শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ভবিষ্যতহীন। তাদের মাতা পিতার মুখের দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না। সর্বোচ্চ লেখাপড়া শেষ করেও তাদের মানবেতর জীবন গাঁথা সমাজের চোখেও যেমন উপহাস্য তেমনি ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জীবনেও পরিপাটি বেশধারী আইন পেশামুখাপেক্ষি শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ বঞ্চনার শিকার। ২০১৭ সালের পরীক্ষা সমাপনীর পর দীর্ঘতম অপেক্ষারত বার কাউন্সিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশরা যেমন নিরুপায় দিনাতিপাত করছে তেমনি পরবর্তী পরিক্ষার জন্য অপেক্ষারতরা যেন দিশেহারা।
করোনা অজুহাতে পরিক্ষা গ্রহণের অনিশ্চয়তা হাজার হাজার যুবকদের করে রেখেছে কর্ম প্রতিবন্দী বেকার ভবিষ্যতহীন। যার না আছে কোন দিকনির্দেশনা না আছে কোন আলোর দিশা। জীবন গড়ে ওঠার মহেন্দ্রক্ষণে তাদেরকে যেন নিক্ষিপ্ত করা হচ্ছে শূণ্যতার এক কালো গহব্বরের দিকে। আইন পেশা সনদ না থাকার কারণে যেমন তারা আদালতে পাচ্ছে না আইন চর্চার সুযোগ তেমনি পেশাগত সনদ না থাকায় করতে পারছে না বিশেষায়িত চাকরির কোন যথোপযুক্ত মর্যাদাপূর্ণ যোগ্যতম কর্ম প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ।
বিষয়টি নিয়ে ১২৭ দিনের অব্যাহত আন্দোলন অনশন কর্মসূচিতে অনেককেই পারি জমাতে হয়েছে না ফেরার দেশে। তবুও বার কাউন্সিল তাদের নিরবতা ভাঙে সাড়া না দেয়ার পাষণ অাচরণে অটল। প্রকৃত অভিভাবকদের দায়বদ্ধতার উদাসীনতায় শিক্ষানবিশরা যেন আজ মাতাপিতাহীন এতিম সন্তানের মতন জীবনের সমুখে সকল দার রুদ্ধতা হেতু যেন পেশাগত সাংবিধানিক অধিকার তাদের মানবিক বিপর্যস্ত।
দেশের উল্লেখিত এলিট শ্রেনীর পেশা অভিমুখী এসব যুবকদের পেশা বঞ্চিত করে রেখে রাষ্ট্রের গর্ভে প্রবেশ করার সুযোগকে পরাভূত করে রাখার মাধ্যমে সাংবিধানিক ভাবেও তারা পেশা করার মৌলিক অধিকার থেকে অনৈতিক বঞ্চনার শিকার। তাই ভবিষ্যৎ আইনজীবীদের এমন সূদুর পরাহত জীবনের কৈফত যেমন নেই তাদের অভিভাবক সায়ত্তশাসিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বার কাউন্সিলের ঠিক তেমনি কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে না তাদের সম্ভাবনাময় সোনালী সময়গুলো।
আইন অঙ্গনে এই ব্যর্থতার গ্লানি ঘুচবে না যেন চিরদিন, সেদিকেই ধাবমান এই রাজকীয় পেশার ভবিষ্যৎ বাস্তবতা। তবুও আশা রেখে যায় আশা রাখতে হয় হাজার হাজার প্রতিক্ষার প্রহর গুণতে থাকা চাতক পাখিদের অর্থাৎ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের। শুভবুদ্ধির পরিচয় ঘটুক বঞ্চিতদের কল্যানে, ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের জন্য উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে। সত্য এবং ন্যায় চিরস্থায়ী হোক তার প্রকৃত অবস্থান আহরণের মধ্যে দিয়ে ভূলুণ্ঠিত হোক অন্যায়ের অন্ধকার, আলোকিত হোক প্রতিটি অধিকার বঞ্চিতদের জীবন।
Discussion about this post