বিমানের ১৭ কর্মকর্তার জামিন নামুঞ্জুর, আত্মসমর্পণের নির্দেশ: হাইকোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট
ইজিপ্ট এয়ারলাইন্স থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর মডেলের প্লেন লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বাংলাদেশ বিমানের সাবেক ও বর্তমান ১৭ কর্মকর্তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আগাম জামিন চেয়ে করা পৃথক দুটি আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আসিফ হাসান। আসামিপক্ষে ছিলেন এআরএম হাসানুজ্জামান।

দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, পৃথক আবেদনে অন্তত ১৭ জন আগাম জামিন চেয়েছিলেন। আদালত তাদের জামিন না দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন বিমানের ফ্লাইট অপারেশনসের পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রহমান ফুকই, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফি, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী দেবেশ চৌধুরী, এয়ার ওরথিনেস কনসালটেন্ট (সিএএবি) গোলাম সারওয়ার, প্রকৌশলী মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামিম, জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইট পার্সার মো. শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আজাদ রহমান, ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বসুনিয়া, ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক, ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা, চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবাল।

অভিযোগে বলা হয়, মামলার আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে আগে নিজেরা লাভবান হয়ে ও পরে অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ইজিপ্ট এয়ারলাইন্স থেকে দুটি প্লেন লিজ নিয়ে ও পরে রি-ডেলিভারি পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের এক হাজার ১৬১ কোটি টাকার ক্ষতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ১০৯/৪০৯/৪২০ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিশরের ইজিপ্ট এয়ারলাইন্স থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর মডেলের প্লেন দুটি লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রথম বছর শেষেই দুটি এয়ারক্রাফটেরই ইঞ্জিন বিকল হয়। ইঞ্জিনগুলো প্রায় ১২-১৫ বছরের পুরোনো এবং এর উড্ডয়ন যোগ্যতার মেয়াদকাল কম থাকায় পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। প্লেন সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় সেটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা, যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে।