মিহির মিশকাতঃ আইনের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন দ্যা নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস্ (নীলস্) এর সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি চ্যাপটার গত ৪ঠা মার্চ সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে উক্ত ইউনিভার্সিটির ল এন্ড জাস্টিস বিভাগের সহযোগিতায় এবং অনলাইন ল জার্নাল ‘ফিউচার ল ইনিশিয়েটিভ’- এর পৃষ্ঠপোষকতায় ‘জেনোসাইড এগেইন্স্ট রোহিঙ্গা’ বিষয়ের ওপর পোস্টার প্রেজেন্টেশান প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। দেশের বিভিন্ন পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ১৩টি দল অংশ নেয় উক্ত প্রতিযোগিতায়।
প্রতিযোগিতার কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ১০টায়। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ওপর গণহত্যা চালানোর বিভিন্ন চিত্র এবং তথ্যাদিসমৃদ্ধ নিজ নিজ পোস্টার উপস্থাপন করে এবং গণহত্যা এবং অন্যান্য ঘৃণ্য কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশেষভাবে আমন্ত্রিত অতিথগণ।
প্রতিযোগিতার মূল কার্যক্রম শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব আর্টস এন্ড সোশ্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল হাকিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উক্ত ইউনিভার্সিটির ল এন্ড জাস্টিস বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন নীলস বাংলাদেশ চ্যাপটারের প্রেসিডেন্ট নাসরিন সুলতানা এবং সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি চ্যাপটারের প্রেসিডেন্ট অর্ণি চৌধুরী। এছাড়াও ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’-এর গবেষণা সহযোগী নওরিন রহিম এবং অনলাইন ল জার্নাল ‘ফিউচার ল ইনিশিয়েটিভ’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শেখ মাহদী বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পুরো প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ল এন্ড জাস্টিস বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মোহাম্মদ জাহিদ মোস্তফা এবং নীলস বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট (কম্পিটিশান) শেখ হাবিবুর রহমান।
সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয় নীলস্ বাংলাদেশ চ্যাপটারের প্রসিডেন্ট নাসরিন সুলতানা’র বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রত্যেককে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়াও প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত নীলস্ কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নীলসের ভবিষ্যত উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম সম্পর্কে কথা বলেন।
প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করতে এসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর চিত্র তুলে ধরার মতো প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য নীলস বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানান। তিনি আরো বলেন এমন প্রতিযোগিতা আন্তার্জাতিক অঙ্গণে উপস্থাপনের মতো একটি বিষয়। তিনি সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে প্রত্যেককে মানবাধিকার সংরক্ষণে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির টিম ‘জাস্টিস সিকার’ এবং রানার আপ হয় একই ইউনিভার্সিটির টিম ‘ভিক্টিম’। এছাড়াও ‘বেস্ট প্রেজেন্টার’ নির্বাচিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়মা করিম শ্যানন এবং প্রমিত দীপ্তের দল ‘স্পার্টান্স’।
উল্লেখ্য যে, দ্যা নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস (নীলস্) ৬টি মহাদেশের ২৬টি দেশে আন্তর্জাতিকভাবে আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, প্রতিযোগিতা, ডেলিগেশান প্রোগ্রাম, রেসিডেন্শিয়াল স্কুল প্রোগ্রাম, আইনি সহায়তামূলক কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করার মাধ্যমে আইন শিক্ষায় অবদান রেখে থাকে।
Discussion about this post