আইনুল ইসলাম বিশাল
গত কয়েকদিন আগে ঢাকা লীগের একটি ম্যাচে সাকিব আল হাসানের আচরণ নিয়ে দেখলাম অনেকেই বেশ উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলেন, বেয়াদব বলে সাকিবকে আখ্যা দিয়েছিলেন, কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি দাবি করেছিলেন। বেয়াদবের শাস্তি আমি চাই এবং দৃষ্টান্তমূলকভাবেই চাই এবং মনে করি এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। কিন্তু প্রশ্নটি হচ্ছে দুর্নীতি বা অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলা কি বেয়াদবি?
আমার মতে দুর্নীতি / অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলা বেয়াদবি না, এটা প্রতিবাদ বরং যে প্রতিবাদ করছে তাকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করার অর্থ হচ্ছে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, অনিয়মকে প্রশ্রয় এবং এটাও দুর্নীতি, এটাও অনিয়ম।
এখন আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে সাকিব কান্নাকাটি করে দেশবাসীর নিকট বিচার দিয়ে প্রতিবাদ করতে পারতেন, সাংবাদিকদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার চাইতে পারতেন অথবা সবুজ বাংলা ক্রিয়া চক্রের ম্যানেজারের মতো করে মাঠের মধ্যে ক্যামেরার সামনে এসে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়ে কান্নাকাটি করতে পারতেন।
আপনারা যারা তাই মনে করেন, আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন সাকিব এসব করার পর আপনারা কি করতে বা আদৌ কি কিছু করতেন? অতীতে যারা করেছে তাদের বিষয়ে আপনারা কি করেছেন?
এরইমধ্যে অনেকেই বলেছেন ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা তাই সাকিব ভদ্রভাবে প্রতিবাদ করতে পারতেন। এখন এখানে তিনটি প্রশ্ন, একঃ বৈধ খেলা গুলোর মধ্যে অভদ্র লোকের খেলা কোনটি? দুইঃ ক্রিকেটে যখন অনিয়ম/ দূর্নীতি জড়িয়ে যায় সেটা তখনও কি ভদ্রলোকের খেলা থাকে?
তিনঃ যারা লিখলেন ভদ্রলোকের খেলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাকিব ভদ্রভাবে প্রতিবাদ করতে পারতেন, তাদের কাছে প্রশ্ন আপনারা ভদ্রলোকের খেলায় যে দুর্নীতি/ অনিয়মের হয় সেই দুর্নীতি / অনিয়মের বিষয়ে জানার পরও কি গত কয়েক দিনের মধ্যে কি করেছিলেন?
যাইহোক, এবার নিজের কথায় ফিরে আসি আমার মতে প্রতিবাদ কখনো গ্রামার, ব্যাকরণ বা নির্দিষ্ট কোনো ভাষা অনুযায়ী হয় না। প্রতিবাদ সব সময়ই প্রতিবাদের ভাষা অনুযায়ীই হয়, প্রতিবাদের ভাষা পরিস্থিতি ঠিক করে দেয়। অর্থাৎ পরিস্থিতিই ঠিক করবে আপনি প্রতিবাদ কি সালাম দিয়ে করবেন নাকি লাথি দিয়ে করবেন?
