সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল ( Key points of the Constitution of Bangladesh)
সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল জেনে রাখা উচিত আমরা যারা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের সংবিধান পড়ি বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় , সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল খুব বেশি উপকৃত করবে তাদের জন্য। জেনে নিন আইনের ছাত্র থাকাবস্থায়, স্মার্ট আইনজীবী হবার জন্য ,জানুন দেশের আইন সম্পর্কে , সংবিধান পড়ুন জানার জন্য ।
বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জানা দরকার যে বাংলাদেশ সংবিধান এটি দেশের সর্ব্বোচ্চ আইন। কিন্তু এই সংবিধানটি বাংলাদেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকদের হাতে পাঠ্য পুস্তুক হিসেবেও তুলে দেওয়া হয়নি , এর কারণে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্ক প্রশ্ন করলে উত্তরে তারা না জবাব দেবেন আমরা সংবিধানে কি বলা হয়েছে এই সম্পর্কে কিছুই জানিনা।
আমি বলতে চাই বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুল কলেজে বাংলাদেশের সংবিধানকে পাঠ্য পুস্তক হিসেবে অনুমোদন দিলে দেশের সকল শ্রেণীর নাগরিক দেশের সর্ব্বোচ্চ আইন বাংলাদেশ সংবিধান সম্পর্কে (A to Z) জানতে পারবে।
চলুন আজ আমরা জেনে নেই সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল এবং বাংলাদেশ সংবিধানরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ( Key points ) যে গুলো মনে মনে রাখলে আপনি সংবিধানকে খুব সহজেই নিজের আয়ত্বে নিতে পারবেন।
প্রথমে আমরা যে বই সম্পর্কে পড়তে যাই না কেন প্রথমেই আমাকে জানতে হবে বইটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি বিষয় নিয়ে গঠিত। চলুন দেখে নেই সংবিধান এর শুরু থেকে শেষ পযন্ত কি কি বিষয়ের সংমিশ্রণ গঠিত।
সংবিধান মুখস্ত করার কৌশলঃ
আমরা জানি
- বাংলাদেশ সংবিধানের প্রস্তাবনা -১ টি।
- প্রস্তাবনা: “ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।”
- রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি -৪ টি।
- তফসিল -৭ টি।
- অধ্যায় – ১১ টি।
- অনুচ্ছেদ – ১৫৩ টি।
- বাংলাদেশ সংবিধানের বৈশিষ্ট্য-১২ টি।
- সংবিধান হলো বাংলাদেশের সর্ব্বোচ্চ আইন।
এখন মুল বিষয় হচ্ছে এটি আমরা অনেকেই জানি কিন্তু বাংলাদেশ সংবিধানের ১১ টি অধ্যায় এবং ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ এর ভেতর কোথায় কোন বিষয় সম্পর্কে বলা রয়েছে এটি আমরা অনেকেই জানিনা, আবার অনেক জানলেও কিছুদিন পরেই ভুলে যাই তাই আজ আমরা বাংলাদেশ সংবিধান এমন ভাবে পড়ার চেষ্টা করবো এবং জেনে নি সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল যাতে করে খুব সহজে সংবিধানটি আপনার মাথায় মেমরী হিসেবে ধারণ করতে পারেন এবং যে কোন সময় যে কেউ প্রশ্ন করলে সাথে সাথে জবাব দিতে পারেন।
সংবিধানের ১১ টি ভাগের কোন ভাগে কি বলা রয়েছে চলুন দেখে নেই।
-
প্রথম ভাগ ( প্রজাতন্ত্র) (THE REPUBLIC ) ( অনুচ্ছেদ ১-৭খ পর্যন্ত )
-
দ্বিতীয় ভাগ ( রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি) ( FUNDAMENTAL PRINCIPLES OF STATE POLICY ) ( অনুচ্ছেদ ৮-২৫ পর্যন্ত )
-
তৃতীয় ভাগ (মৌলিক অধিকার ) ( FUNDAMENTAL RIGHTS ) ( অনুচ্ছেদ ২৬-৪৭ক পর্যন্ত )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর প্রথম তিনটি অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই এখন আমরা মনে রাখবো সংবিধানের চতুর্থ ভাগ অর্থ্যাৎ চতুর্থ ভাগ নির্বাহী বিভাগে ৫ টি পরিচ্ছেদ রয়েছে । মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
-
চতুর্থ ভাগ ( নির্বাহী বিভাগ) ( THE EXECUTIVE ) ( অনুচ্ছেদ ৪৮-৬৪ পর্যন্ত )
- ১ম পরিচ্ছেদ- রাষ্ট্রপতি ( THE PRESIDENT ) ( অনুচ্ছেদ ৪৮ – ৫৪ পর্যন্ত )
