স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ চোরাচালানি ও ইয়াবা ‘গডফাদার’ মং মং সেনকে (৪৪) গ্রেফতার করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। মং মং সেন টেকনাফের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির খালাতো ভাই।
তার কাছ থেকে সাড়ে ৯ কেজি স্বর্ণ, বাংলাদেশি টাকায় নগদ ৪২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬০ টাকা এবং মিয়ানমারের মুদ্রায় ৫২ হাজার ৫’শ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজিবি’র দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের পরিচালক (অপারেশন) লে.কর্ণেল নাসির উদ্দিন আহমেদ একরাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তিনতলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মং মং সেনকে আটক করেছি। সেখান থেকে স্বর্ণালংকার, বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। মং মং সেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার। স্বর্ণ, ইয়াবা চোরাচালান এবং হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে মং মং জড়িত।
বাংলানিউজের কক্সবাজারের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট তুষার তুহিন জানিয়েছেন, মং মং সেন (৪৩) মিয়ানমারের সঙ্গে ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি টেকনাফে বসে হুন্ডির মাধ্যমে প্রতি মাসে শত কোটি টাকা লেনদেন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার মৃত অং সেন এর ছেলে। কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া-টেকনাফ) আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদির সৎ ভাই মো. ফয়সালের মা ও মং মং সেনের মা আপন বোন।
২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের ৭৬৪ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে। ওই তালিকার সাত নম্বর পৃষ্ঠার ‘চৌধুরীপাড়া’ অংশে ২১ জনের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে সাংসদ আবদুর রহমান বদির নাম। দুই নম্বরে মং মং সেন। তিন নম্বরে সাংসদ বদির ছোটভাই মৌলভি মুজিবুর রহমান, চার নম্বরে মো. সফিক ও পাঁচ নম্বরে মো. ফয়সালের নাম।
স্থানীয় লোকজন জানান, টেকনাফ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মং মং সেনের বিলাসবহুল বাড়িসহ স্বনামে-বেনামে একাধিক সোনার দোকান রয়েছে। ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তাকে টেকনাফ থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরে জামিনে মুক্তি পান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে ২১ ব্যক্তি। এর মধ্যে ইয়াবা ও সোনা চোরাচালানের কয়েক কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করেন ছয়জন। এঁরা হলেন মং মং সেন, জাফর আলম, মোহাম্মদ আমিন, নুরুল আমিন, আনোয়ার ও ইসমাইল। হুন্ডি চক্রের মিয়ানমার (মংডু) এজেন্ট হচ্ছেন আবদুল্লাহ, ঢাকায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জুবাইর হোসেন ও চট্টগ্রামে পিচ্চি আনোয়ার।
লে.কর্ণেল নাসির উদ্দিন আহমেদ একরাম বাংলানিউজকে বলেন, মং মং সেনকে টেকনাফ থানায় এবং উদ্ধার করা মালামাল কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মং মং এর সঙ্গে চোরাচালান সিণ্ডিকেটে আরও যারা যারা জড়িত আছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।বাংলানিউজ
Discussion about this post