ডেস্ক রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অশোভন বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসহ দলটির চার নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মুসাব্বিরুল ইসলাম এ মামলার আবেদন করেন।গত ২ মার্চ রাজশাহীর মাদরাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ অন্যান্য বিএনপি নেতারা অশোভন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন বলে অভিযোগ ওঠে। তারই প্রেক্ষিতে আজ সকালে রাজশাহী জেলা প্রসাশকের কাছে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আজ সকালে আমাকে রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করে।
গত ২ মার্চ রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় ৪ জন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন তারা ‘জেলা প্রসাশকের কাছে মামলার আবেদন করেছেন রাজশাহী মহানগর আ.লীগের নেতৃবৃন্দ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মোসাব্বিরুল।
মামলায় সাক্ষী হিসেবে আছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সহ-সভাপতি মো. আহসানুল হক পিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার করার বিষয়ে জানতে চাইলে বাদি অ্যাডভোকেট মোসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ‘২ মার্চ বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনে মিজানুর রহমান মিনু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক মেয়র বুলবুল ও বিএনপি নেতা মিলন দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে পরদিনই আমরা এর প্রতিবাদ মিছিল করি এবং সেই সাথে তাদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেই ক্ষমা চাওয়ার জন্য। কিন্তু মিনু ও অন্যান্য নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও সকলের কাছে ক্ষমা না চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করে একটি প্রেস বিবৃতি দেন, যা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমা না চেয়ে উপহাসমূলক প্রেস বিবৃতির দিয়ে তিনি (মিনু) ধূর্ততা করেছেন। তাই মিনুসহ অন্যান্য ৩ নেতার অবৈধ অশালীন বক্তব্যের বিরুদ্ধে আজ রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।’
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা কটূক্তি করে ক্ষমা না চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। উপরন্তু তারা দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন।
তাই রাষ্ট্র ও আইন বিরোধী বক্তব্যের জন্য তাদের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করা হয়েছে। সেখানে আমি এক নম্বর সাক্ষী হিসেবে আছি।’এদিকে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সকালে মহানগর আওয়ামী লীগ আমার কাছে যে দরখাস্তটি করেছে সেটার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে।
দরখাস্তটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক যথাযথভাবে অনুমোদনের জন্য পাঠাব। এরপর উনারা দরখাস্তটি অনুমোদন দিয়ে নির্দেশনা দিলে মামলাটি দায়ের হয়েছে বলে চূড়ান্তভাবে বোঝা যাবে।
Discussion about this post