- ২য় পরিচ্ছেদ-প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা ( THE PRIME MINISTER AND CABINET ) ( অনুচ্ছেদ ৫৫ – ৫৮ পর্যন্ত )
- ৩য় পরিচ্ছেদ- স্থানীয় শাসন ( LOCAL GOVERNMENT ) ( অনুচ্ছেদ ৫৯-৬০ পর্যন্ত )
- ৪র্থ পরিচ্ছেদ – প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ ( THE DEFENSE SERVICES ) ( অনুচ্ছেদ ৬১ – ৬৩ পর্যন্ত )
- ৫ম পরিচ্ছেদ- অ্যাটর্নি জেনারেল ( THE ATTORNEY- GENERAL ) ( অনুচ্ছেদ ৬৪ অ্যাটর্নি জেনারেল )
-
পঞ্চম ভাগ ( আইন সভা ) ( THE LEGISLATURE ) ( অনুচ্ছেদ ৬৫ – ৯৩ পর্যন্ত )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়ে ৩ টি করে পরিচ্ছেদ রয়েছে। মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
- ১ম পরিচ্ছেদ- সংসদ ( PARLIAMENT ) ( অনুচ্ছেদ ৬৫ – ৭৯ পর্যন্ত )
- ২য় পরিচ্ছেদ- আইন প্রণয়ন ও অর্থসংক্রান্ত পদ্ধতি ( LEGISLATIVE AND FINANCIAL PROCEDURES ) ( অনুচ্ছেদ ৮০ – ৯২ পর্যন্ত )
- ৩য় পরিচ্ছেদ- অধ্যাদেশ প্রণয়ন-ক্ষমতা ( ORDINANCE MAKING POWER) ( অনুচ্ছেদ ৯৩ পর্যন্ত )
-
ষষ্ঠ ভাগ ( বিচারবিভাগ) ( THE JUDICIARY ) ( অনুচ্ছেদ ৯৪ – ১১৭ পর্যন্ত )
- ১ম পরিচ্ছেদ- সুপ্রীম কোর্ট ( THE SUPREME COURT ) ( অনুচ্ছেদ ৯৪ – ১১৩ পর্যন্ত )
- ২য় পরিচ্ছেদ- অধস্তন আদালত ( SUBORDINATE COURTS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৪ – ১১৬ পর্যন্ত )
- ৩য় পরিচ্ছেদ – প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ( ADMINISTRATIVE TRIBUNALS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৭ পর্যন্ত )
-
সপ্তম ভাগ ( নির্বাচন) ( ELECTIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৮ – ১২৬ পর্যন্ত )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর সপ্তম ভাগে/অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
-
অষ্টম ভাগ ( মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ( THE COMPTROLLER AND AUDITOR- GENERAL ) ( অনুচ্ছেদ ১২৭-১৩২ পর্যন্ত)
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর অষ্টম ভাগে/অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
-
নবম ভাগ ( বাংলাদেশের কর্মবিভাগ) ( THE SERVICES OF BANGLADESH ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৩-১৪১ পর্যন্ত)
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর নবম ভাগে/অধ্যায়ে ২ টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
- ১ম পরিচ্ছেদ- (কর্মবিভাগ ) ( SERVICES ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৩ – ১৩৬ পর্যন্ত )
- ২য় পরিচ্ছেদ( সরকারী কর্ম কমিশন ) ( PUBLIC SERVICES COMMISSIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৭-১৪১ পর্যন্ত )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর নবম-ক ভাগ থেকে/অধ্যায় থেকে – একাদশ ভাগ/অধ্যায় এর মধ্যে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
-
(নবম -ক (ভাগ) ( জরুরী বিধানাবলী) ( EMERGENCY PROVISIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১৪১ ক-গ পর্যন্ত )
-
দশম ভাগ ( সংবিধান সংশোধন) ( AMENDMENT OF THE CONSTITUTION ) ( অনুচ্ছেদ ১৪২ পর্যন্ত)
-
একাদশ ভাগ ( বিবিধ ) ( MISCELLANEOUS ) ( অনুচ্ছেদ ১৪৩ থেকে ১৫৩ পর্যন্ত )
এই শিরোনাম অনুযায়ী যদি আমরা একটু মাথায় রাখার চেষ্টা করি তাহলে কেবল আমরা বাংলাদেশ সংবিধান এর ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ সংবলিত মুল বডিটি মনে রাখার চেষ্টা করলাম।
Key points of the Constitution of Bangladesh:-
এবার আমরা জানবো বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫৩ টি অনুচ্ছেদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ গুলোতে কি বলা রয়েছে, চলুন দেখে নেওয়া যাকঃ-
