এবং ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তৃতীয় এটর্নি জেনারেল ছিলেন।
তিনি বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ৩০ মার্চ হতে ২৩ জুন পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ে এবং বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ১৬ জুলাই হতে ১০ অন্টোবর পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।
সম্মাননা
তার নামে আইন সাংবাদিকতায় পদক চালু করা হয়েছে, যাতে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দু’টি করে মোট চারটি পদক দেয়া হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ১৯৫৫ সালের জুনে সুফিয়া আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুফিয়া আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক।
তাদের দুই সন্তান, পুত্র সৈয়দ রিফাত আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক এবং কন্যা রাইনা আহমেদ একজন চিকিৎসক।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ২২-০৩-১৯৭৬ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ০৬-০৫-১৯৭৬ ইং ।
(৪) খন্দকার আবু বকর
খন্দকার আবু বকর একজন বাংলাদেশী আইনজীবী যিনি ১০ মে ১৯৭৬ থেকে ১৩ মার্চ ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
কর্মজীবন
খন্দকার আবু বকর ১১ মে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৩ মার্চ ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৮ বছর ১০ মাস ২ দিন দায়িত্বপালন করেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১০-০৫-১৯৭৬ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ১৩-০৩-১৯৮৫ ইং ।
(৫) এম. নুুুুুুরুল্লাহ
এম. নুুুুুুরুল্লাহ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী যিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। কর্মজীবনে
এম. নুুুুুুরুল্লাহ প্রথম বার ১৪ মার্চ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান এবং ৬ এপ্রিল ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। এর পর ২৬ জুলাই ১৯৯৫ সাল থেকে ২৬ জুন ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ১৪-০৩-১৯৮৬ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ০৬-০৪-১৯৯০ ইং ।
(৬) ব্যারিস্টার রফিক-উল হক
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ( জন্ম:- ২ নভেম্বর ১৯৩৫ – মৃত্যু:- ২৪ অক্টোবর ২০২০) তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশী আইনজীবী এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল । ১৯৬০ সালে তিনি আইন পেশায় আসেন। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রারম্ভিক ও শিক্ষা জীবন
রফিক-উল হক ২ নভেম্বর ১৯৩৩ সালে কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুমিন-উল হক ছিলেন চিকিৎসক ও মা নূরজাহান বেগম। তার বাল্যকাল কাটে কলকাতায়।
কলকাতা চেতলা বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ১৯৫৮ সালে এলএলবি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্য থেকে ব্যারিস্টার (বার-এট-ল) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে লিংকনস ইন-এ ডাক পান।
কর্মজীবন
রফিকুল ১৯৬০ সালে কলকাতা উচ্চ আদালতে আইনজীবী হিসেবে বারের সদস্য হন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা উচ্চ আদালতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেট হিসাবে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে তিনি আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি তাঁর কর্মজীবনকালে হাজারো মামলায় অংশ নিয়েছেন এবং তাঁর প্রায় ৫০০টি মামলা আইন-সাহিত্যে প্রকাশিত হয়েছে।
কর্পোরেট এবং কোম্পানি আইনে তাঁর বিশেষত পারদর্শিতা ছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বিভিন্ন খসড়া আইন তৈরিতে কাজ করেন, যার মধ্যে একটি আইন ছিল ১৯৭২ জাতীয়করণ আদেশ।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে (১৯৭৭-৮১) তিনি এই আদেশ বাতিলের জন্য খসড়া আইন তৈরিতে কাজ করেছিলেন।
তিনি ১৯৭৫-১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ট্রাইব্যুনালে এবং বার কাউন্সিলের নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে কোম্পানী আইন সংস্কার কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার এবং বেসরকারী বিনিয়োগ সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি বাংলাদেশের শেয়ার বাজার উন্নয়ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি বার কাউন্সিল অব বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এশিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চেম্বার অফ কমার্স এবং আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতের সদস্য ছিলেন।
