রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর-পিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনা তার স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
রথীশ চন্দ্রের লাশ উদ্ধারের পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় রংপুরের এএসপি মিজানুর রহমান এ দাবি করেন।
এএসপি বলেন, এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকারের সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
এর আগে স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকারের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে শহরের তাজহাট মোল্লাপাড়ায় একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ পাওয়া যায়।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান রাত দেড়টায় গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের উদ্যোগে মঙ্গলবার দিনভর রংপুর শহরের বাড়ির পাশের ডোবায় তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে একটি রক্তমাখা শার্ট পাওয়া যায়।
নতুন করে পুলিশ আরও দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ নিয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রী ও মেয়েসহ ছয়জন।
রংপুর পুলিশের এএসপি (সার্কেল-১) সাইফুর রহমান সাইফ বলেন, ডোবায় তল্লাশির সময় যে শার্টটি পাওয়া গেছে, সেখানে রক্তের মতো দাগ রয়েছে। কাদাপানিতে দাগটি ঠিক স্পষ্ট নয়। তাই শার্টের ‘ফরেনসিক’ পরীক্ষার পর বোঝা যাবে শার্টটি কার এবং ওই দাগ রক্তের কিনা।
তিনি আরও জানান, ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে মঙ্গলবার আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কোনো ক্লু পাওয়া যায় কিনা তা দেখা হচ্ছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলাটির তদন্তে নেমেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক দল। তবে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে নিখোঁজের ঘটনায় তদন্ত অগ্রগতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে বলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
নতুন করে আটকরা হলেন- তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান ও কামরুল ইসলাম। আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আটক অন্য ব্যক্তিরা তার সহকর্মী ও পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ। এর মধ্যে কামরুল ইসলামের সঙ্গে অতিঘনিষ্ঠতা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল এবং এ নিয়ে প্রায় মারধরের ঘটনাও ঘটত বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাই পুলিশের সন্দেহের তীর এখন কামরুলের দিকে।
গত শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে নগরীর বাবুপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে শহরের দিকে যান রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা)। এরপর থেকে তার সন্ধান ছিল না।
তবে ওই দিন তার স্বজনরা জানান, সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যান রথীশচন্দ্র। কোথায় গিয়েছেন সে বিষয়ে বাড়ির কাউকে কিছু বলেননি তিনি।
Discussion about this post