প্রথম ভাগ ( প্রজাতন্ত্র) (THE REPUBLIC ) ( অনুচ্ছেদ ১-৭খ পর্যন্ত )
- ১। প্রজাতন্ত্র ( The Republic )
- ২।প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা ( The territory of the Republic )
- 2ক।রাষ্ট্রধর্ম ( The state religion )
- ৩ । রাষ্ট্রভাষা ( The state language )
- ৪ । জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক ( National anthem, flag, and emblem )
- ৪ ক । জাতির পিতার প্রতিকৃতি ( Portrait of the Father of the Nation )
- ৫ । রাজধানী ( . The capital )
- ৬ । নাগরিকত্ব ( Citizenship )
- ৭ । সংবিধানের প্রাধান্য ( Supremacy of the Constitution )
- ৭ক । সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ ( Offence of abrogation, suspension, etc . of the Constitution )
- ৭খ । সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য ( Basic provisions of the Constitution are not amendable )
দ্বিতীয় ভাগ ( রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি) ( FUNDAMENTAL PRINCIPLES OF STATE POLICY ) ( অনুচ্ছেদ ৮-২৫ পর্যন্ত )
- ৮ । মুলনীতিসমূহ ( Fundamental principles )
- ৯ । জাতীয়তাবাদ ( Nationalism )
- ১০ । সমাজতন্ত্র ও শোধণমুক্তি ( Socialism and freedom from exploitation )
- ১১ । গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ( Democracy and human rights )
- ১২ ।ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ( Secularism and freedom of religion )
- ১৪ । কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি ( Emancipation of peasants and workers )
- ১৬ । গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি-বিপ্লব ( Rural development and agricultural revolution )
- ১৭ ।অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা ( Free and compulsory education )
- ১৮ক । পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন ( Protection and improvement of environment and biodiversity )
- ১৯ । সুযোগের সমতা ( Equality of opportunity )
- ২১ । নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য ( Duties of citizens and of public servants )
- ২২ । নির্বাহী বিভাগ হইতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ( Separation of Judiciary from the executive )
- ২৩ । জাতীয় সংস্কৃতি ( National culture )
- ২৩ক । উপজাতী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ( The culture of tribes, minor races, ethnic sects and communities )
- ২৪ । জাতীয় স্মৃতি নিদর্শন প্রভৃতি ( National monuments, etc.)
- ২৫ । আন্তজার্তিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন ( Promotion of international peace, security and solidarity )
তৃতীয় ভাগ (মৌলিক অধিকার ) ( FUNDAMENTAL RIGHTS ) ( অনুচ্ছেদ ২৬-৪৭ক পর্যন্ত )
- ২৬ । মৌলিক অধিকারের সহিত অসমঞ্জস আইন বাতিল ( Laws inconsistent with fundamental rights to be void )
- ২৭ । আইনের দৃষ্টিতে সমতা ( Equality before law )
- ২৮ । ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য ( Discrimination on grounds of religion, etc.)
- ২৮(২) । রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারীপুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন ( Women shall have equal rights with men in all spheres of the State and of public life)
- ২৯। সরকারী নিয়োগ-লাভে সুযোগের সমতা ( Equality of opportunity in public employment )
- ৩০। বিদেশী, খেতাব, প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ ( Prohibition of foreign titles, etc.)