২০০৬-০৮ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কটের সময় তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অভিযোগ আনা হয়। ওইসময় তিনি তাদের দু’জনের পরামর্শক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড
রফিক-উল হক ১৯৮৬ সালে ক্যান্সার থেকে বেঁচে যান এবং এরপর থেকে দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতিতে অবদান রাখতে শুরু করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে সুবর্ণা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাকরণে সহায়তা করেন এবং কালিয়াকৈতে নতুন ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন।
তিনি বারডেম জেনারেল হাসপাতালের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের, আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের নুরজাহান ওয়ার্ডের এবং আদ-দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাপতি ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
রফিক-উল হক ১৯৬০ সালে ডাক্তার ফরিদা হককে বিয়ে করেন। ২০১১ সালে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এই দম্পতির এক ছেলে রয়েছে, নাম ফাহিম-উল হক, যিনি কানাডায় বসবাস করেন ও পেশায় একজন ব্যারিস্টার।
তার স্ত্রীর মৃত্যুর পরে এবং জানুয়ারী ২০১৭ সালে তার বাম পায়ে অস্ত্রোপচারের পরে, তিনি তার ঢাকার বাড়ি ছেড়ে যেতে ক্রমশ অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ৮৪ বছর বয়সে আদ-দ্বীন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি রক্তাল্পতা এবং মূত্রথলিসহ গুরুতর জটিলতায় ভুগছিলেন।
পুরস্কার
খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ স্বর্ণপদক (২০১৭) । মার্কিন সেনেট কর্তৃক কলকাতার মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক। ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল কর্তৃক প্রশংসা পুরস্কার। মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর পৃষ্ঠপোষক পুরস্কার । স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি অবদানের জন্য এমসিসিআই কর্তৃক এবং ঢাকা দক্ষিণ লায়ন্স ক্লাবের রোটারি ক্লাব কর্তৃক পুরস্কার।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ০৭-০৪-১৯৯০ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ১৭-১২-১৯৯০ইং ।
(৭) আমিনুল হক
আমিনুল হক ( জন্ম:- ১৯ এপ্রিল ১৯৩১ – মৃত্যু:- ১৩ জুলাই ১৯৯৫) তিনি একজন বাংলাদেশী আইনজীবী ছিলেন। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্য ফরিদা আক্তারের (মৃত্যু ২০০৭) স্বামী। তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত এবং ১৯৬৯ সালে ঢাকা সেনানিবাসে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর হাতে নিহত সার্জেন্ট জহুরুল হকের বড় ভাই ছিলেন।
পেশা
হক আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, যা বেসরকারী, নাগরিক অধিকার এবং আইনজীবী সহায়তা সংস্থা ছিল।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১৮-১২-১৯৯০ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ১৩-০৭-১৯৯৫ইং ।
(৮) এম. নুুুুুুরুল্লাহ
এম. নুুুুুুরুল্লাহ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী যিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
কর্মজীবন
এম. নুুুুুুরুল্লাহ প্রথম বার ১৪ মার্চ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান এবং ৬ এপ্রিল ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। এর পর ২৬ জুলাই ১৯৯৫ সাল থেকে ২৬ জুন ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ২৬-০৭-১৯৯৫ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ২৬-০৬-১৯৯৬ ইং ।
(৯) কাজী শহীদুন নবী
কাজী শহীদুন নবী (কেএস নবী নামে পরিচিত) একজন বাংলাদেশী আইনজীবী যিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
কাজী শহীদুন নবীর জন্ম তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার ষোলঘর এলাকার কাজী বাড়িতে।
পেশা
কাজী শহীদুন নবীকে ১৯৬১ সালে লন্ডনের লিংকন ইন বারে থেকে ডেকে আনা হয়েছিল। তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল ল’ কলেজের অনুষদ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৬৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে যোগ দেন।
১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মুন্সীগঞ্জ -১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন এবং একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর কাছে হেরেছিলেন। ১৯৯৬-১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ সালে তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যার সাথে জড়িত, বিদেশে সরকারী গোপনতথ্য এবং দলিল সরবরাহ ও নারী পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই পুলিশ স্পেশাল ব্রাঞ্চ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পরে তার আইনজীবী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