ঢাকা লীগের ক্রিকেটে বছরের পর বছর যে দুর্নীতি/ অনিয়ম হয়ে আসছে তার বিরুদ্ধে একটা লাথি জরুরী হয়ে গিয়েছিলো। বিষয়টি বর্তমানে এমন জায়গায় আছে হয় এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে কাউকে লাথি দিয়ে বাংলার ক্রিকেট থেকে দুর্নীতিকে বিদায় করতে হবে, না হয় এই দুর্নীতিই ক্রিকেটকে ফুটবলের মতো লাথি দিয়ে এই দেশ থেকে বিদায় করে দিবে।
এখন প্রশ্নটা হচ্ছে এই লাথিটা দিবে কে? সাকিব ব্যতীত এরকম লাথি দেয়ার সাহস ও যোগ্যতা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোনো খেলোয়াড়ের কি আছে? যারা এইদেশের ক্রিকেটের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে আছেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত ঢাকা লীগের ক্রিকেটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার মতো নৈতিক অবস্থান একাংশের নাই আর অন্য অংশের মেরুদন্ডই নাই।
আমি একজন আশাবাদী মানুষ, স্রষ্টার কাছে আমার চাওয়া থাকে মৃত্যুর সময়ও যেনো আশা নিয়ে মরতে পারি অর্থাৎ পরকালে আমার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে সেই আশা নিয়ে যেনো যেতে পারি। তাই, যখন দেখলাম কিছু মানুষ সাকিবের আচরণের প্রতিবাদ করছে, এদেশের ক্রিকেটের মান – সম্মান বাঁচানোর জন্য হৃদয় উজাড় করে লিখছে তখন ভাবলাম ক্রিকেটে সুদিন আসছে, এই মানুষ গুলো ক্রিকেটের দূর্নীতি বন্ধে সরব হবে এবং অন্ততঃপক্ষে আর কিছু না করুক কিছু লিখবে কিন্তু পরক্ষনেই দেখলাম তারা নীরব।
এরফলে কিছু প্রশ্নের উদয় হলো, যারা ম্যাচে অনিয়ম বা আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেখেও নিরব থাকে তাদের মান সম্মান কেমন? আম্পায়ারের হটকারী বা ভুলভাল সিদ্ধান্তের সময় তাদের এই মান সম্মান কোথায় থাকে? সাকিবের লাথির সাথে এই মান সম্মান এখন কোথায় গেলো? নিরবতা ভেঙ্গে তারা যখন সরব হলেন তখন হলাম চরমভাবে হতাশ।
তখন দেখলাম তাদের কেউ পরীমনিকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন, কেউ আবার কোপা – ইউরো ফুটবল এর মধ্যে হারিয়ে গেলেন, কেউ আবার ব্রাজিল – আর্জেন্টিনার বিবাদে জড়িয়ে গেলেন। কেউ আবার নিউজফিডে ব্রাম্মণবাড়িয়ার নিউজ খুজঁতে লাগলেন।
আর আমাদের মতো কিছু আশাবাদী মানুষকে শরৎচন্দ্রের “বিলাসী ” গল্পের কথা মনে করিয়ে দিলেন। বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয় যখন অসুস্থ হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী তখন তার সেবা করার জন্য সমাজের কেউ এগিয়ে আসলেন না। বিলাসীর সেবায় যখন মৃত্যুঞ্জয় জীবন ফিরে পেয়ে বিলাসীর হাতে অন্ন মুখে তুলে নিলেন, তখন সেই সমাজের কিছু মানুষ মৃত্যুঞ্জয়কে অন্ন পাপে পাপী বলতে দ্বিধা করলেন না।
ঠিক তেমনি ঢাকা লীগ যখন ম্যাচ অনিয়ম আর দুর্নীতির কারনে মৃত্যুর পথযাত্রী, বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাইপলাইন যখন ক্রিকেটার শূন্য তখন সমাজের এই ভদ্রলোকদের এই বিষয়ে একটা শব্দ লিখতে দেখলাম না কিন্তু যখন একজন সাকিব ম্যাচে অনিয়ম / দূর্নীতির বিরুদ্ধে একটা লাথি দিলেন তখন তাকে বেয়াদব বলতে বিন্দুমাত্র সময় নিলেন না।
আমরা হয়তো পড়াশোনা করে শিক্ষিত এই ট্যাগটা আমাদের নামের পাশে যোগ করতে পেরেছি কিন্তু জ্ঞান কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি সেই বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। জ্ঞান নাকি মানুষের তৃতীয় নয়নের দৃষ্টি উন্মোচন করে, আর এই দৃষ্টি দিয়ে মানুষ ঘটনার পিছনের ঘটনাও দেখতে পায়।