- ৩১। আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার ( Right to protection of the law )
- ৩৩। গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ ( Safeguards as to arrest and detention )
- ৩৪। জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ ( Prohibition of forced labor )
- ৩৫। বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ ( Protection in respect of trial and punishment)
- ৩৬। চলাফেরার স্বাধীনতা ( Freedom of movement )
- ৩৭। সমাবেশের স্বাধীনতা ( Freedom of assembly )
- ৩৮। সংগঠনের স্বাধীনতা ( Freedom of association )
- ৩৯। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা ( Freedom of thought and conscience, and of speech )
- ৪০। পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা ( Freedom of profession or occupation )
- ৪১। ধর্মীয় স্বাধীনতা ( Freedom of religion )
- ৪২। সম্পত্তির অধিকার ( Rights to property )
- ৪৩। গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ ( Protection of home and correspondence )
- ৪৪। মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ ( Enforcement of fundamental rights )
- ৪৫। শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন ( Modification of rights in respect of disciplinary law )
- ৪৭ক। সংবিধানের কতিপয় বিধানের অপ্রযোজ্যতা ( In-applicability of certain articles )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর প্রথম তিনটি অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই এখন আমরা মনে রাখবো সংবিধানের চতুর্থ ভাগ অর্থ্যাৎ চতুর্থ ভাগ নির্বাহী বিভাগে ৫ টি পরিচ্ছেদ রয়েছে । মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
চতুর্থ ভাগ ( নির্বাহী বিভাগ) ( THE EXECUTIVE ) ( অনুচ্ছেদ ৪৮-৬৪ পর্যন্ত )
১ম পরিচ্ছেদ- রাষ্ট্রপতি ( THE PRESIDENT ) ( অনুচ্ছেদ ৪৮ – ৫৪ পর্যন্ত )
- ৪৮। রাষ্ট্রপতি ( The President )
- ৪৯। ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার ( Prerogative of mercy )
- ৫০। রাষ্ট্রপতি-পদের মেয়াদ ( Term of office of President )
- ৫১। রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি ( President’s immunity )
- ৫২। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন ( Impeachment of the President )
- ৫৩। অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ ( Removal of President on the ground of incapacity )
- ৫৪। অনুপস্থিতি প্রভৃতির-কালে রাষ্ট্রপতি-পদে স্পীকার ( Speaker to act as President during absence, etc. )
২য় পরিচ্ছেদ-প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা ( THE PRIME MINISTER AND CABINET ) ( অনুচ্ছেদ ৫৫ – ৫৮ পর্যন্ত )
- ৫৫। মন্ত্রিসভা ( The Cabinet )
- ৫৬। মন্ত্রিগণ ( Ministers )
- ৫৭। প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ ( Tenure of office of Prime Minister )
- ৫৮। অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ ( Tenure of office of other Ministers )
- ৫৮ক [বিলুপ্ত] [OMITTED]
৩য় পরিচ্ছেদ- স্থানীয় শাসন ( LOCAL GOVERNMENT ) ( অনুচ্ছেদ ৫৯-৬০ পর্যন্ত )
- ৫৯। স্থানীয় শাসন ( Local government )
- ৬০। স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা ( Powers of local government bodies )
৪র্থ পরিচ্ছেদ – প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ ( THE DEFENSE SERVICES ) ( অনুচ্ছেদ ৬১ – ৬৩ পর্যন্ত )
- ৬১। সর্বাধিনায়কতা ( Supreme command )
- ৬২। প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি প্রভৃতি ( Recruitment, etc., of defense services )
- ৬৩। যুদ্ধ ( War )
৫ম পরিচ্ছেদ- অ্যাটর্নি জেনারেল ( THE ATTORNEY- GENERAL ) ( অনুচ্ছেদ ৬৪ অ্যাটর্নি জেনারেল )
- ৬৪। অ্যাটর্ণি-জেনারেল ( The Attorney-General )
পঞ্চম ভাগ ( আইন সভা ) ( THE LEGISLATURE ) ( অনুচ্ছেদ ৬৫ – ৯৩ পর্যন্ত )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়ে ৩ টি করে পরিচ্ছেদ রয়েছে। মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
১ম পরিচ্ছেদ- সংসদ ( PARLIAMENT ) ( অনুচ্ছেদ ৬৫ – ৭৯ পর্যন্ত )
- ৬৫। সংসদ-প্রতিষ্ঠা ( Establishment of Parliament )
- ৬৬। সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা ( Qualifications and disqualifications for election to Parliament )
- ৬৭। সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া ( Vacation of seats of members )
- ৬৮। সংসদ-সদস্যদের [পারিশ্রমিক] প্রভৃতি ( Remuneration, etc., of members of Parliament )
- ৬৯। শপথ গ্রহণের পূর্বে আসন গ্রহণ বা ভোট দান করিলে সদস্যের অর্থদন্ড ( Penalty for member sitting or voting before taking oath )
- ৭০। রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া ( Vacation of seat on resignation or voting against political party)