কাজী শহীদুন নবী বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রাক্তন স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর কাজিনের ছেলে। [৬] তার বড় ছেলে কাজী রেহান নবী।
মৃত্যু
৮ জুলাই ২০১৮ সালে তিনি মারা যান। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ৩১-০৭-১৯৯৬ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ০৩-০৫-১৯৯৮ ইং ।
(১০) মাহমুদুল ইসলাম
মাহমুদুল ইসলাম ( জন্ম:- ২৪ জুলাই ১৯৩৬ – মৃত্যু:- ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
মাহমুদুল ইসলামের জন্ম ১৯৩৬ সালে রংপুরে। তার পিতা আইনজীবী আজিজুল ইসলাম, মাতা জাহানারা ইসলাম। তিনি কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৫৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে এলএলএম ডিগ্রি লাভ করেন।
পেশা
মাহমুদুল ইসলাম ১৯৬১ সালে রংপুর বারে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন পরে ১৯৬৭ সালে হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হন। তিনি আইনজীবী বীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী এবং তারপরে সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের সাথে জুনিয়র হিসাবে কাজ করেছিলেন।
১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মাহমুদুল ইসলাম “বাংলাদেশের সাংবিধানিক আইন”, “নাগরিক কার্যবিধির আইন” এবং “সংবিধির বিবরণ এবং দলিল” শিরোনামের বই লিখেছেন।
ব্যক্তিগত জীবন
মাহমুদুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা ইসলাম, দুই ছেলে- আসিফ ইসলাম ও আরিফ ইসলাম।
মৃত্যু
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১৬-০৭-১৯৯৮ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ০৯-১০-২০০১ ইং ।
(১১) এ. এফ. হাসান আরিফ
এ.এফ. হাসান আরিফ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী, বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি, এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পেশা
এ.এফ. হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ সাল থেকে ২৮ এপ্রিল ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতারণামূলক শংসাপত্র ব্যবহার কারী বিএনপি-সমর্থক বাংলাদেশ হাইকোর্টের একজন বিচারকের লাইসেন্স প্রত্যাখ্যান করেন।
তাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আইনজীবীদের সমর্থন করতে ব্যর্থতার কারণে তিনি চার বছর দায়িত্ব পালন করে পদত্যাগ করেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার আইনজীবী ছিলেন।
তিনি ১৯৭০ এর দশকে এ.এফ. হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১৪-১০-২০০১ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ৩০-০৪-২০০৫ ইং ।
(১২) এ, জে, মোহাম্মদ আলী
এ, জে, মোহাম্মদ আলী ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দ্বাদশ অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
পেশা
এ, জে, মোহাম্মদ আলীর বাবা এম. এইচ. খন্দকার ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল। ১৯৮০ সালে তিনি হাইকোর্টে এবং ১৯৮৫ সালে আপিল বিভাগে অনুশীলনের জন্য তালিকাভুক্ত হন। ২৩ অক্টোবর ২০০১ সালে তিনি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
৩০ এপ্রিল ২০০৫ সালে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি ২৪ জানুয়ারী ২০০৭ সালে অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ, জে, মোহাম্মদ আলী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ, জে, মোহাম্মদ আলী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মওদুদ আহমদের আইনজীবীও ছিলেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ৩০-০৪-২০০৫ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ২৪-০১-২০০৭ ইং ।
(১৩) ফিদা এম. কামাল
ফিদা এম. কামাল একজন বাংলাদেশী আইনজীবী এবং বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল।
পেশা
ফিদা এম. কামাল প্রাক্তন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৮ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তিনি সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক বাংলাদেশের সরকারের সাথে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ০৫-০২-২০০৭ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ১৬-০৭-২০০৮ ইং ।
(১৪) সালাহউদ্দিন আহমেদ