যারা সাকিবের লাথি দেখে সাকিবকে বেয়াদব বলে দিলেন তারা হয়তো এই ঘটনার পিছনের ঘটনা দেখলেন না। তারা হয়তো দেখার প্রয়োজনই মনে করলেন না, অনেকে হয়তো জানেনই না ঘটনার পিছনেও ঘটনা থাকে। সাকিবের এই লাথি স্ট্যাম্পে ছিলো না, এই লাথি ছিলো ম্যাচে অনিয়ম ও ক্রিকেট মাঠে দূর্নীতির বিরুদ্ধে। সাকিবের এই লাথি ঢাকা লীগের অনিয়ম ও দুর্নীতিকে সামনে নিয়ে চলে আসলো।
অর্থাৎ বিষয়টা উন্মুক্ত হয়ে গেলো, এখন কাজ হচ্ছে ঢাকার ক্রিকেট থেকে এই অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করা এবং ক্রিকেটকে কোর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের জায়গা থেকে ক্রিকেটের জায়গায় নিয়ে আসা।
সাকিবের এক লাথিতে ঢাকা লীগ থেকে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে না, বিষয়টা এতো সহজ না কিন্তু শুরুটা এখান থেকে করা যায়। সাকিবের শাস্তি নিশ্চিত করলেও দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে না, বহিঃবিশ্বে আপনাকে ভদ্রলোক বলবে না বরং উল্টোটাও হতে পারে। ঢাকা ক্রিকেটের দূর্নীতিবাজরা লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ নিয়ে বিষয়টার ইতি টেনে আগের চেয়েও অধিক উৎসাহে ঢাকার ক্রিকেটে দূর্নীতি করে যেতে পারে।
বহিঃবিশ্বে আপনার কাজের জন্য ভদ্রলোক বলার পরিবর্তে উল্টোটাও বলতে পারে। বারবার কেউ মাঠে আম্পায়ারের কান্ড দেখে লাথি দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙ্গবে না। আবার সাধারণ কোনো খেলোয়াড় স্ট্যাম্প ভাঙ্গলে তার পা এবং ক্যারিয়ার কোনোটাই থাকবে না। আর আপনাদের এসব কথা কারো মাথায় থাকলে সে আর স্ট্যাম্প ভাঙ্গার বিষয়টি মাথায়ও আনবে না।
সব কথার শেষ কথা হচ্ছে লাথি দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙ্গলেই ঢাকা ক্রিকেটের অনিয়ম / দূর্নীতি বন্ধ হবে না। এই লাথির কারনে যেহেতু বিষয় গুলো সামনে চলে এসেছে সেহেতু সুযোগটা কাজে লাগানো উচিত। যেক্ষেত্রে মাঠের বাইরের মানুষদের একটা বড় অংশ সুবিধা অনুযায়ী কলম চালায় সেক্ষেত্রে নিশ্চিত অসুবিধা অপেক্ষা করছে জেনেও মাঠে পা চালিয়ে বিষয় গুলো সামনে নিয়ে আসর জন্য সাকিব একটা স্যালুউট পাওয়ার অধিকার রাখে।
আমরা দেখলাম একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, সেই তদন্ত কমিটি ১২টি ক্লাবের মালিক ও ম্যানেজারের মন্তব্য নিয়ে তাদের কর্ম শেষ করেন। আমাদের বিসিবি সভাপতিও বরাবরের মতো সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন কারো কোনো অভিযোগ নাই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে খেলার মাঠে নাই তার বক্তব্য থাকে কিভাবে? তার অভিযোগ আছে নাকি নাই সেটাতো আরো পরের বিষয়।
আর যদি খেলার মাঠের বাইরের কারো বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে খেলার মাঠে যারা আছেন তাদের বক্তব্য থাকবে প্রথমে, তাদের বক্তব্যের কোনো বিষয় ব্যাখ্যা বা স্পষ্ট করার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে মাঠের বাইরের ব্যক্তিদেরও বক্তব্য নিতে পারে। আমাদের বিসিবি হেড হয়তো বিষয়টি বুঝেন না, হয়তোবা তিনি মনে করেন পাবলিক এসব বুঝে না।
আমাদের বিসিবি হেড যেভাবে কথা বলেন তা শুনে মনে হয় বিসিবি ব্যক্তি মালিকানাদিন একটা প্রতিষ্ঠান, খেলোয়াড়রা সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আর তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক। গত এক বছরে তিনি যতবার সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন , সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন এতবার এই বিশ্বের আর কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন?