- ৭১। দ্বৈত-সদস্যতায় বাধা ( Bar against double membership )
- ৭২। সংসদের অধিবেশন ( Sessions of Parliament )
- ৭৩। সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী ( President’s address and messages to Parliament )
- ৭৩ক। সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রীগণের অধিকার ( Rights of Ministers as respects Parliament )
- ৭৪। স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার ( Speaker and Deputy Speaker )
- ৭৫। কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি ( Rules of procedure, quorum, etc. )
- ৭৬। সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ ( Standing committees of Parliament )
- ৭৭। ন্যায়পাল ( Ombudsman )
- ৭৮। সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি ( Privileges and immensities of Parliament and members )
- ৭৯। সংসদ-সচিবালয় ( Secretariat of Parliament )
২য় পরিচ্ছেদ- আইন প্রণয়ন ও অর্থসংক্রান্ত পদ্ধতি ( LEGISLATIVE AND FINANCIAL PROCEDURES ) ( অনুচ্ছেদ ৮০ – ৯২ পর্যন্ত )
- ৮০। আইন প্রণয়ন পদ্ধতি ( Legislative procedure )
- ৮১। অর্থবিল ( Money Bills )
- ৮৫। সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ ( Regulation of Public moneys )
- ৮৭। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি ( Annual financial statement )
- ৮৯। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি ( Procedure relating to annual financial statement )
- ৯০। নির্দিষ্টকরণ আইন ( Appropriation Act )
৩য় পরিচ্ছেদ- অধ্যাদেশ প্রণয়ন-ক্ষমতা ( ORDINANCE MAKING POWER) ( অনুচ্ছেদ ৯৩ পর্যন্ত )
- ৯৩। অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা ( Ordinance making power )
ষষ্ঠ ভাগ ( বিচারবিভাগ) ( THE JUDICIARY ) ( অনুচ্ছেদ ৯৪ – ১১৭ পর্যন্ত )
১ম পরিচ্ছেদ- সুপ্রীম কোর্ট ( THE SUPREME COURT ) ( অনুচ্ছেদ ৯৪ – ১১৩ পর্যন্ত )
- ৯৪। সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা ( Establishment of Supreme Court )
- ৯৫। বিচারক-নিয়োগ ( Appointment of Judges )
- ৯৬। বিচারকের পদের মেয়াদ ( Tenure of office of Judges )
- ৯৭। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ( Temporary appointment of Chief Justice )
- ৯৮। সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ ( Additional Supreme Court Judges )
- ৯৯। অবসর গ্রহণের পর বিচারগণের অক্ষমতা ( Disabilities of Judges after retirement )
- ১০০। সুপ্রীম কোর্টের আসন ( Seat of Supreme Court )
- ১০১। হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার ( Jurisdiction of High Court Division )
- ১০২। কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা ( Powers of High Court Division to issue certain orders and directions, etc.)
- ১০৩। আপীল বিভাগের এখতিয়ার ( Jurisdiction of Appellate Division )
- ১০৪। আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও নির্বাহ ( Issue and execution of processes of Appellate Division )
- ১০৫। আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা ( Review of judgments or orders by Appellate Division )
- ১০৬। সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার ( Advisory jurisdiction of Supreme Court )
- ১০৭। সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন-ক্ষমতা ( Rule-making power of the Supreme Court )
- ১০৮। “কোর্ট অব রেকর্ড” রূপে সুপ্রীম কোর্ট ( Supreme Court as court of record )
- ১০৯। আদালতসমূহের উপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ( Superintendence and control over courts )
- ১১০। অধস্তন আদালত হইতে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তর ( Transfer of cases from subordinate courts to High Court Division )
- ১১১। সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকরতা ( Binding effect of Supreme Court judgments )
- ১১২। সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা ( Action in aid of Supreme Court )
- ১১৩। সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ ( Staff of Supreme Court )
২য় পরিচ্ছেদ- অধস্তন আদালত ( SUBORDINATE COURTS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৪ – ১১৬ পর্যন্ত )
- ১১৪। অধস্তন আদালত-সমূহ প্রতিষ্ঠা ( Establishment of subordinate courts
- ১১৫। অধস্তন আদালতে নিয়োগ ( Appointments to subordinate courts )
- ১১৬। অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা ( Control and discipline of subordinate courts )
- ১১৬ক। বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন ( Judicial officers to be independent in the exercise of their functions )
- .
