ডেস্ক রিপোর্টঃ-
বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবীর দুই নাতি কাজী আদিয়ান নবী ও কাজী নাহিয়ান নবীকে তাদের পাওনা সম্পদের হিসাব দুই সপ্তাহের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে চাচাকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট এবং একই সঙ্গে দুই শিশুর ভরণ পোষণের জন্য ১ লাখ টাকা দিতে বলেছেন চাচা রেহান নবীকে।
আগামী ২৮ অক্টোবর আদেশের দিন ঠিক করেছেন আদালত। সাথে সাথে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিশুরা চাইলে মায়ের কাছে থাকতে পারবেন। শিশুদের ইচ্ছা অনুযায়ী ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য রেকড করা হবে।

শুনানি ও আদেশের নির্ধারিত দিন রোববার (১১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে, গত ৪ অক্টোবর মধ্যরাতে আদালত বসিয়ে দুই শিশুর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার পর তাদের নিরাপত্তায় দু’জন পুলিশ সদস্য রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই দুই শিশুর চাচা রেহান নবীকে ১১ অক্টোবর আদালতে আসতে বলা হয়েছে।
গত ৩ অক্টোবর মধ্যরাতে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবীর দুই নাতি কাজী আদিয়ান নবী ও কাজী নাহিয়ান নবীকে (বাবা হারানো) পৈত্রিক বাড়িতে তুলে দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মধ্যরাতে একটি বেসরকারি টিভিতে এ সংক্রান্ত টকশো নজরে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশের পর রাতেই ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশু দুটিকে পৈত্রিক বাড়িতে রেখে আসেন।

মধ্যরাতে টকশোতে থাকা আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, একটি বেসরকারি টেলিভিশন টিভিতে আলোচনা হচ্ছিল দুটি শিশু নিয়ে। ওই দুটি বাচ্চা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল প্রয়াত ব্যারিস্টার কে এস নবীর নাতি। যাদেরকে তাদের চাচা বাসায় ঢুকতে দিচ্ছে না।কিছুদিন আগে এই দুই শিশুর বাবা হারিয়েছে। ওই টকশোতে আমি যুক্ত ছিলাম। টকশোটি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আবু তাহের মোহম্মদ সাইফুর রহমানের নজরে আসায় তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাৎক্ষণিক আদেশ দেন। আদেশে ওই দুই শিশুকে তাদের বাসায় নিরাপদে রেখে আসতে ধানন্ডি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, রাজধানী ধানমন্ডির একটি চারতলা বাড়ির মালিক সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবী। উত্তরাধিকার সূত্রে ওই বাড়িতে ঢুকতে চাইলেও গত কয়েকদিন ধরে ঢুকতে পারছে না কেএস নবীর ছোট ছেলে সিরাতুন নবীর দুই পুত্র।
গত ১০ আগস্ট সিরাতুন নবীর মৃত্যুর পর তার দুই ছেলেকে গত কয়েকদিন আগে বাসা থেকে বের করে দেন ওই শিশুদের চাচা কাজী রেহান নবী। আগেই শিশু দুটির বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এরপর বাবার মৃত্যুর পর শিশু দুটি কিছুদিনের জন্য তার মায়ের আশ্রয়ে থাকে। পরে মায়ের কাছ থেকে বাবার বাসায় ফেরার চেষ্টা করে ওই দুই শিশু।
কিন্তু তাদেরকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এরপর কয়েকবারের চেষ্টা করেও শিশু দুটি ওই বাসায় প্রবেশ করতে পারেনি। তবে বিষয়টি ধানমন্ডি থানাকে জানানো হলেও পুলিশের কথা আমলে নেননি শিশুদের চাচা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেহান নবী।
রাত ১২টায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে শিশু দুটির সঙ্গে তাদের ফুফু, সাংবাদিক রেজওয়ানুল হক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ভার্চুয়াল আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি প্রচারকালে বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের। এরপর প্রচারিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তিনি মাঝরাতে হাইকোর্টের বেঞ্চ বসিয়ে শিশু দুটিকে তাদের বাসায় তুলে দেওয়া এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ধানমন্ডি থানার ওসিকে আদেশ দেন।
Discussion about this post