করোনাকালে ৭০ শতাংশ বিয়েবিচ্ছেদ নারী কর্তৃক কেন খুঁজে বের করা প্রয়োজন!
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম
করোনাকালে গত দেড় বছরে পারিবারিক সহিংসতার পাশাপাশি ৭০ শতাংশ নারী কর্তৃক বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনার পেছনের কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের চেয়ারম্যান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, বিচারবিভাগ ডিজিটালাইজড করার মধ্যদিয়ে গত দেড় বছর আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিচারসেবা প্রদান করেছি। সেক্ষেত্রে লিগ্যাল এইড প্রযুক্তির ব্যবহার করে অনেককে আইনি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
তবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আমাদের আরও অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তবুও সে সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে উঠে আমাদের লিগ্যাল এইড প্রদানের জন্য প্রযুক্তির প্রসার বাড়াতে লক্ষ্য রাখতে হবে। করোনাকালে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রযুক্তির ব্যবহার করে যে লিগ্যাল এইড সুবিধা প্রদান করা হয়েছে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।
লিগ্যাল এইডের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তথ্য-উপাত্তের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরে সমৃদ্ধ হলাম যে, করোনায় গত দেড় বছরে কী কী ধরনের পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়েও ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে।
আমাদের দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যের কারণে মানুষের দারিদ্রতা বেড়েছে, আয় কমেছে। এজন্য পারিবারিক সহিংসতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দেড় বছরে যৌতুকসহ পারিবারিক সহিংসতা এমনকি বিয়ে-বিচ্ছেদের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সময়ের বিয়ে-বিচ্ছেদের ঘটনার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী কর্তৃক বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। আমি মনে করি এর পেছনের কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন। জাতীয় লিগ্যাল এই ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে পারে।
জাতীয় লিগ্যাল এইডের কর্মক্ষেত্রের পরিধি বাড়ানোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা বা ধর্ষণের শিকার ভিকটিমদের সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের এখনো অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীকে সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতা না করার ফলে অনেক সাক্ষ্য নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাদের দ্রুত মেডিকেল সুবিধা প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এভাবে লিগ্যাল এইডকে ভাবতে হবে। আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য লিগ্যাল এইডকে দেশের উপজেলা ও থানা পর্যায়ের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। এভাবে নিজেদের পরিসেবা বাড়ানোর মধ্যদিয়ে তাদেরকে আইনি সেবা প্রদান করে যেতে হবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামসহ জাতীয় লিগ্যাল এইডের পরিচালক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ ওয়েবিনারে তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা ও প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
Discussion about this post