৩য় পরিচ্ছেদ – প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ( ADMINISTRATIVE TRIBUNALS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৭ পর্যন্ত )
- ১১৭। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহ ( Administrative tribunals )
সপ্তম ভাগ ( নির্বাচন) ( ELECTIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১১৮ – ১২৬ পর্যন্ত )
- ১১৮। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা ( Establishment of Election Commission )
- ১১৯। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ( Functions of Election Commission )
- ১২০। নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ ( Staff of Election Commission )
- ১২১। প্রতি এলাকার জন্য একটিমাত্র ভোটার তালিকা ( Single electoral roll for each constituency )
- ১২২। ভোটার-তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা ( Qualifications for registration as a voter )
- ১২৩। নির্বাচন-অনুষ্ঠানের সময় ( Time for holding elections )
- ১২৪। নির্বাচন সম্পর্কে সংসদের বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা ( Parliament may make provision as to elections )
- ১২৫। নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা ( Validity of election law and elections )
- ১২৬। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তাদান ( Executive authorities to assist Election Commission )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর সপ্তম ভাগে/অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
অষ্টম ভাগ ( মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ( THE COMPTROLLER AND AUDITOR- GENERAL ) ( অনুচ্ছেদ ১২৭-১৩২ পর্যন্ত)
- ১২৭। মহা হিসাব-নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা ( Establishment of office of Auditor-General )
- ১২৮। মহা-হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব ( Functions of Auditor-General )
- ১২৯। মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ ( Term of office of Auditor-General )
- ১৩০। অস্থায়ী মহা হিসাব-নিরীক্ষক ( Acting Auditor-General )
- ১৩১। প্রজাতন্ত্রের হিসাব-রক্ষার আকার ও পদ্ধতি ( Form and manner of keeping public accounts )
- ১৩২। সংসদে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্ট উপস্থাপন ( Reports of Auditor General to be laid before Parliament )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর অষ্টম ভাগে/অধ্যায়ে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
নবম ভাগ ( বাংলাদেশের কর্মবিভাগ) ( THE SERVICES OF BANGLADESH ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৩-১৪১ পর্যন্ত)
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর নবম ভাগে/অধ্যায়ে ২ টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। মনে রাখবেন অনুচ্ছেদ আর পরিচ্ছেদ এক নয়।
১ম পরিচ্ছেদ- (কর্মবিভাগ ) ( SERVICES ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৩ – ১৩৬ পর্যন্ত )
- ১৩৩। নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী ( Appointment and conditions of service )
- ১৩৪। কর্মের মেয়াদ ( Tenure of office )
- ১৩৫। অসামরিক সরকারী কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি ( Dismissal, etc. of civilian public officers )
- ১৩৬। কর্মবিভাগ-পুনর্গঠন ( Reorganization of service )
২য় পরিচ্ছেদ( সরকারী কর্ম কমিশন ) ( PUBLIC SERVICES COMMISSIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১৩৭-১৪১ পর্যন্ত )
- ১৩৭। কমিশন-প্রতিষ্ঠা ( Establishment of commissions )
- ১৩৮। সদস্য-নিয়োগ ( Appointment of members )
- ১৩৯। পদের মেয়াদ ( Term of office )
- ১৪০। কমিশনের দায়িত্ব ( Functions of commissions )
- ১৪১। বার্ষিক রিপোর্ট ( Annual report )
মনে রাখতে হবে সংবিধান এর নবম-ক ভাগ থেকে/অধ্যায় থেকে – একাদশ ভাগ/অধ্যায় এর মধ্যে কোন পরিচ্ছেদ নেই।
(নবম -ক (ভাগ) ( জরুরী বিধানাবলী) ( EMERGENCY PROVISIONS ) ( অনুচ্ছেদ ১৪১ ক-গ পর্যন্ত )
- ১৪১ক। জরুরী-অবস্থা ঘোষণা ( Proclamation of emergency )
- ১৪১খ। জরুরী-অবস্থার সময় সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ ( Suspension of provisions of certain articles during emergencies )
- ১৪১গ। জরুরী-অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিতকরণ ( Suspension of enforcement of fundamental rights during emergencies )
দশম ভাগ ( সংবিধান সংশোধন) ( AMENDMENT OF THE CONSTITUTION ) ( অনুচ্ছেদ ১৪২ পর্যন্ত)
- ১৪২। সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা ( Power to amend any provision of the Constitution )
