ডেস্ক রিপোর্ট
রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে ছেলের সামনে শাহীন উদ্দিন (৩৩) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেফতার ইকবাল ও শরীফ দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।শুক্রবার (২৮ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এদিন রিমান্ড শেষে আসামি শরীফ, টিটু ও ইকবালকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর আসামি ইকবাল ও শরীফ স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।
.অপরদিকে আসামি টিটুকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিচারক ইকবাল ও শরীফের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে রোববার (২৩ মে) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদেরকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল তাদের প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৬ মে বিকেলে জমির বিরোধের মীমাংসার কথা বলে শাহীন উদ্দিনকে পল্লবী থানার ডি-ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা আকলিমা বেগমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক শাহীন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। শাহীন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে, সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যান।
এ সময় শাহীনের সাত বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে শাহীনকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে গেলে ঘটনাস্থলেই শাহীনের মৃত্যু হয়।
মামলার প্রধান আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল। অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু। আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা।
আকলিমার অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা শাহীনকে হত্যা করেছে। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।
Discussion about this post