অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাইকোর্টের আদেশ গোপন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেছেন কারা অধিদফতরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশিদ। উচ্চ আদালতের আদেশের তথ্য গোপন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত থেকে কারা অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশিদের জামিন নেয়ার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে, বিচারিক আদালতের জামিন আদেশ বাতিল করার আর্জিও জানিয়েছেন দুদক।
রোববার (১ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। পরে হাইকোর্ট দুদককে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করার পরামর্শ দেন এবং বিচারিক আদালতে সংশ্লিষ্টপক্ষকে দ্রুত নথিপত্র সরবরাহের জন্য নির্দেশনা দেন।
তথ্য গোপন করে জামিন নেয়ার ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন দুদক আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।
প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন জামিন দেন। ওই দিনই বিকালে তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে যান।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর একই আদালত এই মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন। একইসঙ্গে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদের জামিনের বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ হাইকোর্টের আদেশের নথি গোপন করে জামিন নিয়েছেন। বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনার পর আদালত সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করতে বলেছেন। এছাড়া দ্রুত মামলার আদেশের নথি সরবরাহ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিচারিক আদালত আগামী ২২ নভেম্বর আবেদনটি শুনানির জন্য রেখেছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ করোনাকালীন হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন। শুনানির পর হাইকোর্ট সেই জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। কিন্তু হাইকোর্টের এই আদেশ গোপন করে তিনি নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করেন এবং বিচারক সেটি মঞ্জুর করেন। ওই দিনই তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। রোববার এ বিষয়টি দুদক হাইকোর্টের নজরে এনেছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছর ২০ অক্টোবর বজলুর রশিদ ও তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই দিনই দুদক পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে একটি টিম বজলুর রশিদকে গ্রেফতার করে। এরপর ওইদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর গত ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলাটি ওই আদালতে বদলির আদেশ দেন।
Discussion about this post