নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে ভাঙা হচ্ছে রাজধানীর হাতিরঝিল লেকে আইন না মেনে গড়ে তোলা পোশাক শিল্প প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির প্রধান কার্যালয় বিজিএমইএ ভবন। ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন লাইনসহ সব ইউটিলিটি সার্ভিস সংযোগ বিচ্ছিন্নের মাধ্যমে এ কাজ শুরু হবে।
আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ তলা ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সকাল ৯টার দিকে বিজিএমইএ ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে রাজউক কর্মকর্তারা। ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজউকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ভবনটি ভাঙতে বিজিএমইএকে দেয়া সময় পার হওয়ার পরই এটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভবনটি ভাঙতে রাজউক সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়া ভবন থেকে মালামাল সরাতে অফিস মালিকদের স্বল্প সময় দেয়া হতে পারে। তারা মালামাল সরালেই আজই ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হবে।
রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, রাজউক বোর্ডের সদস্যগণ, হাতিরঝিল প্রকল্পের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর জেনালের সাঈদ আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী ও পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে বিজিএমইএ আপিল আবেদন করে। ওই আবেদনের শুনানি শেষে ২০১৩ সালে বিজিএমইএকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে ভবন ভাঙার জন্য বলা হয়। এরপর রিভিউ আবেদনটিও খারিজ হয়। পরবর্তীতে আদালতের কাছে সময় চেয়ে বারবার আবেদন করে সংগঠনটি। সবশেষ গত বছরের ৩ এপ্রিল এক বছরের জন্য সময় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
একাধিকবার সময় নিয়েও আদালতের নির্দেশে বিজিএমইএ ব্যর্থ হলে ভবন করার ক্ষেত্রে জায়গা না পাওয়ার অজুহাত দেখায়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৫০ শতাংশ কমমূল্যে উত্তরার ১৭ নং সেক্টরে ১১০ কাঠা জমি দেয়া হয়। আর সেই জমির ওপর ২০১৭ সালে ১৩তলা বিজিএমইএ কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৬তলার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ভবনটির পুরো কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের জুন মাসে। তবে কয়েকটি তলার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় ও হাইকোর্টের নির্দেশের বাধ্যবাধকতায় চলতি মাসেই বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয় উত্তরায় স্থানান্তরিত হয়।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবনটি সরিয়ে নিতে সময় দিয়েছিল আদালত। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে নামছে রাজউক।
Discussion about this post