নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সবচাইতে সিনিয়র আইনজীবী, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক বিচারপতি জনাব তোফাজ্জেল হোসেন খান তথা টি এইচ খান ইন্তেকাল করেছেন।ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।
তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি পরবর্তীতে আইন ও বিচার, তথ্য ও বেতার, শিক্ষা, ভূমি, প্রশাসন, ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সেসময় দায়িত্ব পালন করেন।
প্রথম জীবনে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন ও আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করেন ।
১৯৪৭ সালে তিনি আইন পেশায় যোগদেন। ১৪ মার্চ ১৯৫১ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। তিনি মার্চ ১৯৬৮ সালে বিচারপতি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টে যোগদান করেন।
বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের পূর্বে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (অ্যাটর্নি জেনারেল) দায়িত্ব পালন করেন।১৯৭৩ সালে থেকে তিনি পুনরায় আইন পেশায় যোগ দেন।তিনি বাংলাদেশ আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১ম বার সভাপতি নির্বাচিত হন ১৯৭৪ সালে।
১৯৯২ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতা গ্রহণ করলে তিনি সুইজারল্যান্ডে হিউম্যান রাইটস কমিশনের মেম্বার ও পরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসঙ্ঘে নিয়োগ পান।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তিনি ২য় বার সভাপতি নির্বাচিত হন ১৯৯৪ সালে। তিনি সাউথ এশিয়া জোনে আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট রুয়ান্ডা ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৫ সালে। আন্তর্জাতিক আদালতে এশিয়া মহাদেশে তিনিই একমাত্র বিচারপতি।
জাতিসঙ্ঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে ১৯ জুন ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বিচার পরিচালনার দায়িত্ব পালনের পর দেশে ফিরে আবারো আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৫ নভেম্বর ১৯৮১ সালে আইন ও বিচার, তথ্য ও বেতার, শিক্ষা, ভূমি, প্রশাসন,ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৪ মার্চ ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক আইন জারি হলে আবারও আইন পেশায় ফিরে যান তিনি।
এরশাদের বিরোধিতা করায় ১৯৮৬ সালে গ্রেফতার হন তিনি।১৯৯২ সালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর হতে ২০১১ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মরহুম জনাব টি এইচ খানের স্ত্রী বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম যিনি ৭৯ বছর বয়সে ১৭ মে ২০১১ সালে মারা যান।ওনাদের তিন ছেলে সন্তান আফজাল এইচ খান , ফজলে এলাহী খান এবং ফায়সাল এইচ খান।
বড় ছেলে জনাব আফজাল এইচ খান (সাংবাদিক ও ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।)ছোট ছেলে জনাব ফয়সাল এইচ খান আইন পেশায় নিযুক্ত আছেন।মেজো ছেলে ফজলে এলাহী খান চাকরি করছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।একমাত্র মেয়ে ডা. মাহমুদা ফাতেমা খান ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক।
Discussion about this post