ডেস্ক রিপোর্ট
হেফাজতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও তদন্ত প্রক্রিয়া সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
সোমবার (২৭ জুন) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে এক আলোচনায় এ দাবি জানানো হয়।
স্বাধীনতার ৫০ বছর ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি সমর্থনে ২৬ জুন আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ‘হেফাজতে নির্যাতন: বাংলাদেশের সাংবিধানিক সুরক্ষার বিবর্তন’ বিষয়ে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।
এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ড. কাজী জাহেদ ইকবাল। তিনি মৌলিক অধিকার, আইন প্রয়োগ, সাংবিধানিক সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা করেন।
ড. কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, সাংবিধানিক আইনের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগে সংবেদনশীলতা শক্তিশালী হয়নি। আইনের প্রতি ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন।
অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত তার অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক আচরণের ওপর ভিত্তি করে বলেন, আমাদের দেশের আইন প্রয়োগের মানসিকতা এবং স্বীকারোক্তি নির্ভর তদন্ত ব্যবস্থা, যেখানে পারিপার্শ্বিকতাকে তদন্ত ব্যবস্থায় আনা হয় না, তা কাঙ্ক্ষিত নয়।
তিনি আরও বলেন, রিমান্ডের কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকার পরও আদালত পুলিশের আবেদনে তাকে রিমান্ডের নির্দেশ দিচ্ছেন। এমনকি ১৫ দিনেরও বেশি, যা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। রিমান্ডের আগে-পরেও আসামিকে আদালতে হাজির করা হয় না।
সভায় গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক লিমন হোসেন ২০১১ সালে তার ওপর নির্যাতন ও সে কারণে পা হারানো এবং এ সংক্রান্ত মামলায় হয়রানির শিকার হওয়ার বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটির তদন্ত নাটকের অবসান হওয়া উচিত। কারণ প্রায়ই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ পায় না।’
নির্যাতনে প্রাণ হারানো জনির ভাই রকি ও তার মা মামলা করায় কীভাবে তাদের পরিবারের প্রতি হুমকি ভয়-ভীতি জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে সেই বর্ণনা করেন।
ব্লাস্ট ট্রাস্টি সদস্য অ্যাডভোকেট জেড আই খানের তত্ত্বাবধানে এ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে রায় ঘোষণার অপেক্ষায় এবং তিনি এ মামলায় জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকা, ব্লাস্টের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম।
আলোচকরা বলেন, নির্যাতনের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু, অঙ্গহানি বা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হলে তার বা তার পরিবারের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার কোনো ব্যবস্থা বিদ্যমান আইনে নেই।
আইনে নির্যাতনকারীর শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির জন্য কোনো প্রতিকারের বিধান নেই। যদিও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে একজন ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার হন। ফলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য প্রতিকার দেওয়া রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এজন্য তহবিল গঠন করতে হবে।
Discussion about this post