অনলাইন ডেস্ক
লাইসেন্সবিহীন ওয়াকিটকি রাখাসহ একাধিক অভিযোগের মামলায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সামরিক জান্তা-শাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত আজ সোমবার সু চিকে এই দণ্ড দেন। রায়ের বিষয়ে অবগত একটি সূত্র এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
হাতে ব্যবহারের রেডিও (ওয়াকিটকি) অবৈধভাবে রেখে আমদানি-রপ্তানি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সু চিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল জ্যামারের একটি সেট রাখার জন্য সু চিকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।উভয় দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এ ছাড়া করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ–সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘনের আরেক অভিযোগে সু চিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৬ বছর বয়সী সু চির বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন মামলা আছে। এসব মামলায় তাঁর মোট ১০০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। সু চি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
উসকানি ও করোনাইরাসের বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সু চির চার বছরের কারাদণ্ড হয়। পরে এই দণ্ড কমিয়ে দুই বছর করা হয়।
মিয়ানমারের রাজধানীর একটি পুলিশ স্টেশনে দায়ের হওয়া মামলার নথিতে বলা হয়, নেপিডোতে সু চির বাসভবনে সেনা কর্মকর্তারা তল্লাশি চালান। তল্লাশিকালে তাঁরা সু চির বাসভবনে একাধিক ওয়াকিটকি পান। এসব ওয়াকিটকি অবৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে। সু চির দেহরক্ষীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এই ওয়াকিটকিগুলো ব্যবহার করেছেন।
মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সু চি দীর্ঘদিন ধরে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। জান্তা শাসনের বিরোধিতা করার জন্য তাঁকে বছরের পর বছর গৃহবন্দী থাকতে হয়েছে। ২০১০ সালে সু চি মুক্তি পান। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভূমিধস জয় পায়। তাঁর দল সরকার গঠন করে।
২০২০ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে সু চির দল আবার বড় জয় পায়। কিন্তু দেশটির সেনাবাহিনী সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। তবে দেশটির নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর এ অভিযোগ নাকচ করে দেয়।
এ অজুহাতে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান করে দেশটির সেনাবাহিনী। সামরিক জান্তা সু চিসহ দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। দেশটিতে জারি করে জরুরি অবস্থা।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পরপরই দেশটির গণতন্ত্রপন্থী জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। তুমুল বিক্ষোভ দমাতে দেশটির সেনাবাহিনী সহিংস দমন-পীড়ন শুরু করে। এই বিক্ষোভে জান্তার হাতে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে।
Discussion about this post