একাদশ ভাগ ( বিবিধ ) ( MISCELLANEOUS ) ( অনুচ্ছেদ ১৪৩ থেকে ১৫৩ পর্যন্ত )
- ১৪৩। প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি ( Property of the Republic )
- ১৪৪। সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি-প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব ( Executive authority in relation to property, trade, etc. )
- ১৪৫। চুক্তি ও দলিল ( Contracts and deeds )
- ১৪৫ক। আন্তর্জাতিক চুক্তি ( International treaties )
- ১৪৬। বাংলাদেশের নামে মামলা ( Suits in name of Bangladesh )
- ১৪৭। কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি ( Remuneration, etc., of certain officers )
- ১৪৮। পদের শপথ ( Oaths of office )
- ১৪৯। প্রচলিত আইনের হেফাজত ( Saving for existing laws )
- ১৫০। ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী ( Transitional and temporary provisions )
- ১৫১। রহিতকরণ ( Repeals )
- ১৫২। ব্যাখ্যা ( Interpretation )
- ১৫৩। প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ ( Commencement, citation and authenticity )
সংবিধানের ৭ টি তফসিল দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সংবিধানের ১৭ টি সংশোধনী সমূহ
১৯৭২ সালে পর বাংলাদেশের সংবিধান এ পর্যন্ত ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে।
- প্রথম সংশোধনী: সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বিল পাস হয় ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই। সংবিধানের প্রথম সংশোধনীটি ছিল যুদ্ধাপরাধীসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।
- দ্বিতীয় সংশোধনী: ১৯৭৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী বিল পাস হয়। এতে সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদে (২৬, ৬৩, ৭২ ও ১৪২) সংশোধন আনা হয়। অভ্যন্তরীণ গোলযোগ বা বহিরাক্রমণে দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন বাধাগ্রস্ত হলে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার বিধান চালু করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে।
- তৃতীয় সংশোধনী: ভারত ও বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণী একটি চুক্তি বাস্তবায়ন করার জন্য ১৯৭৪ সালের ২৩ নভেম্বর এ সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন এবং চুক্তি অনুযায়ী ছিটমহল ও অপদখলীয় জমি বিনিময় বিধান প্রণয়ন করা হয়।
- চতুর্থ সংশোধনী: ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি এ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটানো হয়। সংসদীয় শাসন পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন পদ্ধতি চালু এবং বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনীতি প্রবর্তনে এই সংশোধনীর মূল কথা।
- পঞ্চম সংশোধনী: জাতীয় সংসদে এ সংশোধনী আনা হয় ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দানসহ সংবিধানে এর মাধ্যমে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করা হয়।
- ষষ্ঠ সংশোধনী: ১৯৮১ সালের ৮ জুলাই এ সংশোধনী আনা হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর উপরাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময়ে বিএনপি রাষ্ট্রপতি পদে তাদের প্রার্থী হিসেবে আব্দুস সাত্তারকে মনোনয়ন দেয়। ষষ্ঠ সংশোধনীতে সেই পথটাই নিশ্চিত করা হয়। উপ-রাষ্ট্রপতি পদে বহাল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিত করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে।
- সপ্তম সংশোধনী: ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে সামরিক শাসন বহাল ছিল। ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে এরশাদের ওই সামরিক শাসনে বৈধতা দেওয়া হয়। ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সামরিক আইন বলবৎ থাকাকালীন সময়ে প্রণীত সব ফরমান, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের আদেশ, নির্দেশ ও অধ্যাদেশসহ অন্যান্য আইন অনুমোদন দেওয়া হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে।
- অষ্টম সংশোধনী: ১৯৮৮ সালের ৭ জুন সংবিধানে অষ্টম সংশোধনী আনা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদে (২, ৩, ৫, ৩০ ও ১০০) পরিবর্তন আনা হয়। রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতিদান করা ও ঢাকার বাইরে ৬টি জেলায় হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করার বিধান চালু করা হয়। Dacca-এর নাম Dhaka এবং Bangali-এর নাম Bangladeshi-তে পরিবর্তন করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে। এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় দু’দিন পর অর্থাৎ ৯ জুন। তবে পরবর্তীতে ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠনের বিষয়টি বাতিল করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