সালাহউদ্দিন আহমেদ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী ১৩ এপ্রিল ২০০৮ থেকে ১৩ জানুয়ারী ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে অনুশীলনকারী বিশিষ্ট আইনজীবী। বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে সরকারের সাথে একাধিক মতবিরোধের প্রেক্ষিতে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল পদত্যাগ করার পরে সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
পেশা
জানুয়ারী ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট নতুন সরকার গঠন করার পর তিনি পুরবের রেওয়াজ অনুযায়ী নতুন আইন মন্ত্রীর কাছে পদত্যাগ জমা দিয়ে পদত্যাগ করার পর তার স্থলে মাহবুবে আলমকে নিয়োগ করা হয়।
তিনি ১৯৬৯ সালে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে অর্থনীতিতে বিএসসি পাস করে ১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ১৯৮৪ সালে কলম্বিয়া ল স্কুল থেকে এলএল.এম পাস করেন।
১৯৭০-এর দশকে সালাহউদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়াতেন এবং ডক্টর কামাল হোসেন ও তার সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ২০-০৭-২০০৮ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ১২-০১-২০০৯ইং ।
(১৫) মাহবুবে আলম
মাহবুবে আলম ( জন্ম:- ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ – মৃত্যু:- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০) ছিলেন একজন মনোনীত প্রবীণ পরামর্শক এবং বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ১৩ জানুয়ারী ২০০৯ থেকে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ছিলেন। তিনি এর আগে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে ১৫ নভেম্বর ১৯৯৮ থেকে ৪ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিক্ষা
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মৌছামন্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং পরের বছর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে এমএ পাস করেন। এরপর ১৯৭২ সালে তিনি এল.এল.বি সম্পন্ন করেন।
তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবিধান এবং সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন এবং সংসদীয় প্রতিষ্ঠান এবং পদ্ধতিতে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন।
কর্মজীবন
মাহবুবে আলম আইন বিষয়ে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে অনুশীলন শুরু করেন এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হন। ১৯৯৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন এবং ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন এর আগে ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
মাহবুবে আলমের স্ত্রী বিনতা মাহবুব একজন চিত্রশিল্পী। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে আছে। ছেলে সুমন মাহবুব একজন সাংবাদিক। আর মেয়ে শিশির কণা একজন আইনজীবী।
মৃত্যু
মাহবুবে আলম ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সকালে করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসিইউতে নেয়া হয়। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ১৩-০১-২০০৯ ইং ও দ্বায়িত্ব ত্যাগ ২৭-০৯-২০২০ইং
(১৬) আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন
আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন বাংলাদেশের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
প্রাথমিক জীবন
আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে এলএলবি করেন।
কর্মজীবন
১৯৮৭ সালে তিনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন, ১৯৮৯ সালের ২৮ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন তালিকাভূক্ত আইনজীবী হন। ২০০৩ সালে তিনি আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত আইনজীবী হন।
এ এম আমিন উদ্দিন ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৯ সাল থেকে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি দুই মেয়াদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬-২০০০ পর্যন্ত চার বছর তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, ২০০০ থেকে ২০০১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি উপ-অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
তিনি আফসারী আমিন শিবলিকে বিয়ে করেন এবং তাদের দুই ছেলে আছে, যাদের নাম হল যথাক্রমে রাইয়ান আমিন এবং নাহিয়ান আমিন।
মেয়াদকালঃ- দ্বায়িত্ব গ্রহণ ৮ অক্টোবর ২০২০ ইং হইতে বর্তমান পর্যন্ত।
আরো জানুন বাংলাদেশের সংবিধান কি ও সংবিধান সম্পর্কে বিস্তারিত
লেখকঃ ল ফর ন্যাশনস, ইমেইলঃ lawfornations.abm@gmail.com, মোবাইল: 01842459590
Discussion about this post