নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর চুরির উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় র্যাব-১৩ এর সদর দফতরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস।
এর আগে হামলার ঘটনায় শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরা হলেন- ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল ইসলাম (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস(২৮)।
তিনি জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। র্যাব শুরু থেকেই এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে আসাদুলকে শুক্রবার ভোরে হিলির কালীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী দিনভর অভিযান চালিয়ে নবিরুল ও সান্টুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে তারা চুরির উদ্দেশ্যে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসায় যান বলে জানিয়েছেন। এদের মধ্যে নবিরুল ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথায় আঘাত করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে।
র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেন, ঘটনার নেপথ্যে আরও কোনো কারণ আছে কি-না তা জানতে সময় লাগবে। অভিযুক্তদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিস্কৃত) জাহাঙ্গীরসহ আরও তিনজনকে আটক করা হলেও তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।
পরে সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির একজন প্রতিনিধি এবং দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ মাহমুদ।
এ হামলার ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন।
Discussion about this post