- নবম সংশোধনী: নবম সংশোধনী আনা হয় ১৯৮৯ সালের ১০ জুলাই। এ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কিছু বিধান সংযোজন করা হয়। এ সংশোধনীর আগে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি যতবার ইচ্ছা রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন করতে পারতেন। এ সংশোধনীর পর অবস্থার পরিবর্তন হয়। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের সঙ্গে একই সময়ে উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, রাষ্ট্রপতি পদে কোনও ব্যক্তির পর পর দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন সীমাবদ্ধ রাখা হয়।
- দশম সংশোধনী: এই বিলটি পাস হয় ১৯৯০ সালের ১২ জুন । রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যাপারে সংবিধানের ১২৩(২) অনুচ্ছেদের বাংলা ভাষ্য সংশোধন ও সংসদে মহিলাদের ৩০টি আসন আরও ১০ বছর কালের জন্য সংরক্ষণ করার বিধান করা হয়।
- একাদশ সংশোধনী: গণঅভ্যুত্থানে এইচ এম এরশাদের পতনের পর বিচারপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে ১৯৯১ সালে ৬ আগস্ট এ সংশোধনী পাস হয়। এর মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগদান বৈধ ঘোষণা করা হয়। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রধান বিচারপতির পদে ফিরে যাবার বিধান পাস করানো হয় এই সংশোধনীতে। এ বিলটি সরকারি ও বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে পাস হয়। এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ১০ আগস্ট।
- দ্বাদশ সংশোধনী: ১৯৯১ সালের ৬ আগস্টের এ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৭ বছর পর দেশে পুনরায় সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করা হয়। একাদশের মত এ বিলটিও সরকারি ও বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে পাস হয়। এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর।
- ত্রয়োদশ সংশোধনী: ১৯৯৬ সালের ২৭ মার্চ এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ-নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জমির উদ্দিন সরকার এই সংশোধনীটি উত্থাপন করেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ২৮ মার্চ। উচ্চ আদালতের আদেশে ২০১১ সালে এই সংশোধনীটি বাতিল হয়।
- চতুর্দশ সংশোধনী: ২০০৪ সালের ১৬ মে এ সংশোধনী আনা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে ৪৫টি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছর করা হয়। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি ও আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি বা ছবি প্রদর্শনের বিধান করা হয়। আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ উত্থাপিত বিলটি ২২৬-১ ভোটে এটি পাস হয়। এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ১৭ মে।
- পঞ্চদশ সংশোধনী: সংবিধান আইন ২০১১ (পঞ্চদশ সংশোধনী) পাস হয় ২০১১ সালের ৩০শে জুন এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন হয় ২০১১সালের ৩রা জুলাই। এই সংশোধনী দ্বারা সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতিও দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়, জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বিদ্যমান ৪৫-এর স্থলে ৫০ করা হয়। সংবিধানে ৭ অনুচ্ছেদের পরে ৭ (ক) ও ৭ (খ) অনুচ্ছেদ সংযোজন করে সংবিধান বহির্ভূত পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ করা হয়। এই সংশোধনীর বিষয়টি উত্থাপন করেন সেই সময়ের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ।
- ষোড়শ সংশোধনী: ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে এই সংশোধনী আনা হয়। ৭২ এর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিধান পাস করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে। এটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বিলটির পক্ষে ভোট দেয়। পরে হাইকোর্ট একে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। আপিল বিভাগও ওই রায় বহাল রাখে। তবে, বর্তমানে এই রায়টি রিভিউতে রয়েছে।
- সপ্তদশ সংশোধনী: সর্বশেষ রবিবার সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধি আরও ২৫ বছর বহাল রাখার প্রস্তাব সম্বলিত সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। রাষ্ট্রপতি বিলটির অনুমোদন দিলে এটি আইনে পরিণত হবে।আশা করি সংবিধান মুখস্ত করার কৌশল এবং Key points of the Constitution of Bangladesh আপনাকে অনেক উপকৃত করবে সংবিধান ভালভাবে জানার ক্ষেত্রে।
আরো জানুন বাংলাদেশের সংবিধান কি ও সংবিধান সম্পর্কে বিস্তারিত
লেখকঃ ল ফর ন্যাশনস, ইমেইলঃ lawfornations.abm@gmail.com, মোবাইল: 01842459590.
Discussion about this post