আর কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানকে কেউ দেখেছেন সিরিজ চলাকালীন বা ম্যাচ চলাকলীন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে? আমাদের সাংবাদিকদের মধ্যে এমন কেউ কি আছেন যিনি বিসিবি হেডকে জিজ্ঞেস করবেন, তিনি ম্যাচ চলাকালীন, সিরিজ চলাকালীন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আদৌতে ক্রিকেটের কি উন্নতি করতে চান?
গত এক / দেড় বছরে জাতীয় দলের ক্ষেত্রে বিসিবির অর্জন কি? ক্রিকেটার আর বিসিবি মুখোমুখি হওয়া, সাকিব – মাশরাফির ক্রিকেট নিয়ে মন্তব্য, ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন, রিয়াদের টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর। অন্য দেশ গুলো যখন সিরিজ নিয়ে, শিরোপা নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত আমরা তখন ম্যাচ বা সিরিজের আলোচনাতেই নাই।
আমরা আছি বিসিবি হেড এর সংবাদ সম্মেলন ও কথা নিয়ে। এখন উনি আবার অনুযোগ তোলেন তার কথা নাকি কেউ কেউ শোনেনা। কথা বেশি বললে আশেপাশের মানুষ কথা কমই শোনে। এটা শ্রোতার সমস্যা না, এটা বক্তার সমস্যা। আজ পর্যন্ত কেউ শুনেছেন কোনো ক্রিকেটারের কাছ থেকে কোনো বোর্ড আন্ডারটেকেন নিতে?
অতিকথন, অতিরঞ্জিত কর্মকান্ড এবং অপরিপক্ক আচরণ মানুষকে সস্তা ও হাস্যরসের পাত্র করে তোলে। আবার একজন গত কয়েকদিন আগে বলতে শুনলাম তাকে নাকি মিটিংয়ে ডাকেন না। যদি তাকে কোনো মিটিংয়ে ডাকা না হয়, তাহলে তাকে কেনো কোনো মিটিংয়ে ডাকা হয়না সেই বিষয়টি বিসিবিকে অবগত করবেন, বিসিবিকে বলবেন। তিনি সাংবাদিকদের কেনো বললেন বুঝলাম না।
আবার যারা বিসিবির সেই মেম্বারকে কোনো মিটিংয়ে রাখেন না তারা এই না রাখার কারনটা উক্ত মেম্বারকে জানিয়ে মিটিংয়ে রাখবেন না। এসব ঘটনা ঘটা এবং তা পাবলিক প্লেসে আসা হচ্ছে অপেশাদার এবং সমন্বয়হীনতা।
যে আম্পায়ারিং নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে এতো আলোচনা – সমালোচনা সেই আম্পায়ারিংয়ের মান উন্নয়নের জন্য আদৌ কোনো পরিকল্পনা কি বিসিবির আছে? নাকি তারা আগামীতেও আম্পায়ারিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠলে ক্লাব মালিকদের থেকে স্টেটমেন্ট নিয়ে দায়িত্ব শেষ করবেন? অন্ততপক্ষে এই বিষয়টা বিসিবির স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
এমন একটা অপেশাদার ও সমন্বয়হীন বোর্ড নিয়ে এবং এই বোর্ডে শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তি যখন কথায় কথায় টাকা বিনিয়োগের কথা বলেন, কর্পোরেট মনোভাব তুলে ধরেন তখন হয়তো ক্রিকেট দিয়ে বানিজ্যি করা সম্ভব কিন্তু ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখা কি সম্ভব?
আমরা গত কয়েক বছরে ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে বিসিবি হেড এর মুখে অনেক হুমকি ধমকি শুনেছি এখন বিসিবি হেড এর হাতে ক্রিকেটারদের জন্য বেত দেখাটা কেবল বাকি , জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর কি আমরা সেটাও দেখতে যাচ্ছি ? প্রশ্ন রেখে গেলাম বিসিবি হেড।
Discussion about this post