ডেস্ক রিপোর্ট
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণও শেষ হয়েছে। নির্বাচনে দুদিনে পাঁচ হাজার ৬৭৬ জন আইনজীবী ভোট দিয়েছেন।
শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) মোট দুই হাজার ৮৫৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সাব-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এর আগে বুধবার (১০ মার্চ) প্রথম দিন দুই হাজার ৮২৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। আজ বাকিরা ভোট দিয়েছেন। সে হিসাবে মোট পাঁচ হাজার ৬৭৬ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
এখন ভোটের ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় আইনজীবীরা। নির্বাচনে আইনজীবীদের দেয়া ভোট রাতে গণনা করা হবে বলে নির্বাচন কমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।এর আগে সকাল ১০টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো আইনজীবীরা তাদের ভোট প্রদান শুরু করেন।
দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। রাতে গণনা করে শুক্রবার ফলাফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের প্রথমদিন বুধবার দুই হাজার ৮২৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সাত হাজার ৭২২। নির্বাচনে মোট ১৪টি পদের প্রতিটিতে একটি করে ভোট প্রয়োগ করছেন আইনজীবীরা। নির্বাচনী কেন্দ্রের ভেতর মোট ৬১টি বুথে আলাদাভাবে ভোট প্রয়োগ করেন আইনজীবীরা।
নিয়ম অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রের বুথে মোবাইলফোন, ক্যামেরা কিংবা অন্যকোনো ডিভাইস নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল।
এখন ফলাফল সুষ্ঠুভাবে দিতে পারলে আমাদের দ্বায়িত্ব যথাযথাভাবে পালন করা সম্ভব হবে। আশা করি আইনজীবীরা এ বিষয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটিকে সহযোগিতা করবেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১৪ পদে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি সম্পাদকীয় পদ এবং সাতটি কার্যনির্বাহী সদস্য পদ রয়েছে। দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং প্রত্যাহার শেষে ৫১ জন চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাতটি সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে ২৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সর্বোচ্চ পদ সভাপতি হিসেবে পাঁচজন, দুটি সহ-সভাপতি পদের বিপরীতে ছয়জন, সম্পাদক পদে চারজন, কোষাধ্যক্ষ পদে চারজন এবং দুটি সহ-সম্পাদক পদের বিপরীতে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাকি সাতটি কার্যনির্বাহী সদস্য পদের জন্য ২৪ জন আইনজীবী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামীপন্থী সাদা প্যানেল
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে এবং অ্যাডভোকেট আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা এবং অ্যাডভোকেট মো. আলী আজম, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. ইকবাল করিম, সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার সাফায়েত সুলতানা রুমি এবং অ্যাডভোকেট নুরে আলম উজ্জ্বল, সদস্য পদে অ্যাডভোকেট মিন্টু কুমার মন্ডল, ব্যারিস্টার মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার মো. সানোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট এবিএম শিবলী সালেকীন, অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল হক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান রোমান।
মূল বিএনপিপন্থী নীল প্যানেল
বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমানকে সভাপতি পদে এবং সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া দুটি সহসভাপতি পদে জয়নাল আবেদিন তুহিন ও জালাল আহমেদ, দুটি সহ-সম্পাদক পদে মাহমুদ হাসান ও রাশিদা আলম ঐশী, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব এবং সাতটি সদস্য পদে মনজুরুল আলম সুজন, শফিকুল ইসলাম শফিক, গোলাম মোহাম্মদ জাকির, পারভীন কাওসার মুন্নি, রেদওয়ান আহমেদ রানজিব, নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব ও ইফতেখার আহমেদ প্রার্থী হয়েছেন।
বিএনপির বিদ্রোহী (বিএনপিপন্থী আরেক) প্যানেল
এই প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান এবং সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা এবং অ্যাডভোকেট সাবিনা ইয়াসমিন লিপি, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান সম্রাট, সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী জুনু এবং অ্যাডভোকেট মো. সুলতান মাহমুদ, সদস্য পদে অ্যাডভোকেট শাফিউর রহমান শাফি, মো. মুনির হোসেন, অ্যাডভোকেট একেএম মুক্তার হোসেন, অ্যাডভোকেট মহিত উদ্দিন জুবায়ের, আকবর হোসেন, ওয়ালিউর রহমান শুভ ও নাজমুল হাসান প্রার্থী হয়েছেন।
রেড প্যানেল (লাল)
এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে কে এম জাবির, সম্পাদক পদে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি পদে নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. বদিউজ্জামান তপাদার, সহ-সম্পাদক পদে মো. সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য পদে শহিদুল হক, এস কে এম আনিসুর রহমান খান, জহিরুল আলম বাবর প্রার্থী হয়েছেন।এছাড়াও দলের বাইরে থেকে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ।
Discussion about this post