বিডি ল নিউজঃ বৃষ্টি কিংবা আলো স্বল্পতার কারনে ওডিআই কিংবা টি-২০ তে ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়, আর টেস্ট তো ওভারের খেলাই নয়। পাঁচ দিন সময়, যে যতক্ষণ পার খেল। হুম, ৫ টেস্ট আমরা ৪ দিন, ৩ দিনে শেষ হতে দেখেছি। কিন্তু, ২ দিনেও দেখেছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। ১ দিনের তা কারো দেখা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। অথচ, এখন যদি কেউ বলে ৫ দিনের টেস্ট শেষ হয়েছিল ৬ ঘণ্টারও কম সময়ে। আপনার বিশ্বাস হবে? তাও আবার আবহাওয়ার এর জন্য দায়ী নয়। বিশ্বাস না হলেও এটিই ঘটেছিল ১৯৩২ সালে। অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচে। ১৯৩২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড সাক্ষী হয়েছিল এমনই এক টেস্ট ম্যাচের, যা ক্রিকেট ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত টেস্ট লড়াই হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে ৮২ বছর ধরেই। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার এই টেস্ট লড়াই কেবল সময়ের দিক দিয়েই সংক্ষিপ্ততম টেস্ট নয়, এ ম্যাচটি সবচেয়ে কম রান নিয়েও কোনো দলের ইনিংস ব্যবধানে জয়ের অনন্য রেকর্ডেরও ঐতিহাসিক নিদর্শন হয়ে আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য টেস্টটি নিরন্তর লজ্জারই অংশ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৩৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৪৫। অস্ট্রেলিয়া নিজেদের একমাত্র ইনিংসে ১৫৩ রানে অলআউট হলেও প্রোটিয়াদের ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিক প্রদর্শনী তাদের এনে দেয় দারুণ এক বিজয়। পাঁচ ঘণ্টা ও ৫৩ মিনিট স্থায়ী এই ‘লড়াই’ দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট-মর্যাদাকেই সে সময় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। এখানে বলে রাখা ভালো, সেবার অস্ট্রেলিয়া সফরের পাঁচটি টেস্টেই হারের লজ্জা গায়ে মেখেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি ইনিংসেই বল হাতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালান অস্ট্রেলিয়ার বার্ট আয়রনমঞ্জার। বাঁহাতি নিরীহ-দর্শন স্লো মিডিয়াম এই বোলার দুই ইনিংস মিলে ঝুলিতে ভরেন ১১ উইকেট। প্রথম ইনিংসে তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৫/৬ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/১৮। এ ছাড়া পেসার লরি ন্যাশ প্রথম ইনিংসে ১৮ রানে ৪টি আর বিল ও’র্যালি ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়া ইনিংসের ‘খুনে’ সহযোগীর ভূমিকা রাখেন। অস্ট্রেলিয়ার ১৫৩ রানের ইনিংসে ৪২ রান এসেছিল অ্যালান কাইপ্যাক্স আর ৪০ রান এসেছিল জ্যাক ফ্লিংগেলটনের ব্যাট থেকে। এবার একটি তথ্য দিয়ে লেখাটা শেষ করা যাক। অস্ট্রেলিয়ার এই বিরাট বিজয়ে সেদিন কোনো ভূমিকাই ছিল না স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও মূল বোলার ক্লারি গ্রিমেটের। তাঁরা দুজন ম্যাচটা খেলেনইনি।
৩ দিনে টেস্ট শেষ হয়ে গেলেই আমরা কত কথা বলি। হেরে যাওয়া দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সবাই কত গালিই জানি শুনতে হয়। তাই চিন্তার বিষয় হচ্ছে, ঐ ম্যাচে না জানি কি অবস্থা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের?
সূত্রঃ প্রথম আলো
Discussion about this post