ডেস্ক রিপোর্ট
বিচারপ্রার্থী জনগণের আইনের আশ্রয় লাভ ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা নিরসনে নগর আদালত আইন প্রণয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।রেজিস্টার ডাকযোগে ও ই-মেইলে রোববার (৬ ডিসেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন এই নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী নিজে।
নোটিশে বলা হয়, আইনের আশ্রয় পাওয়া ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার পাওয়ার অধিকার প্রত্যেকটা মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধান স্বীকৃত, যা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব।নোটিশে আরও বলা হয়, মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশের বিচারব্যবস্থায় ২০০৬ সালের গ্রাম আদালত আইন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিষ্পত্তির জন্য মানুষকে প্রচলিত আইন আদালতের শরণাপন্ন হতে হয় এবং সেখানে পদ্ধতিগত কারণে মানুষকে বছরের পর বছর একটি অত্যন্ত স্পষ্ট বিষয় নিয়েও আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হয় যা মানুষের জন্য অত্যন্ত দুঃসহ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দেখা দেয়।
নোটিশে বলা হয়, এই দীর্ঘসূত্রিতা থেকে পরিত্রাণ পেতে বতর্মান বাস্তবতায় গ্রাম আদালতের আলোকে শহরাঞ্চলের নাগরিকদের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নগর আদালত আইন প্রণয়ন করা একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। নগর আদালত পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে প্রচলিত বিচারব্যবস্থায় আদালতের ওপর চাপ কমবে যার ফলে একদিকে যেমন মানুষ তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি আদালত পাবে যেখানে এটা দ্রুতসময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে অন্যদিকে প্রচলিত বিচারব্যবস্থায় আদালতের ওপর যে চাপ রয়েছে, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা ও জট অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব হবে।
বর্তমান বাস্তবতার আলোকে এবং মানুষের সংবিধান স্বীকৃত যে দ্রুতবিচার পাওয়ার এবং আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার আছে সেই অধিকার বাস্তবায়নের জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রচলিত আদালতের বাইরে গিয়ে গ্রাম আদালত আইনের ন্যায় নগর আদালত আইন প্রণয়ন করা বর্তমানের সময় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।তাই অধিক জনসংখ্যার দেশে এবং বিদ্যমান বিচার কাঠামোর বাস্তবতার নিরিখে মানুষের মৌলিক অধিকার পাওয়ার অধিকার অনেকাংশেই সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচারের অপেক্ষায় থেকে, অনেকে বিচার না পেয়ে নিজেরাই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে সংবিধানের স্বীকৃত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।
নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী বলেন, অনেক সময় দেখা যায় কিছু মৌলিক এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে মানুষকে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয় এবং সুনির্দিষ্ট হওয়ার সত্ত্বেও সেই অধিকার আদায়ের জন্য তাকে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। যেখানে মানুষ দ্রুতবিচার পাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় বিচারপ্রার্থী মানুষের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post