এম আই মিরাজ
২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামি কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা সভা করে বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পর দিন রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার হত্যার ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুয়েট কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির ২৬জন ছাত্রকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন ।সে প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
২০২১ সালের আটই সেপ্টেম্বর এই মামলার অভিযোগে কিছু ভুল সংশোধন করে অভিযোগ পুনর্গঠন করা হয়েছিল।
আসামীদের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, ৩০২ ধারায় নরহত্যা, ৩০২ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং ১০৯ ও১১৪ ধারায় হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়।
এসব অভিযোগে বলা হয়, তারা পরস্পর যোগসাজশে ‘শিবির সন্দেহে’ আবরার ফাহাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
গত বুধবার বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।মামলায় অভিযুক্ত ২২ আসামী কারাগারে রয়েছেন, তিনজন পলাতক।
ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বুধবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় বিচার চলাকালে মোট ৪৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
রায়ের প্রতিক্রিয়া আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেছেন, এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট, তবে যে পাঁচজনের যাবজ্জীবনের হয়েছে, তাদেরও মৃত্যুদণ্ড চান তারা।
যাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, তাদের রায় দ্রুত কার্যকরের জন্য পরের ধাপগুলোও দ্রুত এগোবে বলে আশাবাদ জানান মিসেস খাতুন।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে দেশে আইনের শাসন আছে।
গত বুধবার রায় ঘোষণার পর বিকালে গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আবরার হত্যা মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ অক্লান্ত পরিশ্রম করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করায় তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধ করে পার পাওয়া যায় না, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাগজপত্র পৌঁছানোর পরই পেপারবুক তৈরির কাজ শুরু হবে, যাতে উচ্চ আদালতে বিচার বিলম্বিত না হয়।
এখন দেখবার বিষয় এই মামলায় উচ্চ আদালত/ হাইকোর্ট বিভাগ এবং সর্বোচ্চ আদালত/ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে মামলার পরবর্তী ধাপ আগালে কি রায় আসতে পারে এবং এতে দেশের সাধারণ জনগনসহ সকল শ্রেণীর মানুষের কি প্রতিক্রিয়া তৈরী হয় ।
Discussion about this post