নিজস্ব প্রতিবেদক: ফৌজদারি মামলার আসামি কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পোস্টিং নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে একজনের পোস্টিংয়ের বৈধতা এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিং না দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম রিগান এ রিট দায়ের করেন। রিটের পক্ষের আইনজীবীরা হলেন, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
রিটকারী আইনজীবীরা বলেন, ওই চারজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান। সে মামলায় তারা এখনো জামিন নেননি। ফলে আইনের দৃষ্টিতে তারা এখনো পলাতক। তারা ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়ার পরও তাদের বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং অন্য তিনজনের পোস্টিংয়ের চেষ্টা চলছে, যা আইনবহির্ভূত। সে কারণেই হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রিট আবেদনের ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে।
২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যান কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।
এরপর তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। পরে তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে মধ্যরাতেই জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ ঘটনা গণমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
পরবর্তী সময়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের তিনটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নিম্নধাপে নামিয়ে দেওয়া এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যদিও রিন্টু বিকাশ চাকমার বিষয়টি নিয়ে এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবে অন্যদের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে এনডিসি রাহাতুল ইসলামকে বরিশাল ডিসি অফিসে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post