ডেস্ক রিপোর্ট
কৃষি ব্যাংকের ১৪৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার তদন্ত চার বছরেও শেষ না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. কামিয়াব-ই-আফতাহী উন নবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৮ নভেম্বর সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।
দুই আসামির জামিন নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে বুধবার (১৭ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জাগো নিউজকে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আজ আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাবিবুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, মামলার এক আসামি কৃষি ব্যাংক বনানী শাখার সাবেক মহাব্যবস্থাপক ও শাখা ব্যবস্থাপক এবিএম আতাউর রহমানের জামিন শুনানির সময় কোর্ট এ আদেশ দেন। কিন্তু তাদের জামিন নিয়ে কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি।
তিনি জানান, এর আগে আসামির জামিন বিষয়ে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট চার সপ্তাহের রুল জারি করেছিলেন। ওই রুলের শুনানিতে এমন আদেশ দেন আদালত।
এজাহারের তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলেন ফিয়াজ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ওয়াহিদুর রহমান। প্রতিষ্ঠানটির বনানী করপোরেট শাখায় একাউন্ট খুলতে পরিচয়দাতা হিসেবে সেসময় সহায়তা করেন ব্যাংকটির মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জুবায়ের মঞ্জুর।
একাউন্ট খোলার দেড় মাস পর ১৪ ডিসেম্বরে ফিয়াজ গ্রুপের তিনটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজ, ফিয়াস ট্রেডিং ও অটো ডিফাইনের নামে ঋণ আবেদন করা হয়। এর ৪ মাস পরে ২০১০ সালের ৭ এপ্রিল বোর্ড সভায় ১৫২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও ঋণের অর্থ ছাড় করা হয় ২০ এপ্রিল। এর মধ্যে কিছু অর্থ পরিশোধ করার পর বর্তমানে ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ১৪৮ কোটি টাকা যার জন্য মামলা করা হয়েছে।
বিবরণে ঋণের বিপরীতে সম্পদ হিসেবে ওয়াহিদুর রহমান বন্ধক রাখেন রাজধানীর খিলগাঁও, হাজারীবাগ, বাইলজুরী, বড় আশুলিয়া ও বাসাইদের ৫টি মৌজার জায়গার দলিল। যার সবগুলোই ছিল নকল (জাল) করা।
ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শাখার দেওয়া প্রস্তাবনাতে যেসব জায়গা ও মর্টগেজের যেসব বিষয় বলা ছিল পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণ (জাল) নকল। পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ও জাল কাগজপত্র সৃজন করে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৯ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. জুলফিকার আলী বনানী থানায় মামলা (নম্বর ২১) দায়ের করেন।
মামলায় কৃষিব্যাংকের বনানী শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জুবায়ের মঞ্জুর, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক এ বি এম আতাউর রহমান, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মনোয়ারা বেগম, বিভাগীয় কার্যালয়ের সাবেক এসপিও প্রকৌশল শহিদুল ইসলাম ও সাবেক এসপিও মো. সানাউল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। তারা কারাগারে রয়েছেন।
Discussion about this post