শীতলক্ষ্যার তীর ঘেঁষে মাটি খনন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও ইটভাটার মালিকেরা এমন তথ্যের ভিত্তিতে নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখা শীতলক্ষ্যার তীড়ে অবৈধ মাটি খনন বন্ধে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে । এসময় তারা বার বার প্রশাসনের দিকে দৃষ্টিপাত করে বলে “অবৈধ মাটি খনন রোধ করতে হবে এবং এজন্য প্রশাসনকেই বড় ভূমিকা রাখতে হবে” ।
বক্তব্যে পিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় আলী কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আহম্মাদুল কবীর খোকন বলেন নদী ও সভ্যতা খুব কাছাকাছি শব্দ । সুতরাং আমাদের বেঁচে থাকার এ অবলম্বনকে আমাদের সুরক্ষা দিতেই হবে ।শীতলক্ষ্যায় মিশে আছে আমাদের শৈশব । এ নদীকে স্বচ্ছ সরবরের নদী হিসেবেই দেখতে চাই ।
কবি ও কথা সাহিত্যিক শাহান সাহাবুদ্দীন তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন: আমরা আসলে পরিবেশকে ধ্বংসের দিকে নিজেরাই নিয়ে যাচ্ছি । আমরা নিজেরাই নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার মন্ত্রকে অনুধাবন করতে পারিনা বলেই নদ-নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত রাখতে পারিনি ।
পর্যায়ক্রমে কথা বলেন শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও লেখক রানা মাসুদ । তিনি অবৈধ মাটি খনন, দখল ও দূষণ মুক্ত করণে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ।
স্টুডেন্ট এ্যান্ড হিউম্যান লিংকের প্রতিষ্ঠাতা সাব্বির হোসেন খোকন ও নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান মোহাম্মদের সঞ্চালনায় সবশেষে কথা বলেন নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর শাখার সভাপতি লেখক ও রসায়নবিদ সাঈদ চৌধুরী । তিনি বলেন আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্যে বসবাস করছি । চারিদিকের মানুষগুলো নদীর প্রয়োজনীয়তা, ভূগর্ভস্থ পানির যত্ন এবং পরিবেশের হুমকিগুলো অনুধাবন করতে পারছেনা । যার কারণে পরিবেশ হয়ে উঠছে অস্থির । শীতলক্ষ্যা এক সময় খুব পরিচ্ছন্ন ও শীতল একটি নদী ছিলো । বর্জ্যের কারণে যেমন দূষণ হচ্ছে এখন তেমনি দখল ও নতুন সমস্যা মাটি খনন শীতলক্ষ্যাকে নিয়ে যাচ্ছে একেবারে শেষের দিকে । এ অবস্থা থেকে আমাদের পরিত্রান পেতেই হবে । আমরা আন্দোলন চালিয়েই যাবো শ্রীপুরের লবলং সাগর, শীতলক্ষ্যা নদী সহ সকল জলাশয়গুলোকে বাঁচানোর জন্যই ।
এ অবস্থান কর্মসূচীটি পালিত হয় শীতলক্ষ্যা নদীর অবৈধভাবে খনন হয়েছে এমন বিভিন্ন পয়েন্টে ।শ্রীপুরের লতিফপুর থেকে শুরু করে কাপাসিয়া পর্যন্তই বিভিন্ন স্থানে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু মানুষ যার কারণে হুমকির মুখে পড়ছে শীতলক্ষ্যার উভয় পাড় ও পাড়ের স্থাপনা । এখন না বুঝলেও এই মাটি কাটার ফলে পাড় ঘেঁষা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পাড়ে বলে মনে করে উপস্থিত বিভিন্ন পরিবেশ বিদেরাও ।
অনুষ্ঠান শেষে নদীর বুকে নৌকায় ভাসমান ও ভিন্নধর্মী ইফতার মাহফিল আয়োজন করে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, শ্রীপুর শাখা ।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থপতি সারজিল হোসেন শান্ত, সিংগারদীঘি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, বড়মা সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক আজাদ আবুল কালাম, 2017 সালের সেরা জাতীয় গীতিকার মহসিন আহমেদ, লেখক ও সমাজ চিন্তক ফজর আলী, পরিবেশ কর্মী জোবায়ের আহমেদ ও তরুণ রাজনীতিবিদ আজহার ইসলাম সহ নদী পরিব্রাজক দল ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যবৃন্দ ।
অনুষ্ঠানটির স্পন্সর্ড হিসেবে ছিলো কাশ বিডি ও নির্মান শিল্প । মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো দৈনিক ভোরের পাতা, দি পিপলস টাইম, বিডি ল নিউজ, আজকালের বাংলা খবর ।
Discussion about this post