ডেস্ক রিপোর্ট
কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে ঘিরে কাজ করতে গিয়ে নিহত বাংলাদেশি শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে তা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে যদি বাংলাদেশের সাড়ে চারশ শ্রমিকের মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে কেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
রুলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের প্রধান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বাংলাদেশ অফিস, ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টেরিয়র) ও কাতারের শ্রমমন্ত্রীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ ও রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
গত ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অন্তত ৪৫০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি কাজে কাতারে দক্ষিণ এশিয়ার সাড়ে ৬ হাজারের বেশি শ্রমিক মারা গেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ।
গত ১০ বছরে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে সাতটা স্টেডিয়াম তৈরি করে কাতার। এছাড়াও আরও অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। নতুন একটি বিমানবন্দরসহ রাস্তাঘাট ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করা হয়। এত বড় বড় সব স্থাপনা ও উন্নয়নকাজের জন্য প্রচুর জনশক্তির দরকার হয় দেশটির।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের অধিকাংশই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন। কাতারও স্বীকার করেছে, বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
Discussion about this post