ডেস্ক রিপোর্ট:
কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাব। র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে ৮ মাস বয়সের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।
শিশুটির জন্মগতভাবে হার্টে ছিদ্র থাকায় তার চিকিৎসায় ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। শিশুটির চিকিৎসার অর্থ সংকুলানের আশায় স্বামীসহ কক্সবাজারে অবস্থান করছিল পরিবারটি। তারা বিত্তবান পর্যটকদের নিকট হতে অর্থ সাহায্য চাইতেন। এ সময় তিনি অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
আশিককে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দরকার আল মঈন।
ঘটনার দিনের বর্ণনায় র্যাব জানায়, অপহরণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী র্যাব-১৫ এর নিকট তার স্ত্রীকে উদ্ধারে সহায়তা চান। পরে র্যাব ভুক্তভোগীর স্বামীকে নিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ও একপর্যায়ে ভুক্তভোগী উদ্ধার হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে জিম্মি করার সহযোগিতার অভিযোগে জিয়া গেস্ট হন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, হোটেল-মোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব রোববার দিবাগত রাতে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার আলোচিত প্রধান আসামি আশিককে (২৯) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর আশিক তার অপরাধ র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত আশিক কক্সবাজারে পর্যটক এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মূল হোতা। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০-৩৫ জন। গ্রেফতারকৃত বিগত ২০১২ বছর হতে কক্সবাজার পর্যটক এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত রয়েছে। সে ২০১৪ সালে প্রথমবার অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিল বলে জানিয়েছে।
আশিক ও তার সিন্ডিকেট পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত। সে পর্যটন এলাকায় বিভিন্ন হোটেলে ম্যানেজারের সাথে যোগসাজসে ট্যুরিস্টদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন রকম জবরদখল ও অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে। সে পর্যটন এলাকার সুগন্ধা নামক স্থানে ফ্ল্যাট ও এ্যাপার্টমেন্ট জোরপূর্বক কম টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়ে ক্ষেত্রে বিশেষে দ্বিগুন ও তিনগুন ভাড়া সংগ্রহ করে মূল মালিকদের বঞ্চিত করে থাকে।
গ্রেফতারকৃত বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অবৈধ দখল করে ও চাঁদা দাবী করে থাকে। তার চক্রের সদস্যরা রাত্রিকালীন সময়ে সী-বীচে আগত ট্যুরিস্টদের হেনস্তা, মোবাইল ছিনতাই, ফাঁদে ফেলা ও নিয়মিত ইভটিজিং করতো।
র্যাব আরও জানায়, তার নামে ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ১২টি মামলা চলমান রয়েছে। ইতোপূর্বে সে ৫ বার পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Discussion about this post